মিয়ানমারে মানবাধিকার এবং সমতা উন্নয়নে ৫ টি এ্যানিমেশন ভিডিও

Screencap from an animation video that highlights human rightsabuses in Myanmar

মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে তুলে ধরতে তৈরি করা একটি এ্যানিমেশন ভিডিওর স্ক্রিনক্যাপ

সারা দেশ জুড়ে মানবাধিকার, সমতা এবং সুবিচার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে মিয়ানমারে একটি দল বেশ কিছু এ্যানিমেশন ভিডিও ব্যবহার করছে।   

‘মিয়ানমার সমতা’ নামক গ্রুপটি জনগণের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক রুপান্তরে অনুপ্রানিত করতে তাদের মানবাধিকার শিক্ষা এবং এ্যাডভোকেসি কার্যক্রমের জন্য এসব মাল্টিমিডিয়া সম্ভারের উন্নয়ন করেছে। গত ১৫ বছরে গ্রুপটি নারী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং ভিন্নমতাবলম্বী গির্জার যাজক, সক্রিয় কর্মী, বিদ্যালয় শিক্ষক, সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, কৃষক এবং কর্মী, যারা এখন তাদের মানবাধিকার প্রশিক্ষক এবং এ্যাডভোকেট নেটওয়ার্কের একটি অংশ তাদের সবাইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।   

এই কর্মশালাগুলোর মাধ্যমে গ্রুপটি কয়েকটি সামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। প্রতিনিয়ত মিয়ানমার আজ এসব সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এই ইস্যুগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি আরও গণতান্ত্রিক এবং সবকিছু নিয়ে একটি সমাজ নির্মান করতে মানবাধিকারের প্রসঙ্গটি অংশগ্রহনকারীরা বুঝতে শিখেছেন।   

ভিডিওগুলো যথেষ্ট সাধারন হলেও শিক্ষামূলক। অন্যান্য দেশেও এগুলো ব্যবহার করা যায়। কারন ভিডিওগুলো বিষয়গুলো বৈশ্বিক এবং সহজেই বোঝা যায়।

নির্বাচন

গ্রুপটি একেবারে সম্প্রতি যেসব ভিডিও আপলোড করেছে, সেগুলো আসন্ন নির্বাচন নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছে। ভিডিওতে বেশ কয়েকজন ভোটারকে লক্ষনীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যারা নির্বাচনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরেছেন। যেমন দমননীতির দ্বারা শাসন, চুরি করা, সেন্সরশিপ এবং বিভিন্ন রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘনঃ  

রাজনীতিতে নারী

এই ভিডিওটি রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করেছে। এখানে মিয়ানমারের একজন তরুণীর গল্প বলা হয়েছে। তিনি একজন সরকারী কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। দারিদ্র্য এবং অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম উন্নততর সামাজিক নীতির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার পর তিনি এই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। শুরুতে তাঁর পরিবার তাকে নিরুৎসাহিত করেছে। তবে তিনি এই স্বপ্ন পূরণে অধ্যবসায়ী এবং সংসদের একজন সদস্য হতে চেষ্টা করে যাচ্ছেনঃ      

শিশু শ্রম

মোয়াং মোয়াং আই ভিডিওটি তৈরি করেছেন। এতে তিনি শিশু শ্রম শোষণ বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ভিডিওটিতে একজন নারী তাঁর ছেলেবন্ধুকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারন ছেলেবন্ধুটি এমন একটি কোম্পানির শার্ট পরে আছেন যেখানে শিশু শ্রমকে কাজে লাগানো হয়ঃ 

ঘৃণা বাচন

আরেকটি ভিডিও জনগণকে ঘৃণা বাচনের ঝুঁকি মনে করিয়ে দিয়েছে। ভিডিওটিতে ঐক্যবদ্ধভাবে বসবাস করা একটি গ্রাম দেখানো হয়েছে। তবে গ্রামটির আকাশে শত্রুতা এবং বিদ্বেষ ছড়াতে যখন একটি শকুনের (ঘৃণা বাচন বোঝাতে) আবির্ভাব হল তখন বিশৃঙ্খলা ঘনিয়ে এলো। সৌভাগ্যবশত ভালবাসা এবং শান্তি ছড়িয়ে দিতে একটি ঘুঘু পাখিও শহরের উপর দিয়ে উড়তে লাগলো। 

যেহেতু মিয়ানমারে অনলাইন ঘৃণা বাচন তীব্রতর হচ্ছে, তাই ব্যাপকভাবে ভিডিওটির প্রচারণা চালানো উচিৎ। ঘৃণা বাচনের কারণে দেশটির বিভিন্ন অংশে উত্তেজনা এবং সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব ফুঁসে উঠছে।

বৈচিত্র্য এবং বৈষম্য

বৈচিত্র্যের প্রসার ঘটাতে মোয়াং মোয়াং আয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। এটির মাধ্যমে তিনি লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম অথবা গায়ের রঙের ভিত্তিতে অন্যদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ না করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। দেশটিতে জাতি বৈষম্যের উত্থান এবং নৃতাত্ত্বিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে এই ভিডিওটি আবার বেশ উপকারী। মিয়ানমারে ১০০ টিরও বেশি সংখ্যক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে এবং জনসংখ্যার বেশিরভাগই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।

সৃজনশীল এই ভিডিওগুলো মিয়ানমারের সমাজকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে। তাঁর পাশাপাশি এটি এডভোকেসি কাজে মানবাধিকার শিক্ষা উন্নয়নের মূল্য প্রমাণ করে দেখায়। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .