এই পোস্টটি মিশর বিপ্লব ২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।
একটিভিস্টরা অনলাইনের যে সব স্থান কড়া নাড়া যায় সে সব জায়গায় এবং দেশে আওয়াজ দিয়ে যাচ্ছে সামরিক আদালতে বেসামরিক নাগরিকদের বিচারের বিষয়টির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য। মিশর বিপ্লব সংঘঠিত হবার পরে এই বিচার শুরু হয়েছে।
তাহরির স্কোয়ারে ৯ মার্চ তারিখে অনুষ্ঠিত রাতের বিক্ষোভের সময় দল বেঁধে নাগরিকদের গ্রফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের সামরিক আদালতে বিচার করা হচ্ছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া নাগরিকদের সাহায্যের জন্য একদল একটিভিস্ট, সাংবাদিক, এবং আইনজীবী নিজেদের এই ঘটনার সাথে নিজেদের যুক্ত করেছে। তারা পরিষ্কার এক ঘোষণা প্রদান করেছে যে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার সাধারণ আদালতে হওয়া উচিত।
তাদের ব্লগে , তারা নিজেদের সম্বন্ধে বর্ণনা প্রদান করেছে এভাবেঃ
আমরা একদল একটিভিস্ট, যারা প্রতিদিনের এক বিপ্লবের মধ্যে বাস করি এবং সত্যিকারের এক “মিশরের” অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, যা তাহরির স্কোয়ারে কেবল পাওয়া গিয়েছিল। “দেশকে গুন্ডাদের হাত থেকে রক্ষার” নামে সামরিক বাহিনী সাধারণ নাগরিকদের উপর যে হামলা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। সাধারণ নাগরিকদের যে সব সামরিক আদালতে বিচার হচ্ছে আমরা তার সবকটি বন্ধের দাবী জানাচ্ছি এবং যাদের বিরদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে/শাস্তি প্রদান করা হয়েছে তাদের সাধারণ আদালতে পুনরায় বিচারের নিশ্চয়তা চাইছি।
যখন এই উদ্যোগের সূত্রপাত হয়, তখন তা খুব সামান্য সমর্থন লাভ করে এবং এর প্রতি খুব অল্প মনোযোগ প্রদান করা হয়, আর সামরিক বাহিনী যে অত্যাচার করেছে জনগণের সেই বিষয়টি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক আদালতে কোন বিচার নয় নামক গ্রুপ একটি সম্মেলনের আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং তারা একটি ব্লগ তৈরি করেছে, যেখানে বন্দী এবং একই সাথে তাদের পিতামাতারও সাক্ষ্য প্রদান এবং অভিজ্ঞতা জানাতে পারবে, যাতে বিশ্ব জানতে পারে কি ধরনের অবিচারের তারা শিকার হচ্ছে।
ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ মাস পার হয়ে গেছে এবং #নোমিলট্রায়ল নামক গ্রুপটি উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে এখনো লড়াই করে যাচ্ছে এবং তারা এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে মিশরীয় নাগরিকরা নিরপেক্ষতার সাথে এবং তাদের সকল মানবাধিকার প্রয়োগ করে এই কাজটি করে যাচ্ছে।
বিগত কয়েক দিনে #নোমিলট্রায়াল নামক গ্রুপটি তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল পেতে শুরু করেছে। গ্রেফতারকৃত বেশ কিছু বন্দী এবং একই সাথে ২৮ ও ২৯ জুলাই তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামানে সংঘর্ষের সময় আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সালমা আব্দেল গেইলি, #নোমিলট্রায়াল-এর এক অন্যতম একটিভিস্ট। তিনি বলেন:
এ সব ঘটনা ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এক বিশাল অগ্রগতি, তারপরেও এখনো অনেক সাধারণ নাগরিক সামরিক কারাগারের ভেতরে বন্দী হয়ে আছে এবং বিপ্লবের শুরুর দিন থেকে তারা সবকিছু থেকে বিছিন্ন। এদের মধ্যে আমর আল বেহরি অন্যতম :
মোনা সাইফ নামক ভদ্রমহিলা তার কাজ এবং বন্দীদের পরিবার এবং তাদের উপর নির্ভরশীলদের দেখাশোনা দায়িত্বে জেরবার। তিনি বলেছেন:
@মোনাসস: #এসসিএএফ (সু্প্রীম কাউন্সিল অফ আর্মড ফোর্সেস) এর উপর যে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, মনে হচ্ছে তাতে কাজ হয়েছে। সামরিক আদালতে বিচার বন্ধ করা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, কিন্তু যে সমস্ত হাজার হাজার মানুষ এখনো কারাগারে বন্দী তাদের কথা কেউ বলছে না।
এদিকে সামরিক আদালতে বিচারের বিরুদ্ধে আজ রাত ১০টার সময় (কায়রোর সময় অনুসারে) ফেসবুকে একটি ই-প্রটেস্ট বা অনলাইন প্রতিবাদের আয়োজন করেছে। চারটি ফেসবুকের পাতার এক ঘণ্টার এই প্রতিবাদের মাধ্যমে একটিভিস্টরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের পৌছানোর চেষ্টা করেছে তাদের মন্তব্যের জন্য, যাতে সামরিক আদালতে বেসরকারী নাগরিকদের বিচার বন্ধের দাবীতে নাগরিকরা তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারে। #নোমিলিট্রায়াল নামক হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে তারা টুইটার ব্যাবহারকারীদের আবেদন জানিয়েছে যে যেন তারা টুইটের মাধ্যমে এই বিচারের বিরুদ্ধে আপত্তি জানায়।
এই পোস্টটি মিশর বিপ্লব ২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।