অস্ট্রেলিয়া: আশ্রয়প্রার্থীরা শক্ত কিন্তু মানবিক নীতিকে পরীক্ষা করছেন

মনে হচ্ছে ওশানিক ভাইকিং জাহাজের শ্রীলংকার আশ্রয়প্রার্থীদের সাথে অস্ট্রেলিয়া আর ইন্দোনেশিয়ার ত্রি-মাত্রিক অচলাবস্থা অবশেষে শেষ হতে পারে। এটা শুরু হয়েছে যখন:

গত ১৬ই অক্টোবর ৭৮ জন শ্রীলংকার আশ্রয়প্রার্থীকে (সবাই জাতিগত তামিল) তাদের ডুবতে থাকা নৌকা থেকে উদ্ধার করে অস্ট্রেলিয়ার এক জাহাজ। তবে তখন তারা ছিল ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায়।

প্রাথমিকভাবে কাছের কোন বন্দরে এই নৌকা ভিড়তে ইন্দোনেশিয়া অস্বীকৃতি জানায়, কিন্তু আলোচনার পরে…ইন্দোনেশিয়া এই জাহাজ তীরে ভেড়াতে অনুমতি দেয় ‘মানবিক কারনে’ কারনে নৌকায় একটি অসুস্থ বাচ্চা ছিল।

কিন্তু আশ্রয়প্রার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার জাহাজটি থেকে নামতে অস্বীকার করেন, আর দাবী করেন যে তাদেরকে ক্রিসমাস (অস্ট্রেলিয়া) দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হোক অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের প্রক্রিয়াকরনের জন্য।

ওশানিক ভাইকিং অগ্রগতি: আশ্রয়প্রার্থীরা তীরে আসবেন

নৌকা করে অস্ট্রেলিয়াতে আশ্রয়প্রার্থীদের আসার হার বেড়ে গেছে আফগানিস্তানের গোলযোগ বৃদ্ধির ফলে আর শ্রীলংকাতে তামিল টাইগারদের পরাজয়ের পর। কেভিন রুডের সরকার ভয়ঙ্করভাবে সমালোচিত হয়েছেন আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সামুদ্রিক অভিযানের ঘটনা আর সাধারণভাবে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি নীতির কারনে। তার অবস্থান হওয়ার কথা আদম পাচারীদের রুখে দিয়ে সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে কঠোর কিন্তু অসহায় আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য মানবিক। সমালোচকরা এটাকে হয় অতি দুর্বল বা বেশ কঠোর হিসেবে দেখছেন। এটা হয় তথাকথিত নৌকার মানুষদের উৎসাহিত করছে আর না হলে আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার খর্ব করছে।

ভেটেরান নিউজ লিমিটেড এর সাংবাদিক পিয়ার্স আকারম্যান তার ডানপন্থী পক্ষপাতিত্বের জন্য গর্ব বোধ করেন। তিনি কখনো লেবার সরকারের বন্ধু ছিলেন না, তাই তিনি কখনো তাদের খুঁত ধরার কোন সুযোগ ছেড়ে দেন না:

রুড সরকার কেবলমাত্র সফল হয়েছেন সম্ভাব্য আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে আরো লোভনীয় এলাকায় পরিণত করতে। এটি জাতির চাহিদা পূরণ করতে পারছে না, বরং সাহায্য করেছে আরও বেশী পরিমাণ শরনার্থীদের পুর্নবাসনের জন্যে লাইন দিতে। আর এটি আন্তর্জাতিক আদম ব্যাপারীদের ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স বাড়িয়ে দিয়েছে।

শরণার্থীদের জন্য রুডের লাল গালিচা

অ্যান ওনিমস লেফটির জেরেমি সিয়ার্স আকারম্যানের নিয়মিত সমালোচক। তিনি তার মন্তব্য তাদের জন্য করেছেন যাদের তিনি মনে করেন বিদেশী বিদ্বেষ এর দোষে দুষ্ট:

‘ভালো হয় তারা যদি এখানে না নামে’ জনতাকে একটা অবশ্যম্ভাবী প্রশ্ন আমি করতে চাই- তাদেরকে কোথায় পাঠাতে চান?

আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে নৌকার মানুষেরা যা করছে একই পরিস্থিতিতে ঠিক একই কাজ আপনারা করতেন।

আর তারপরেও আপনারা তাদেরকে থামাতে চান। তাদেরকে বন্দী করতে চান। তাদেরকে বাড়ি ফেরত পাঠাতে চান।

আর যে দল এইসব মানুষের জন্য এমন খারাপ কাজের কথা দেবে, সেই দল আপনার ভোট পাবে?

আমি ‘নৌকা মানুষদের’ জন্য ভীত না, আমি আপনাকে ভয় পাই।

সিকিং আসাইলম ডাউন আন্ডার ব্লগে লিখেন মার্ক থমসন। সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে তার বিস্তারিত আলোচনা ভালো কিছু খোঁজার চেষ্টা করেছে খারাপের সমুদ্রের মধ্যে:

রুড কঠিন অবস্থায় আছেন, রাজনৈতিকভাবে বললে, যেহেতু যৌথ সরকার (লিবারেল আর জাতীয় দলের বিরোধীরা) আর তাদের ভীতি তৈরি কারী ব্যক্তিরা যারা মিডিয়াতে থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যাপারটা আবার তাজা করেছেন। অনেক মানুষ ‘নৌকা মানুষদের’ ব্যাপারে ভীত, আর তারা বিশ্বাস করতে প্রস্তুত টার্নবিল, স্টোন, এন্ড্রুস আর রুড্ডকের ভীতির রটনাগুলো। মনে হচ্ছে মানুষের মনস্তত্ত্বের বড় একটা অংশ নৌকা করে আসা মানুষের ব্যাপারে খারাপ ধারণা পোষণ করে।

তার আশা হচ্ছে শরণার্থীদের প্রতি বহুমাত্রিক প্রচেষ্টা নেয়া হোক:

এই এলাকায় অস্ট্রেলিয়াকে ভালো মডেল অনুশীলন করতে হবে, আর নিশ্চিত করতে হবে যে আন্তর্জাতিক আইনগত হাতিয়ার আর মানবাধিকার কনভেনশন অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। এটা শরণার্থীদের জন্য সুবিধাজনক পরিস্থিতি হতে পারে, কর্তৃপক্ষ আর দেশগুলো তোপের মুখে থাকবে। আঞ্চলিক আলোচনা শুরু করে আর ভালো অর্থায়ন সহকারে বহুমাত্রিক প্রচেষ্টা করা, যে সকল পক্ষের এখানে দায় আছে তাদেরকে শক্তিশালী করা এই বাড়তে থাকা মানবাধিকার সমস্যার সমাধানে, ভালো একটা শুরু হবে।

লেবার শরণার্থীদের নিয়ে চিন্তার সাগরে- কিন্তু একটা সুযোগ নিজে থেকে এসেছে

যদিও এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে আর ২০০১ সালের অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল, এখন খুব কম ব্লগার এটা নিয়ে লিখেছেন। হয়তো এটা খুব জটিল বা টাম্পার মত কোন ঘটনা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .