সিরিয়াঃ তারিককে মুক্ত করার আন্দোলন

সিরিয়ার ব্লগ এখন সরগরম হয়ে আছে প্রকাশের স্বাধীনতার উপর সিরিয়ান কর্তৃপক্ষের আর একটি হস্তক্ষেপের ঘটনার জন্যে। তবে এবারের শিকার আমাদেরই একজন। তারিকের বিষয়টি ৬ মাস লেগেছে অন্য ব্লগারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে – ছয়মাস ধরে সে জেলে আছে।

তারিক বায়াসি একদিন ইন্টারনেট দেখছিল আর একটা সাধারণ ফোরামে একটি মন্তব্য করে যেখানে সে কুখ্যাত নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করে। এর অল্পদিন পরেই, জুলাই ৭ ২০০৭ তারিখে তাকে তার শহর বানিয়াস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, এর পরে তার কথা আর শোনা যায়নি। আজ পর্যন্ত তারিক জেলে আছে, কোন বিচার ছাড়া, ছয় মাসের বেশী।

রাজান, আর একদল সরব ব্লগার একটা আন্দোলনের ওয়েবসাইট আর অনলাইন পিটিশনের সাইট খুলেছে। একটু সময় নিয়ে দয়া করে পিটিশনটি এখানে স্বাক্ষর করুন। রাজান তার ব্লগে এই বিষয় নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছেন যার মধ্যে আছে কর্মী রাজান জিতোনেহ এর সাক্ষাৎকার:

“তারিকের অনলাইন বক্তব্য সংবিধানের লংঘন না। আসলে সে স্বাধীনতার কারনে এমন করেছে, যা সংবিধানের ৩৮ নং বিধানে নিশ্চিত করা আছে, “প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার আছে তার মতামত খোলাখুলি আর স্বাধীনভাবে জানানো, মৌখিক, লিখিত বা অন্য যে কোনভাবে। তার আরো অধিকার আছে জবাবদিহীমূলক নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে অংশগ্রহণ করা আর জাতীয় পূন:গঠন নিশ্চিত করতে গঠনমূলক সমালোচনা করা।”

তার লেখায় রাজান তারিক গোরানি নামক আর এক ব্লগারের কথা বলেন যার গ্রেপ্তারের পর সবাই তা ভুলে গিয়েছে।

তারিক গোরানিকে ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০০৬ এ আটক করা হয় এক বছর চার মাসের জন্য যার পর তাকে ১৭ জুন ২০০৬ এ সাত বছরের সাজা দেয়া হয় ‘ সিরিয়ার নিরাপত্তার প্রতি হুমকি’ হওয়ার জন্য। তার ব্লগের নাম ছিল আলদোমারি। “আলদোমারি’ নামটা নেয়া হয়েছে সিরিয়ার প্রথম আর শেষ স্বাধীন পত্রিকার নাম থেকে যেটা সিরিয়ান কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করত আর লিখত শাসক গোষ্ঠী দ্বারা বন্ধ করার কয়েক মাস আগে পর্যন্ত।

অন্য ব্লগাররা আন্দোলনের লিঙ্কটি তাদের ব্লগে পূন:প্রকাশ করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, আর তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। লিভান্তাইন ড্রিমহাউসের আবু কারিম তার ক্ষোভ জানিয়েছেন:

সিরিয়ান কর্তৃপক্ষের নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা প্রকাশের অধিকারকে এভাবে গলা টিপে ধরার চেষ্টা অসহ্য। ওয়েবে আমাদের ক্ষোভ প্রকাশের কোন মূল্য আছে কি না তা বিতর্কিত। সরকার জানে যে সংঘবদ্ধ অভ্যন্তরীণ বিরোধিতা, যদি থাকে তা শক্তিহীন। তাছাড়া সিরিয়ার বিরোধীদল বাইরে কোন কাজ করছে না। তারা তাদের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তিত না কারন তারা জানে যে পশ্চিম একজন সিরিয়ান কে নিয়ে তখনি চিন্তা করবে যখন সেটা রাজনৈতিকভাবে লাভজনক। সরকার জানে নিজেদের উপর চাপ কমাতে কি করতে হয়; এটা একটা খেলা যেটা বাথিস্ট সরকার দুই প্রজন্ম ধরে পছন্দ করেছে।

এ্যানি এই বিষয়ে এখানে লিখেছে, আর ইয়াজান এখানে

আহমেদ আরো বলেছেন:

যেহেতু যে ছয় মাস তারিক জেলে থেকেছে তা তাকে “ভদ্র” করতে, “তার জিহ্বাকে সংযত করতে” আর “সব বিষয়ে নাক না গলাতে” স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট। কারন এই গ্রেপ্তার আমদেরকে ভীত আর আতংকিত করেছে – ব্লগার আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসাবে, আমরা তার পেছনে যাব না, আমরা আমাদের জিহ্বাকে সংযত করব আর নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে কথা বলা বন্ধ করব। কারন ছয় মাস সত্যি যথেষ্ট!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .