আফঘানিস্তানঃ ফেরত আসা শরণার্থী, পুলিশের ক্লান্তি আর শীতে কাহিল বাচ্চা

আফঘানিস্তানের পুলিশের দুর্ভোগ নিয়ে বেশ কিছু লেখা ছাপা হয়েছে। বিপাশা রায় লক্ষ্য করেছেন শূন্য থেকে একটি পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার অনেকের সমস্যার মধ্যে একটি:

পুলিশরা অনেক কম সরঞ্জাম নিয়ে বিশাল এক ভূমি রক্ষা করতে অনেক বেশী কাজ করছে অনেক কম বেতনের বিনিময়ে যার ফলে তাদের বিরক্তি বিদ্রোহ করার পর্যায়ে এসে পড়েছে।

তিনি ইরান আর পাকিস্তান থেকে ফিরত আসা শরণার্থী নিয়েও একটি রিপোর্ট দেখেছেন:

দেখা গেছে যে এই পুরুষ আর মহিলারা এই বাস্তবতা থেকে কিছুটা শক্তি পাচ্ছে যে তারা তাদের মাতৃভূমিতে ফিরেছে যদিও তারা বর্তমান আফঘানিস্তান সম্বন্ধে খুব কম জানে। কিন্তু তারা যদি বৈষয়িক বা মানসিক কোন ধরণের কষ্টের মুখোমুখি হয় তাহলে তারা আবার আফঘানিস্তান ছেড়ে চলে যেতে পারে যেহেতু তাদের আফঘানিস্তানের সাথে সেইভাবে আত্মিক সম্পর্ক নেই।

পিটার মারটন কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রদেশের দিকে অঙুলি নিদর্শন করে দেখিয়েছেন:

আমার মনে হয়েছে যে মিডিয়া এই ধারণা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে যে এএনপি এর মতো প্রতিষ্ঠানে টাকা দেয়া টাকা নষ্ট করার সামিল, যেহেতু এটি কখনো স্বাভাবিক ভাবে কাজ করবে না। তাদের সংস্কৃতিতে কেউ কেউ বলেছেন এটা খোলাখুলি বা লুকানো ভাবে কখনো কখনো কাজ করবে। কিন্তু এটা পরিস্থিতির নিজের তৈরি করা কথা হতে পারে।

অবশ্য ন্যায়ের ব্যাপারটা পুলিশের সমস্যার বাইরের ব্যাপার। মোহাম্মাদ ফাহিম কমান্ডার কাফতার এর গল্পটা বলছেন:

একজন স্থানীয় কমান্ডারকে হত্যার অভিযোগে বাঘলান প্রদেশের পুলিশ কমান্ডার কাফতারকে গ্রেফতারের আদেশ দিয়েছে। কাফতার একমাত্র আফগানী মহিলা যে তালিবান, রাশিয়ান আর পাহাড়ী নারিন অঞ্চলের বেশ কিছু স্থানীয় শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এই এলাকায় পুরানো সোভিয়েত আর তালিবানের ট্যাংকে ভরা আছে।

বর্তমানে ৫০ বছর বয়সী কমান্ডার কাফতার এক সময়ের জামাতে ইসলামী, যা এখন উত্তর এলায়েন্স নামে পরিচিত, তার প্রভাবশালী নেতা ছিলেন আর তিনি ১৫০ জন পুরুষকে নিয়ন্ত্রণ করতেন।

বাঘলানের পুলিশ জানিয়েছে যে কাফতার জিহাদের একজন কমান্ডারকে হত্যা করেছেন আর তার লোকদের চুরির অভিযোগে খোজা হচ্ছে।

কিন্তু এটা শুধু যুদ্ধবাজদের কথা না। সাঙ্গার লিখেছেন পারভেজ কামবাখস এর ঝুলে থাকা মামলা নিয়ে:

২৩ বছরের সাংবাদিক পারভেজকে তিনমাস আগে বন্দী করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ইরানী একজন পন্ডিতের লেখা ডাউনলোড করার যার মধ্যে নাকি ইসলাম বিরোধী মতামত ছিল। অভিযুক্তকে বল্খ প্রদেশের নিম্ন আদালত ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডের রায় প্রদান করে। অভিযুক্তকে কোন সুযোগ দেয়া হয়নি আর তার আত্মরক্ষার জন্য কোন উকিল নিযুক্ত হয়নি…

পারভেজ রাজনৈতিক খেলার শিকার। আফগান সমাজে মিডিয়ার একটা ভূমিকা আছে, ক্ষমতার বলয়ে মিডিয়া মূল্যবোধ যোগান দেয়। এই খেলা হল যে কার কথা শোনা হবে আর কার হবে না। তালিবানের পরে মিডিয়া অনেক কথা বলেছে, কারজাই সরকার আর মোল্লাদের থেকেও বেশি যারা চায়না ক্ষমতা সাধারন মানুষের হাতে যাক। মোল্লা আর ধর্ম একটা ভালো উপকরণ যার মাধ্যমে অপাংতেয় গোষ্ঠী যাদেরকে ক্ষতিকর মনে করা হয় তাদেরকে দূর করা যায়।

সাফ্রাং  কাবুলের মাছের বাজারে এক যুবকের সাথে পরিচিত হয়েছে। সে যে গল্প বলেছে তা যেমন দু:খের তেমন অনেক কিছু জানা যায়:

এই ছেলে আমাকে বলেছেঃ “ফারশিদকে বলা হয়েছে আজ রাতে বাড়ি আস্তে ১০০ আফগানী নিয়ে “ – দুই ডলার। ফারশিদ কষ্ট যোগাড় করতে পেরেছে “৩০ আফগানিস।” এখন সন্ধ্যা ৬টা- অন্ধকার আর আমি কি বলেছি যে এখন খুব ঠান্ডা পড়েছে?

আসলেই। আর নিরাপত্তার ব্যাপারটা কি হবে? বিপাশা রায় আর একটা গল্প বলেছেন যেখানে বৈদেশিক সম্পর্কের উপর ইউরোপিয়ান কাউন্সিল যে সব পরিবর্তনের কথা বলেছে তা নিয়ে বলা:

এই রিপোর্টে ইউরোপের সরকারদের অনুরোধ করা হয়েছে আফঘানিস্তানে আরো সৈন্য পাঠানোর জন্য, তাদের সৈন্যের উপর থেকে রাষ্ট্রীয় সতর্কতা তুলে নিতে বা কমিয়ে দিতে বলছে, আর তাদের স্বল্প কার্যকারিতার ব্যাপারটি ঘুচিয়ে দিয়ে পুন:নির্মানের সাহায্য বাড়াতে বলেছে। অন্য দিকে এই রিপোর্ট আমেরিকাকে বলেছে তাদের যুদ্ধের পন্থা পালটিয়ে রাজনৈতিক পন্থা অবলম্বন করতে আর তাদের আকাশ থেকে স্প্রে করা বা গাজার খেত কিনে নেয়া ধরনের কাউন্টার- নারকোটিক্স পরিকল্পনা বাদ দিতে। এতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে আমেরিকা যাতে চোরাচালানীদের গ্রেপ্তার আর মাদক ব্যবসায়ী আর তাদের সরকারি মদদ দাতাদের সাজা দেয়ার দিকে গুরুত্ব দেয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .