সংসদে সংসদ সদস্যরা দেখছে অশ্লীল চলচ্চিত্র, খেলছে ভিডিও গেম এবং দিচ্ছে ঘুম, আর এ সকল কিছু ঘটছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায়

সংসদে-সংসদীয় অধিবেশন চলাকালে সংসদ সদস্যরা অশ্লীল চলচ্চিত্র দেখছে, গেম খেলছে এবং ঘুমাচ্ছে- আর এসব ঘটছে দক্ষিণ এশিয়ায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এই অঞ্চলের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য এই সকল কর্মকাণ্ডের সময় ধরা পড়েন।

যেমন, গত মাসে ভিয়েতনাম জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালীন সময়ে সংসদের কিছু সদস্যদের ঘুমানোর দৃশ্য ভিডিতে ধরা পড়ে। লাখ লাখ টিভি দর্শক বিখ্যাত এই “ঘুমন্ত প্রদর্শনী” দেখার জন্য টিভির উক্ত চ্যানেলে প্রবেশ করে।

ভিয়েতনামে সংসদ অধিবেশনে উত্তেজনা বড্ড বেশী।

জেগে থাকা এবং ভিয়েতনামের সংসদ সদস্যদের মত যাতে লজ্জায় পড়তে না হয়, তার জন্য থাইল্যান্ডের আইন প্রণেতারা সংসদীয় এক বিতর্কের সময় অশ্লীল ছবি দেখায় মনোযোগী হয়েছিল। ইতোমধ্যে তিনটি পৃথক ঘটনায় একজন সিনেটার এবং দুজন সংসদ সদস্য প্রাপ্ত বয়স্ক ছবির বিশেষ এক সাইট ব্রাউজ করা অবস্থায় ধরা পড়ে

Democrat Party MP Nat Bantadtan from Thailand admitted that he accidentally clicked a pornographic picture during a Parliament debate in April 2012. Photo widely shared on Facebook

থাইল্যান্ডের গণতান্ত্রিক দলের সংসদ সদস্য নাট বানটাডটান স্বীকার করেছেন যে ২০১২ সালে সংসদীয় বিতর্ক চলাকালীন সময়ে দুর্ঘটনাক্রমে তিনি এক অশ্লীল ছবির সাইটে প্রবেশ করেন।

যে সমস্ত পুরুষেরা তাদের আইফোনে অশ্লীল ছবি দেখা অবস্থায় ধরা পড়ে, থাইল্যান্ডের বেশ কিছু প্রধান সংবাদপত্র তাদের সমালোচনায় এগিয়ে এসেছে এবং তাদের চরিত্রের মনোবিশ্লেষণ করেছে

এই ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ যে সমালোচনা সেটি হচ্ছে এই সমস্ত ব্যাক্তিরা এই ক্ষেত্রে প্রচণ্ড ভন্ডামি করে–একদিকে তারা জনতার সামনে নৈতিকতার ধ্বজাধারী হিসেবে আবির্ভুত হয়, অন্যদিকে কাজের সময় তারা অশ্লীল ছবি দেখে। যেমন এর এক উদাহরণ হচ্ছে দি ইসলামিক প্রোসপারাস জাস্টিস দলের অশ্লীল চলচ্চিত্র প্রতিরোধ যোদ্ধা স্বয়ং নিজে ট্যাবলেট নামক যন্ত্রে অশ্লীল ছবি দেখা অবস্থায় ভিডিওতে ধরা পড়েন। আর এর ফলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। ( এরপর সে প্রতিজ্ঞা করে যে সে এই পথ পরিত্যাগ করবে এবং কোরআন পাঠ করবে)।

An Indonesian legislator caught watching porn in Congress. Photo widely shared on social media

সংসদে অশ্লীল ছবি দেখার সময় ইন্দোনেশিয়ার এক সংসদ সদস্য ক্যামেরায় ধরা পড়েন। ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রদর্শিত হয়েছে।

তুলনামূলক ভাবে কম কেলেঙ্কারিজনক কিন্তু সম্ভবত অপেশাদার এক কাজ, দক্ষিণ এশিয়ার এক আইন প্রণেতা সংসদে মোবাইল গেমস খেলা অবস্থায় ধরা পড়েন।

ফিলিপাইনের ৯০ বছর বয়স্ক সিনেটার হুয়ান পোন্সে এনরিলে দাবী করেছেন যে তিনি বিজুয়েল নামক গেমস খেলেন, কারণ এটি তাকে সতর্ক থাকাতে এবং স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ২০১৩ সালে ভিডিও গেম খেলার সময় ধরা পড়েন, যে ঘটনা বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। সে সময় আরেকজন সিনেটর এক উত্তপ্ত ভাষণে তার নিন্দা করেন।

এর শিরোনাম দিন এই রকম; যেহেতু জেপিই বিজুয়েলড নামক ভিডিও গেম খেলছে সেহেতু মিরিয়াম তাকে খুনী, লুটেরা এবং অসচ্চরিত্র বলে অভিহিত করেছে।

এনরিলে ভিডিও গেম খেলছে, এদিকে মিরিয়াম ভাষণ দিচ্ছে?

সংসদে আরো কয়েকজন সদস্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণের সময় তাদের ফোন ব্যবহার করা অবস্থায় ধরা পড়ে, এ বছরের শুরুতে যখন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন এই ঘটনা ঘটে।

খুব সহজে কারো নজরে পড়ে যাওয়া এবং স্যোশাল মিডিয়ার এই যুগে, যেখানে যে কারো কাছে একটা ক্যামেরা এব তাদের পকেটে একটা সংবাদপত্র সেখানে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার শেখা দরকার, যদি তারা তাদের এ ধরনের কেলেঙ্কারির পরিসমাপ্তি ঘটাতে চায় তো?

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .