বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস শহরে, দেওয়াল চিত্রশিল্পীরা তাদের ‘অস্ত্র’ ভালো কিছুর জন্য ব্যবহার করছেন

Graffiti artist Rei Blinky at work in San Pedro Sula, Honduras. Credit: Nathaniel Janowitz. Used with PRI's permission.

দেওয়াল চিত্রশিল্পী রেই ব্লিঙ্কি সান পেড্রো সুলাতে কাজ করছেন। ছবি: নাথানিয়েল জানোউটজ। পিআরআই এর অনুমতিক্রমে প্রকাশিত।

এই নিবন্ধ এবং রেডিও রিপোর্ট মূলত সুসানাহ রোবারসনকরেছেন দ্য ওয়ার্ল্ড  এর জন্য যা PRI.org এ ২৬ জুন, ২০১৫ প্রকাশিত হয় এবং নিবন্ধ ভাগের চুক্তির অংশ হিসেবে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হয়েছে।

কাঁটাতারের বেড়া, নির্জন রাস্তা, শটগান হাতে নিরাপত্তা রক্ষীরা। এটা একটি কাল্পনিক সিনেমার দৃশ্যের মত শোনাচ্ছে, কিন্তু এটা কোন সিনেমা নয়। এটা সান পেড্রো সুলা, হন্ডুরাস, পৃথিবীর যে শহরটি চার বছর ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকরতম শহর।

সম্প্রতি, সান পেড্রো সুলার বদনাম ঘোচানোর কিছু চেষ্টা চালানো হচ্ছে: শিল্প বিকাশের এক ঘটনাস্থল হিসেবে। এর কৃতিত্ব মূলত গ্রাফিতি শিল্পীদের,যাদের উজ্জ্বল রঙ্গিন মুরাল শহরের প্রায় সর্বত্র প্রকাশ পাচ্ছে।

গ্রাফিতি শিল্পী রেই ব্লিঙ্কি হলেন সাংবাদিক নাথানিয়েল জানোউটজের শহরজুড়ে শৈল্পিক আন্দোলনের জন্য এক “অগ্রণী” ব্যক্তি। ব্লিঙ্কি কার্যত প্রথম শিল্পী যে জনশূন্য রাস্তায় বেরিয়ে গিয়েছিলেন। শহরের ক্যাডার বাহিনীর কারণে শহর পুরোপুরি ভৌতিক মনে হয়। “বাহিনীগুলোর মধ্যে যে কহকন গোলাগুলি শুরু হয় তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আপনি হয়তো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এবং এমন সময় বুলেট এসে আপনাকে আঘাত করতে পারে, “জানোউটজ বলেছেন।

ক্যাডার বাহিনী শুধু রাস্তায় আধিপত্য বিস্তার করেছিল যে তা নয়, গ্রাফিতির মাঝেও তাদের প্রাধান্য ছিল। ব্লিঙ্কি এর সবকিছু পরিবর্তন করেছেন, জানোউটজের ভাষায় ব্লিঙ্কির এ অনন্য শৈলী যেন “পপ আর্ট আদিবাসী”। তাঁর কাজ সাহসিক, আনন্দময় এবং সন্দেহাতীত। “তার আঁকা এমন যে যখনই তুমি তার আঁকা চিত্রের পাশ দিয়ে যাবে, তুমি সাথে সাথেই বুঝতে পারবে যে এটা রেই ব্লিঙ্কি। তার মতো আর কেউ নেই,” জানোউটজ বলেন।

ব্লিঙ্কি আরো অনেক শিল্পীরা যাতে তার সাথে যোগদান করতে পারে, সেই রাস্তা প্রশস্ত করেছেন। “আন্দোলন অনেক উত্থিত হয়েছে এবং শহরজুড়ে চিত্রশিল্প সত্যিই শোভা পাচ্ছে,” জানোউটজের মতে। অসংখ্য শিল্পী রাস্তায় পরিচিত হয়ে উঠছেন: বারুক, তার মুরালের মধ্যে হন্ডুরাস নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছেন এবং কার্লোস বাডিয়া মিশ্র ধরনের কাজ করছেন।

“মনে হচ্ছে সান পেড্রো সুলার মানুষেরা বুঝতে পারছেন যে ক্যাডার বাহিনীর সমস্যা বাস্তবিক, কিন্তু তারা এটাও বুঝতে পারছেন যে তাদের সারাজীবন ভয়ে কাটান সম্ভব না। একারণেই তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় আসতে ইচ্ছুক হতে হবে এবং একটি শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে তা পুনঃদখল করতে হবে।” জানোউটজ বলেন। “তাদের যদি ইচ্ছা অথবা বন্দুক সঙ্গে না থাকে, তবে তারা একটি রংতুলি নিয়ে বাইরে যাবেন।”

গ্রাফিতি শিল্পীরা সান পেড্রো সুলার তরুণদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার আশা রাখেন, যাদের অনেকেই অস্থিতিশীল শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন। “এই মুহূর্তে, এশহরের শিশুদের কাছে দুইটিই পথঃ ক্যাডার বাহিনীতে যোগদান করো, নাহলে শহর ছেড়ে পালিয়ে যাও।” জানোউটজ বলেছেন। ব্লিঙ্কি এবং তার সহকর্মী শিল্পীরা অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের অন্য বিকল্প প্রদানের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে — শহরে থাকার, শান্তিতে বসবাস করার। জানোউটজ বলেন শিল্পীদের প্রধান লক্ষ্যসমূহের একটি, শিশুদের সঙ্গে কাজ করা, রাস্তা থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া এবং তাদের শিল্পশিক্ষা দেয়া।

ব্লিঙ্কি হন্ডুরাসের বাইরেও তার শিল্প ছড়িয়ে দেয়া শুরু করেছেন। তাকে এবং তার সহকর্মী শিল্পীদের ধন্যবাদ, জানোউটজ বলছেন, ইতিবাচক কিছু সান পেড্রো সুলা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। জানোউটজ মনে করেন ব্লিঙ্কি সফল হবেন। “আপনি এটি প্রাচীরে দেখতে পারে অথবা ল্যুভরে দেখতে পারে। তিনি এমন মাপের একজন শিল্পী।”, কারণ ব্লিঙ্কির কাজ, বিশেষ ধরনের।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .