নিখোঁজের দুই বছর পরেও সন্ধান মেলেনি কেনিয়ান ব্লগার বগঙ্ক বোসিরের

President of Kenya Uhuru Kenyatta  speaking at the Sixth Ordinary Session of the Third Parliament. Photo released under Creative Commons by Flickr user GovernmentZA.

সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের ষষ্ঠ সাধারণ সভায় কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা বক্তব্য প্রদান করছেন। ফ্লিকরের (সিসি বিওয়াই ২.০) মাধ্যমে গভর্মেন্টজেডএ এর দেয়া ছবি।

কেনিয়ান ব্লগার বগঙ্ক বোসিরে এর অনুসন্ধান কাজ পুনরায় শুরু করতে কেনিয়ানরা আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তিনি প্রায় দুই বছর আগে নিখোঁজ হন। #কোথায়আছেনবগঙ্কবোসিরে শিরোনামের হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে টুইটার ব্যবহারকারীরা জ্যাকোল নিউজের বিতর্কিত এই লেখকের ভাগ্য জানার চেষ্টা করছেন। জ্যাকোল নিউজের শিরোনাম হচ্ছেঃ “খবর এবং খোশ-গল্পগুলো একান্তই আমাদের। আপনি উৎস কিংবা লক্ষ্যবস্তু দুটোই হতে পারেন”।

এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেসের জন্য পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন খবরাখবর সংগ্রহের সময় একজন সাংবাদিক হিসেবে বোসিরে তাঁর ব্লগের মাধ্যমে ভুল ভাবে কেনিয়ার অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের বেশ উত্যক্ত করে তুলেছিলেন। তিনি তাঁর ব্লগে তারকাদের নিয়ে বিভিন্ন রটনা এবং ক্ষমতার আঙিনায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দূর্নীতি ফাঁস করে দেন।

বোসিরে নিখোঁজ হওয়ার আগে তাকে বেশ কয়েকবার হুমকি দেয়া হয় এবং তাঁর ওয়েবসাইটটি নূন্যতম একবার হলেও ডিজিটাল আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে শেষবারের মতো দেখা যায়। তাঁর পরিবার বলছে, তাকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পাওয়ার আশা তারা হারিয়ে ফেলেছেন।

Bogonko Bosire, photo via Jambo Newspot.

প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা এবং তাঁর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতোর বিরুদ্ধে হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধী আদালতের (আইসিসি) খবর প্রচারের কারণে বোসিরে বেশ সুপরিচিত এক নাম। তাঁর প্রচারিত খবরে মূলত ২০০৭-০৮ সালে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ আনায় কেনিয়াত্তাকে মামলার দায়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া প্রথম রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখাতে হয়েছে। কেনিয়ান সরকার এই মামলা প্রমাণের জন্য অপরিহার্য প্রমাণাদি হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এ কথা বলে আইসিসি ৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে কেনিয়ান প্রেসিডেন্টকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

বোসিরের বিরুদ্ধে আইসিসিতে বাদীপক্ষের সাক্ষীর পরিচয় ফাঁস করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাঁর সংগৃহীত খবরের বিশেষ মাত্রার কারণে তাকে প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তার মিত্রশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার সময় থেকে অনেক গুজব এবং এই ব্লগারের ভাগ্যে আসলেই কি ঘটেছে সে প্রসঙ্গে নানা ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব ছড়ানো হয়েছে। তাঁর পরিণতি সম্পর্কে অনলাইনে নানা গুজব প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলছেন, তিনি কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পালিয়ে গেছেন। এমনকি কয়েকজন আইসিসি’র সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ তাঁর নিখোঁজ হওয়ার সাথে জড়িত আছেন বলে দাবি করেছেন।

অবাক করা বিষয়, তাঁর নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর পর্যন্ত তাঁর টুইটার একাউন্টটি সক্রিয় ছিল। কেনিয়া টুডের মোজার কেরর লক্ষ্য করেছেন, বোসিরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি উহুরু কেনিয়াত্তার প্রশাসনের অন্যতম এক রহস্য হয়ে রয়ে গেছে।

#কোথায়আছেনবগঙ্কবোসিরে হ্যাশট্যাগটিতে গত ৭ জুন, ২০১৫ তারিখে চার ঘন্টা যাবৎ এক নতুন ধারা তৈরি করা হয়েছে। সাইপ্রিয়ান উল্লেখ করেছেন, তাঁর নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে কেনিয়ান প্রেসিডেন্ট জনসম্মুখে কোন মন্তব্য প্রদান করেননিঃ

বগঙ্ক বোসিরের নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট উহুরু এখনও কোন ধরণের মন্তব্য করেননি।

কেনিয়া নি কে ওয়েতু এই ব্লগারের বুদ্ধিমত্তা স্বীকার করে বলেছেনঃ

কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কিত সাংবাদিক হওয়া সত্ত্বেও – বগঙ্ক অত্যন্ত মেধাবী, প্রতিভাবান একজন মানুষ ছিলেন।

নিয়াও হাউজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ডিন ডেভিড ডিন বলেছেন যে সাবেক প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল আরাপ মই এর শাসনামলে সরকারের সমালোচকদের সেটি অত্যাচার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হতোঃ

@সি নিয়াকুন্ডিএইচ বলেছেন, #কোথায়আছেনবগঙ্কবোসিরে কেউ কি নিয়াও হাউজ পরীক্ষা করে দেখবেন? ওটা এখনও কার্যকর থাকতে পারে। কারণ কানু এখন ক্ষমতায়!

তার এই ঘটনাকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত লক্ষনীয়:

তাঁর এই হারিয়ে যাওয়া রহস্যের ক্ষেত্রে আমি অনেক বেশি চক্রান্তের ঘন্ধ পাচ্ছি যেটা অবশ্যই উদঘাটন করা উচিৎ।

এখন পর্যন্ত তাঁর অন্তর্ধান এক রহস্যই রয়ে গেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .