পাকিস্তানের প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী: ইয়েমেনের যুদ্ধে আপনারা থাকবেন কি থাকবেন না, তা পরিষ্কার করুন

"Picturesque scene of Sana'a until you realize those are anti aircraft weapons zipping through the sky. #Yemen" tweets Yemeni blogger @amalscript, who shares this photograph on Twitter

যতোক্ষণ পর্যন্ত না বিমান বিধ্বংসী অস্ত্রের ঝলকানি বুঝতে পারছেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত সানা’র আকাশকে নয়াভিরাম মনে হবে। ইয়েমেনি ব্লগার আমেলস্ক্রিপ্ট ছবিটি টুইটারে শেয়ার করেছেন।

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে সৈন্য পাঠাতে অস্বীকার করায় পাকিস্তান সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।

দরকারের সময়ে পাশে না থাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আনোয়ার গারগাশ টুইটারে পাকিস্তানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটা এমন এক সময় যখন উপমহাসাগরীয় অঞ্চলের বিনিয়োগকে পাকিস্তানের স্বাগত জানানো উচিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা ইয়েমেনের যুদ্ধে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোকে সমর্থন দেয় নি।

১২০,০০০ অনুসরণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি টুইট করেন:

পাকিস্তানের সংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ইয়েমেনের যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকবে। অন্যদিকে সৌদি আরবের প্রতি তাদের সমর্থনের বিষয়টি পরস্পরবিরোধী এবং বিপজ্জনক। ইসলামাবাদের কাছ থেকে এটা আশা করিনি।

গত শুক্রবার পাকিস্তানের সংসদে ইয়েমেনের যুদ্ধে যোগদানের বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, পাকিস্তান ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপে অংশ নিবে না। উল্লেখ্য, সৌদি নেতৃত্বাধীন ইয়েমেন যুদ্ধের তিন সপ্তাহ চলছে।

গত ২৬ মার্চ থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বিমান আক্রমণে ইয়েমেনে ইতোমধ্যে শ’খানেক মানুষ নিহত হয়েছেন। গালফ আরব জোটে মিশর, জর্ডান, মরক্কো, তুর্কি, সুদান এবং সৌদি আরব রয়েছে। এই জোট হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিমান আক্রমণ পরিচালনা করছে। হুতি’রা গত জানুয়ারি থেকে ইয়েমেনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।

অন্য একটি টুইটে গারগাশ বলেন:

উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলো বিপজ্জনক ও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছে। দেশগুলোর কৌশলগত নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে। এই কঠিন সময়েই বের হয়ে আসছে কে প্রকৃত বন্ধু আর কাদের বন্ধুত্ব শুধুমাত্র গণমাধ্যমের বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

গারগাশ হুঁশিয়ারি দিয়েও টুইট করেছেন:

উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলোর সাথে কৌশলগত সম্পর্কের সুবিধা নিতে পাকিস্তানকে পরিষ্কার অবস্থান নিতে হবে। এ ধরনের পরস্পরবিরোধী এবং অস্পষ্ট অবস্থান নেয়ায় পাকিস্তানকে চরম মূল্য দিতে হবে।

অন্য একটি টুইটে পাকিস্তান ইরানের পক্ষ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন:

ইসলামাবাদ ও আঙ্কারার কাছে উপসাগরীয় দেশগুলোর চেয়ে ইরানই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ও বিনিয়োগ তাদের জন্য অপরিহার্য হলেও সংকটের সময়ে আমরা তাদের রাজনৈতিক সমর্থন পাচ্ছি না।

ইয়েমেনের যুদ্ধে সমর্থন দিলেও তুর্কি যুদ্ধে সরাসরি জড়াবে বলে জানিয়েছে। তবে তারা সৈন্য পাঠানোর পরিবর্তে লজিস্টিক এবং গোয়েন্দা সহযোগিতা দিবে।

এদিকে পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের প্রতি অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন। এদের একজন মিশরের নাগরিক আহমেদ খলিল। তিনি তার ৭৭,০০০ অনুসরণকারীর উদ্দেশ্যে টুইট করেছেন:

ইয়েমেনের যুদ্ধে অংশ নিতে পাকিস্তান অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা আশা করবো, আমাদের মিশরীয় সেনাবাহিনীও যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানাবে। আমাদের সেনারা শুধু আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বাহরাইনি কলামিস্ট কাসিম হোসাইন পরিস্থিতি “জটিল” হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেছেন:

পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ ইয়েমেনের যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এবং এ ব্যাপারে তারা নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। অন্য দিকে সৌদি আরব পাকিস্তানের বিমানকে তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে।

ফুয়াদ ইব্রাহিম বিস্মিত হয়ে তার ২০,৮০০ অনুসরণকারীদের উদ্দেশ্যে টুইট করেছেন:

সৌদি আরব কি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে? আজকে “আকাশসীমার নিরাপত্তার” অজুহাতে হজ্জ্ব যাত্রীদের নিয়ে আসা পাকিস্তানের বিমানকে বাধা দিয়েছে। পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করার শাস্তি পাচ্ছে।

পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা ডন-এর ভাষ্যমতে, গত শুক্রবার সৌদি আরব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় পাকিস্তানের একটি যাত্রীবাহী বিমানকে সৌদি আকাশে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .