থাইল্যান্ডে সমাবেশ নিষিদ্ধ, কিন্তু হংকং বিক্ষোভের সমর্থনে ছাত্ররা এক ভাবে তা করতে সমর্থ হয়েছে

This photo, which has been widely shared on Facebook, shows Thai students expressing solidarity to pro-democracy students in Hong Kong

এই ছবি, যা ফেসবুকে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে প্রদর্শিত হয়েছে থাই ছাত্রছাত্রীরা হংকং-এর গণতন্ত্র-পন্থীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করছে।

দমনের শিকার হবার কারণে একত্রিত হওয়া একদল থাই ছাত্র, প্রকাশ্য সমাবেশের উপর দেশটির সামরিক জান্তার নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানায় এবং হংকং–এর গণতন্ত্রপন্থী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তাদের সমর্থন প্রদর্শনে তারা ব্যাংকক-এর বেইজিং দূতাবাসের সামনে সমাবেত হয়।

থাই স্টুডেন্ট সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি (টিএসসিডি) সংবাদ প্রদান করেছে ছাত্র বিক্ষোভকারীরা থাই অভ্যুত্থান বিরোধী একটিভিস্ট, তারা হংকং–এর গণতন্ত্র-পন্থী আন্দোলন–এর সমর্থনে এক র‍্যালির আয়োজন করে, যে আন্দোলন ২০১৭ সালের হংকং-এর নেতা নির্বাচনে প্রার্থী প্রদানে সরকারের পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই–এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা এক ঘন্টার কম সময় চীনা কনসুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল,তাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে প্রদর্শিত হয়েছে, যেমন এরকম কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে।

এই সমস্ত ছাত্রদের কর্মকাণ্ডের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, এটি এমন এক সময় ঘটল যখন থাই সামরিক জান্তা যে কোন বিরোধী কণ্ঠস্বরকে নীরব করে রাখার জন্য শত শত গণতন্ত্রপন্থী একটিভিস্ট, রাজনীতিবীদ, এবং শিক্ষাবিদকে গ্রেফতার এবং অন্তরীণ করে রেখেছে। মে মাসের এই অভ্যুথানের পর সামরিক বাহিনী অরওয়েলীয় সেন্সরশীপ সংস্কৃতির চর্চা অনুশীলন এবং গ্রহণ করছে, যার মধ্যে দিয়ে দেশটিতে গণ বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এর উদ্দেশ্য গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর রাস্তায় উপস্থিতি প্রতিরোধ করা।

হংকং-এর বিক্ষোভকারী এবং তাদের থাই সহযোগীদের মাঝে স্বাভাবিক এক যোগসূত্র রয়েছে। খাসুদ-এর ইংরেজি ভাষার ওয়েব সাইট অনুসারে, একজন ছাত্র শাসক সামরিক জান্তার ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে এক কাহিনীকে ব্যঙ্গ করেছে, ধারণা করা হচ্ছে বিতর্কিত জান্তা নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা যার লেখক; এর শিরোনাম “ চীন তার প্রতিশ্রুতি অনুসারে কাজ করবে। আর আমরা সামান্য কিছু সময় চাইছি এবং সুন্দর হংকং আবার তার স্বরূপে ফিরে আসবে”।

তবে সমসাময়িক হংকং-এর কেন্দ্রীয় ব্যবসা কেন্দ্র দখল করে নেওয়া বিক্ষোভকারীদের বিপরীতে থাই ছাত্রদের গণতান্ত্রিক শাসনের অধীনে বাস করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, যারা থাকসিন সিনাওয়াত্রার জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক শাসনের বেড়ে উঠেছে, যিনি ছিলেন পুরো মেয়াদ পূর্ণ করা থাইল্যান্ডের প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত নেতা (যদিও থাকসিন পরবর্তীতে ২০০৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হন এবং তার বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়, তবে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য তিনি নির্বাসিত জীবন বেছে নেন)। অতি সাম্প্রতিক সংঘঠিত এই অভ্যুত্থান গণতন্ত্রের উপর নিয়ম তান্ত্রিক ভাবে হামলা চালিয়েছে এবং আইনের শাসন আবার ফিরিয়ে এনেছে, থাই নাগরিকরা গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হওয়ার ফলে যে পিছিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে তার সরাসরি অভিজ্ঞতা লাভ করেছে।

হংকং বিক্ষোভ অনিবার্যভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে তা হচ্ছে এই যে থাইল্যান্ডের জনগণের ক্ষেত্রে আগামীতে কি ঘটতে যাচ্ছে। এই সমস্ত সাহসী ছাত্ররা যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে তা কি দেশটির গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের জন্য আরো বলিষ্ঠ আন্দোলনের সৃষ্টি করবে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .