মিশরে জ্বালানী মূল্য শতকরা ৭৪ ভাগ বৃদ্ধি

A copy of the order to more than double the cost of fuel in Egypt. Photo source: Ahmed Kheir on Twitter

মিশরে জ্বালানি মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির একটি আদেশ কপি। ছবি সূত্রঃ টুইটার @AhmedKheir 

জ্বালানী মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মিশরীয় নেটিজেনরা রাগে ফুঁসে উঠছেন। তারা বলছেন, এতে করে যাতায়াত খরচ, খাদ্যমূল্য এবং বিভিন্ন ধরনের সেবা মূল্য অনেক বেড়ে যাবে।

কায়রোর একজন টুইটার ব্যবহারকারী আহমেদ খায়ের। টুইটারে তাঁর ২ হাজার ২ শত জন অনুসারী আছে। তাঁর মতেঃ 

৯২ অক্টেন গ্যাসোলিনের দাম শতকরা ৪০ ভাগ বেড়েছে

৮০ অক্টেন গ্যাসোলিনের দাম শতকরা ৭৮ ভাগ বেড়েছে

মাইক্রোবাস এবং অন্যান্য যাতায়াত পরিবহনে ব্যবহৃত ডিজেলের দাম বেড়েছে শতকরা ৬৩ ভাগ

সমাজের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের ব্যবহৃত ৯৫ অক্টেন গ্যাসোলিনের দাম বেড়েছে শতকরা ৭ ভাগ

#সোশ্যাল_জাস্টিস 

রয়টার্সের প্রতিবেদনেও মূল্যবৃদ্ধির এই অংকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, “মিশরের বাজেট ঘাটতি বাড়তে থাকায় জ্বালানী ভর্তুকির বোঝা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই বোঝা কিছুটা কমাতে মিশরীয় সরকার জ্বালানী মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

আরেকটি টুইটে খায়ের উল্লেখ করেছেনঃ 

সংসদের অনুপস্থিতিতেই তারা জ্বালানী মূল্য অর্ধেকের চেয়েও বেশি বাড়িয়েছেন। গোপনে এক ছুটির দিনে বসে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সবগুলো পদক্ষেপই অনেকটা চোরের মতো নেয়া হয়েছে। 

পিটার রামেজের টুইটারে ৫০০ জন অনুসারী আছেন। তিনি মূল্য বৃদ্ধির জন্য মিশরের নতুন প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিকে দায়ী করে বলেছেনঃ  

গ্যাসোলিনের দাম শতকরা ৪০ ভাগেরও বেশি বাড়িয়েছে নাস্তিকের দল? সৃষ্টিকর্তা আপনাদের উপর সুবিচার করুন। যত অভিশাপ আপনারা পেয়েছেন তাঁর সবগুলোই আপনাদের প্রাপ্য।

আর আহমেদ ফাথি আল বদরি বলেছেনঃ 

আপনারা কি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আপনাদের প্রতি জনগণের আর বিন্দুমাত্র ভালোবাসা অবশিষ্ট থাকবে? এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

অন্যান্যরা হাস্যরসের মাধ্যমে তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। শায় সকর বারা ছদ্মনামধারীর টুইটারে সব মিলিয়ে ৮৩ হাজার অনুসারী আছে। তিনি বলেছেনঃ 

ভর্তুকি তুলে নেয়ার জন্য অথবা বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে নেয়ার জন্য অথবা [আমার অর্থ সরকারকে] দান করে দেয়ার জন্য আমি [সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ] মুরসির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিনি। আমার কোন কিছু নেই এবং যদি আমি না বলি তবে তাঁর জন্য আমি জেলে যেতে চাই না। 

আরেকটি টুইটে তিনি উল্লেখ করেছেনঃ 

মিশরীয়রা পেট্রোল স্টেশনগুলোর বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকে বলছেন, গ্যাসোলিনের দাম বেড়ে যাওয়ার আগেই তারা গাড়ির ট্যাংক ভরে নিতে চান। আমরা বেশ বুদ্ধিমান জাতি। ব্যাপারটি এমন মনে হচ্ছে যেন তাদের গাড়ির এই ট্যাংক কখনও খালি হবে না। 

হাশেম মনসুর কৌতুক করে বলেছেনঃ 

গ্যাসোলিনের মূল্য বৃদ্ধি একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। জ্বালানী এবং বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেয়ার পর সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে নিজেদের গাঁয়ে আগুন ধরানোর মতো অতিরিক্ত অর্থ যেন নাগরিকদের কাছে না থাকে।

এই টুইটটি আবার আমাদেরকে সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে যা ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে উঠে আরব বিপ্লবকে প্রজ্বলিত করে তুলেছিল। তখন তিউনিসিয়ার ফল বিক্রেতা মোহাম্মাদ বোয়াজিজি নিজেকে আগুনে জ্বালিয়ে দগ্ধ করেছিলেন।

মনসুরার দেয়া এই ভিডিওটিতে একটি পেট্রোল স্টেশনে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। যার ফলে পেট্রোল স্টেশনটিতে গ্যাসোলিন শেষ হয়ে গেছেঃ 

মিশরীয়দের জন্য ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .