রাইয়ু বনে আগুন ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে বাজে ধোঁয়া দূষণের সৃষ্টি করেছে

A burning forest in Riau, Indonesia. Photo by Virna Puspa Setyorini, Copyright @Demotix (6/20/2013)

ইন্দোনেশিয়ার রাইয়ুর জলন্ত বন, ছবি ভিরনা পুষ্পা সেতইয়োরিনির। কপিরাইট @ডেমোটিক্স-এর (৬/২০/২০১৩)

এই মাসে ইন্দোনেশিয়ার বনে লাগা আগুন আরো তীব্র হয়েছে যা রাইয়ু, উত্তর ও দক্ষিণ সুমত্রার বাসিন্দাদের আক্রান্ত করেছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া এক ঘন ধোঁয়ায় ছেয়ে যাওয়ার জন্য এই আগুনকে দায়ী করা হচ্ছে।
এ মাসের শুরুতে দাবানলের কেন্দ্র ২০০০ গুণ বৃদ্ধি পায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার রাইয়ু এলাকার আক্রান্ত ১৩,০০০ একর জমির উপর লবণ ছিটিয়ে দিয়েছে, যাতে আক্রান্ত এলাকায় বৃষ্টি নামে।

বেশিরভাগ এলাকা বিশেষ করে রাইয়ুতে বায়ু দূষণ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে, ধোঁয়ার এই বিপর্যয়ের ‘কেন্দ্রস্থল হওয়ার কারণে’। এই ধোয়ার কারণে রাইয়ুর প্রায় ৩৩,৩০০ বাসিন্দার ইতোমধ্যে তীব্র শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ, যার মধ্যে শিশুরাও অর্ন্তভুক্ত ইতোমধ্যে তারা হাঁপানি এবং কাশির লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

মূলত কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের চাষাবাদের জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে বন পোড়ানোর মাধ্যমে এই আগুনের উৎপত্তি। একই সাথে বড় বড় চাষীরা তাদের চাষ পদ্ধতির কারণে ‘বার বার’ বন পোড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুশিলো বামবাং ইধোয়ানো (এসবিওয়াই) ব্যাখ্যা করেছেন যে বনের আগুন লাগা একই সাথে প্রাকৃতিক এবং মানব সৃষ্ট বিপর্যয়:

কেবল মাত্র বাজে আবহাওয়া আগুন আর ধোঁয়া সৃষ্টি করে না, স্থানীয় নাগরিক এবং কোম্পানী যারা জমি পোড়ানোর চেষ্টা করে তারা এর জন্য দায়ী *এসবিওয়াই*

যেহেতু ইন্দোনেশিয়ার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ তেল রাইয়ুতে উৎপন্ন হয় সেক্ষেত্রে সরবরাহ হয় তাই চলতে থাকা এই আগুনের বিপর্যয়ে দেশটির তেল সরবরাহ ব্যবস্থা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

Fire density in Riau, Indonesia. Image from World Resources Institute

ইন্দোনেশিয়ার রাইয়ুতে আগুনের তীব্রতা, ছবি ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনিস্টিটিউট থেকে নেওয়া।

ইন্দোনেশিয়ার নেট নাগরিকরা ধোঁয়া এবং আগুনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য #প্রেফররাইয়ু , #মেলওয়ানসএ্যাপ, এবং #রাইয়ুহেজ নামক টুইটার হ্যাশট্যাগের ব্যবহার করছে:

রাইয়ুর আগে এবং পরে। সকলে রাইয়ুর জন্য প্রার্থনা করুন। রাইয়ুতে প্রচণ্ড বৃষ্টির আশা করছি।আমিন

এই শহরের আমরা কি ভাবে টিকে থাকব? দয়া করে রাইয়ুর জন্য প্রার্থনা করুন

এই সমস্ত অগ্নিকাণ্ড এখনই থামানো দরকার, যতক্ষণ না ওই সমস্ত কর্পোরেশন দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করে। আমরা যদি থামি, তাহলে আগামী বছর ও একই ঘটনা ঘটবে।

আমরা তাজা হাওয়ার অভাব অনুভব করছি। এ রকম এক তাজা হাওয়া! ঠিক এ রকমটা নয়।

আমি জানি, বাজে এক পরিস্থিতিতে এ রকম এক জায়গায় বাস করা কত কঠিন। আর আপনি কোথাও যেতেও পারছেন না, কারণ বাইরে আপনি কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না।

বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ধোঁয়ার সেরা শহরের পুরস্কার আমাদের প্রাপ্য, আর রাষ্ট্রপতি এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়।

মাত্র ৫ শতাংশ অক্সিজেন। কি এক ভয়াবহ অবস্থা।

এটা ঈশ্বরের নিয়তি নয়, বরঞ্চ দায়িত্বহীন মানুষের কর্ম।

এটিকে একটা আর্ন্তজাতিক বিষয়ে পরিণত করা উচিত! এই ঘটনা বন্ধ করার জন্য আমাদের একত্রিত হওয়া প্রয়োজন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .