নাইজারকে আকর্ষণীয় দেশে পরিণত করতে ৩টি উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে

Power grid in Niger via the Mapping for Niger Project

নাইজারের একটি পাওয়ার গ্রিডের ছবি। ছবি নেয়া হয়েছে নাইজারের ম্যাপিং প্রজেক্ট থেকে।

আজকের দিনে নাইজার সম্পর্কে ইতিবাচক খবর খুব কমই পাওয়া যায়। অর্থনৈতিক দুরবস্থার সাথে সন্ত্রাসবাদের হুমকি দেশটির ওপরে কালো ছায়া ফেলে দিয়েছে। তবে, আপনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলে এমন কিছু উদ্যোগ দেখতে পাবেন, যা নাইজারকে এসব থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছে। নাইজারের এমনই তিনটি গল্প রইলো এখানে:

নিরাপদ রান্নার জ্বালানি প্রকল্প

নিয়ামের চিদিমা সি ওকেক জানিয়েছেন, নাইজারের সরকার অর্ধ মিলিয়ন পরিবারকে নিরাপদ রান্নার জ্বালানি সুবিধা পৌঁছে দেয়ার জন্য নিরাপদ রান্নার জ্বালানি প্রকল্প চালু করেছেন:

যেসব বাসাবাড়িতে এতোদিন রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ-লাকড়ি ব্যবহার হতো, সেখানে নতুন এই পদ্ধতি চালু হবে। এজন্য দেশে স্টোভ উৎপাদন কারখানা স্থাপন করা হবে। সেখানে ১৫০০ লোকের নতুন কর্মসংস্থান হবে। এই প্রকল্পের আওতায় স্টোভ উৎপাদন এবং বিক্রির জন্য নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আর এর মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নও নিশ্চিত করা হবে। তাছাড়া এই প্রকল্পের ফলে বন ধ্বংসের হারও হ্রাস পাবে।

নতুন এই স্টোভ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে ঘরের চুলা থেকে উত্পাদিত ধোঁয়ার দূষণ এবং অগ্নিকাণ্ড থেকে মৃত্যুহার কমায়। সেন্টিনেলস নামের একটি ইন্টারন্যাশনাল এনজিও তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নাইজারের জিন্দারে বাসাবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা একটা বড়ো ইস্যু

Les enfants gravement brûlés sont malheureusement nombreux. Les «cuisines» des familles se composent généralement d’un simple feu de bois, où est posé le chaudron qui va servir de récipient pour préparer le repas familial. Souvent les enfants jouent autour du feu sans surveillance. Un coup de vent, un enfant trop près du feu, le pagne qui s'enflamme

গুরুতরভাবে পোড়া শিশুদের সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে কয়েকটি কাঠের টুকরো দিয়ে রান্নার চুলা তৈরি করা হয়। আর এর উপরে এক পাত্র চড়িয়ে পরিবারের খাবার-দাবার রান্না করা হয়। রান্নার চুলার আশেপাশেই বাচ্চারা খেলাধুলা করে। বাতাসে আগুনে ঝাপটা এলে অথবা বাচ্চারা আগুনের কাছাকাছি গেলে তাদের জামাকাপড়ে আগুন লেগে যেতে পারে।

নাইজারের জিন্দার হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের একটি ভিডিও এখানে দেয়া হলো। ক্রিস্টিয়ান লাজুমার্ড'র করা ভিডিওতে ১২ বছর বয়সী রিচাদা এবং ৫ বছর বয়সী হিন্দাতুর আগুনের পোড়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে:

Rachida, 12 ans, est hospitalisée depuis 10 mois, les fesses et les deux jambes gravement brûlées. Pour tous soins médicaux, de la bétadine pour badigeonner ses plaies qui ne cicatrisent pas. Rachida, qui ne peut plus s’asseoir ni se coucher sur le dos, passe ses longues journées à plat ventre sur son lit d’hôpital sans pouvoir se mouvoir, sans jeux ni télévision pour se distraire. 

১২ বছর বয়সী রিচাদা গত ১০ মাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। ওর নিতম্ব এবং দুই পা মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে। সে ক্ষতস্থানে মাখানোর জন্য বেটাডিন নামের একটিমাত্র ক্রিম পেয়েছে। তবে এতে তার যন্ত্রণা কমেনি। রিচাদা কোনোভাবেই বসতে পারে না, পিছনের দিকে গা এলিয়ে দিতে পারে না। হাসপাতালের বিছানায় সারাক্ষণ পেটের ওপর ভর করে শুয়ে আছে। সে নড়াচড়া করতে পারছে না। খেলনা বা টেলিভিশন সেট ছাড়া কোনোভাবেই সে তার ক্ষতস্থানের দু:খ ভুলতে পারছে না।

জন্ম নিবন্ধন প্রকল্প

সরকারি প্রশাসন পুরো দেশজুড়ে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইউনিসেফ এ কাজে সহায়তা দিচ্ছে। এর ফলে দেশটির তরুণ নাগরিকদের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত হবে। কেননা, এই নিবন্ধনপত্র দেখিয়ে তরুণরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন। গাড়ি চালানোর অনুমতিপত্র পাবেন। এই উদ্যোগটি নাইজারের সব শ্রেণির মানুষের কাছে কীভাবে যাচ্ছে, তা এই ভিডিও চিত্রে দেখানো হয়েছে:

উত্তর-পশ্চিম নাইজারের একটি গ্রাম আকুবাউনাউ। এই গ্রামের আয়তন ৫৩০০ বর্গকিলোমিটার। লোকসংখ্যা ৪৭ হাজার। এই গ্রামের ৬০০ শিশু সম্প্রতি জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়েছে। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এই জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়া হয়েছে। ইউনিসেফের ব্লগে আকুবাউনাউয়ের মেয়র খামেল আত্তায়ুব লিখেছেন:

চলমান বিকেন্দ্রীয়করণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নাগরিকেরা নিবন্ধনের ব্যাপারে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। গ্রামের দিকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছি। কেউ যাতে নিবন্ধন প্রক্রিয়া থেকে বাদ না পড়ে, এজন্য আমরা গুরুত্বের সাথে ফলো-আপ কার্যক্রমও পরিচালনা করছি।

যেসব তরুণ এখনো নিবন্ধিত হননি, তাদের নিবন্ধন করতে ভ্রাম্যমান আদালত বিনামূল্যে শুনানির ব্যবস্থা করছে। ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য কমপক্ষে ৬০০,০০০ শুনানি নিষ্পত্তি করেছে।

নাইজারের অঞ্চল ভিত্তিক ম্যাপিং 

নাইজার ম্যাপিং প্রকল্পের বড়ো চ্যালেঞ্জ হলো, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ম্যাপিং কার্যক্রম পরিচালনা করা। রাইজিং ভয়েসেস গ্যারান্টির অর্থায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। অংশীদার হিসেবে এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত আছেন আবডাউ মাইমুনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল ক্লাব এবং ভলেন্টিয়ার টেকনিক্যাল কমিউনিটি (ভিটিসি)। তারা যৌথভাবে চারপাশের মানুষজনের চাহিদা এবং গল্প খুঁজে বের করছে।

এই প্রকল্পের সদস্যরা “ওপেনস্ট্রিটম্যাপ” টুলস ব্যবহার করে শহর ও গ্রামের স্কুল, রাস্তা, হাসপাতালগুলোকে সহজে চেনার উপায় হিসেবে চিহ্নিত করছেন। তাছাড়া মানুষজন এগুলো সম্পর্কে কী বলে তাও শুনে রাখছেন। বিদ্যুত এবং কমিউনিটির জন্য পুন:পুন যেসব বিষয় দরকার আদামা সালাউ তার ব্লগে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন:

A l’instar des autres villages du canton de Gorouol, le village de Kolmane, un village ou je passais mes vacances, souffre d’une précarité électrique notoire. Le réseau électrique est quasis absent en dehors de quelques panneaux solaires et de générateurs des batteries. Quant à l’électrification des routes, le constat est amer et inquiétant. Cela occasionne souvent des attaques des bandits armés notamment sur l’axe Kolmane – Ayorou, long de 30 km.

গোরাউলের ক্যান্টনের সব গ্রামে, এমনকি কোলমান নামে যে গ্রামে আমি আমার অবসর সময় কাটাতাম, সেখানে বিদ্যুত নেই বললেই চলে। কিছু সোলার প্যানেল আর ব্যাটারি চালিত জেনারেটর ছাড়া বিদ্যুতের গ্রিড চোখেই পড়ে না। জাতীয় সড়কগুলোতে বৈদ্যুতায়নের পরিস্থিতিও যাচ্ছেতাই রকমের বাজে। কোলমান থেকে আইয়োরাউ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় প্রায়ই ডাকাতরা সশস্ত্র আক্রমণ করে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .