আলোকচিত্রঃ ফিলিপিনে টাইফুনে বেঁচে থাকা লোকজন খাবার, পানি ও সাহায্যের জন্য মরিয়া

A street in Balangiga, Samar. One of the badly hit provinces. Photo by Autonomo Sr Abellar Amano, Facebook

অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশ সামার-এর বালাংগিগার একটি রাস্তার চিত্র। ছবি- ওটোনোমো এসআর আবেলার এমোনোর ফেসবুক থেকে।

 ফিলিপিন্সের সুপার টাইফুন হাইয়ান (ইওলান্ডা) কবলিত হয়ে বেঁচে থাকা জনগোষ্ঠীর মাঝে দ্রুততার সাথে এবং সঠিকভাবে সাহায্য পৌছাচ্ছে না। বেচে যাওয়া অনেকেই অভিযোগ করছেন যে সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত ত্রাণসামগ্রী তারা এখনো পান নি। 

গত শুক্রবার ভিসায়াত দ্বীপে হাইয়ানের আঘাতে সৃষ্ট ঝড়ে ১,৫০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। দুর্গম এ তীরবর্তী শহরের প্রকৃত চিত্র এখন পর্যন্ত উন্মোচিত না হওয়ায় ধারনা করা হচ্ছে যে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারনে উদ্ধারকারী দল ও ত্রাণ বিতরণকারী দল ঐ জনগোষ্ঠীর কাছে এখনো পৌছাতে পারে নি।

লেটি প্রদেশের কয়েকটি শহর এবং টাকলোবান শহরে খাদ্যের জন্য মরিয়া জনগণ কর্তৃক সুপার মার্কেটে হামলা এবং চালের গুদাম লুঠ করার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় টাইফুন আক্রান্ত জনগোষ্ঠীতে সরকার আইন শৃংখলা বহাল এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ গতিশীল করার জন্য আরো বেশি পরিমান পুলিশ বাহিনী পাঠানোর প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। ইতোমধ্যেই সামারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছেঃ

সরবরাহ সংকটের কারণে সামারের কালবায়োগ শহরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে; মুদি দোকানগুলোতে আতংকিত হয়ে কেনাকাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে @সোলারটিভিনিউজ #ইয়োলান্ডাপিএইচ

প্যাট্রিক জেমস সোরনে (@ক্রিকটাপসেমাই) বলছেন:

:-— টিভি আর ওয়াশিং মেশিন যখন চুরি করা হল তখন সেটা লুটে পরিণত হল। #ইয়োলান্ডাপিএইচ #ফিলিপিন্স এর জন্যে দোয়া কর

ইসাবেলা দাজা (@ইসাবেলাদাজা) টুইট করেছেন:

শুনে কষ্ট পেলাম যে দুর্গতরা দোকান এবং এ টি এম মেশিন লুঠ করছে। 🙁 এ সপ্তাহে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা করছি।

দি ফিলিপিন স্টার (@ফিলিপিনস্টার) জানিয়েছেন:

বেঁচে থাকাদের কাছে ত্রাণ পৌছানোর সংগ্রামে ত্রাণ কর্মীদের লিপ্ত হওয়ার পর পুর্ব সামার ও গুজুয়ানে লুণ্ঠনকারীরা গুদাম থেকে মালামাল নিক্ষেপ করেছে

রেন্ডি ফেলিক্স মালায়ায়ো তার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে টাইফুনে বেচে যাওয়া লুণ্ঠনকারীদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়েছেনঃ

লুণ্ঠনকারীদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না, আমি একজন লুণ্ঠনকারী ছিলাম। আমি রেড ক্রসের জন্য ওষুধ লুঠ করেছি, শিশুদের জন্য দুধ ও খাবার লুঠ করেছি। ৪ ঘন্টা ধরে আমি হেটেছি, একটা খালি প্লাস্টিক বোতল দিয়ে সামান্য কিছু পানির জন্য ২ ফুট গর্ত করেছি। যারা ফ্ল্যাট স্ক্রিনের টিভি নিয়েছেন তারাও আমাকে পানীয় ও লুগাও (চালের পরিজ) সরবরাহ করেছে। যাদের দেখে সাবেক সাজাপ্রাপ্ত বলে মনে হয়েছে তারাও আমাকে কিছু খাবার গ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। যখন আপনার সত্যিই কিছু প্রয়োজন বলে লোকজনকে বোঝানো যায় তখন তারা সবসময়ই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এই দুর্যোগের মধ্যেও কিভাবে একজন আরেকজনকে সাহায্য করে সে বিষয়গুলো সংবাদে আসে না।

মার্থা ভিলারোসা তাদেরকে লুণ্ঠনকারী না বলার জন্য আহবান জানানঃ

লুণ্ঠণকারী? তাদেরকে এ শিরোনামে ডাকার অধিকার কারো নেই। ঘর-বাড়ী হারানো, প্রিয়জন হারানো খাবার ও পানিবিহীন মানুষগুলোর জীবন কত কষ্টের তা একবার অনুভব করুন। আমরা বেঁচে আছি, নিরাপদে আছি এবং এখনও জীবনকে উপভোগ করছি সে কারনে আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আসুন আমরা সবাই ইতিবাচক হই। এ অবস্থা থেক উত্তরণের জন্য আমাদের প্রয়োজন দেশের জনগনের সমর্থন ও দোয়া।

Many roads were damaged by typhoon Haiyan. Photo by Autonomo Sr Abellar Amano, Facebook

টাইফুন হাইয়ানের কারনে অনেক সড়ক বিধ্বস্ত। ছবি- অটোনোমো এসআর আবেলার আমনোর ফেসবুক থেকে

দেশের মুখ্য শিক্ষা কর্মকর্তা ব্রাদার আরমিন লুইস্ট্রো প্রশিক্ষকদের প্রতি নিচের এ বার্তা প্রেরণ করেছেনঃ

জনগণের দিকে আমাদের প্রথমে তাকানো উচিত। সম্পত্তির ক্ষয়- ক্ষতি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই- এটা নিয়ে আমরা পরে ভাববো। খারাপ দিকটি হল আমরা জনগনের দিকে না তাকিয়ে কতগুলো ভবন আর গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হল তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি।

দ্বীতিয়তঃ আমাদের শিশুদের আবারো বিদ্যালয়ে পাঠানো উচিত।  শিশুদের ক্ষতি কাটানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হল যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে তাদের রুটিনের মধ্যে ফিরিয়ে আনা- তাদেরকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। এখনই তাদের ক্লাশ শুরু করার প্রয়োজন নেই। তাদেরকে খেলতে দিন। তারা কাজকর্ম করুক।

এটম আরাউল্লো (@এটমআরাউল্লো) উল্লেখ করেন যে টাকলোবানে যোগাযোগ সিগন্যাল আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছেঃ

টাকলোবানে নিরাপদে আছি! টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। ধ্বংসযজ্ঞ ব্যাপক। সব ধরণের সাহায্যই মানুষের প্রয়োজন।

ত্রাণ কার্যক্রমে আরো বেশি সংখ্যক ফিলিপিনো যুক্ত হয়েছেঃ

ডেল এনজি (@ডেলএনজিলেং) বলেছেন:

এটা খুবই হৃদয়গ্রাহী যে অধিক সংখ্যক জনগণ ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। এ সময়ে আমি সামাজিক মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানাই

The Palo, Leyte campus of the University of the Philippines was damaged by the storm. Photo by Cleve Kevin Robert Arguelles, Facebook

পালোতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব দি ফিলিপিন্সের লেটি ক্যাম্পাস ঝড়ে বিধ্বস্ত। ছবি- ক্লিভ কেভিন রবার্ট আরকুএলেস এর ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত

ডেভিড ওয়াই সান্টোজ (@ডেভিডোয়াইসান্টোজ) জানান:

পুর্ব সামারের গুজুয়ানের সরকারি বিদ্যালয় এবং উদ্ধার কেন্দ্র। ঝড়ের পরে বর্তমান অবস্থা। @সোলারটিভিনিউজ pic.twitter.com/2YXI6hxbmF

রেক্স রেমিটিও (@রেক্সরেমিটিও) টুইট করেন:

#ইয়োলান্ডাপিএইচ সামারের ধংসপ্রাপ্ত বেসি শহরের দৃশ্য @সোলারটিভিনিউজ pic.twitter.com/4lRg8j60Jp

স্থিতিস্থাপকতার অর্থ বিষয়ে ফ্র্যাঙ্ক সিমাটু আমাদের সতর্ক করেন ও স্মরণ করিয়ে দেনঃ

স্থিতিস্থাপকতার অর্থ কি আপনারা জানেন? এখন থেকে দুই এক মাসের মধ্যে সম্ভবতঃ সবাই চলে যাবেন, বিনামুল্যে আসা খাদ্য বন্ধ হয়ে যাবে, জনগণকে নিজেদেরই খাবার জোগার করতে হবে, যখন তারা অনুভব করতে পারবে যে কি ঘটেছে এবং কি সঞ্চিত আছে তখন ঘুর্নিঝড় এর পূর্ণ মাত্রার আক্রমন করবে। স্থিতিস্থাপকতার প্রকৃত অর্থ তখন তারা উপলব্ধি করতে পারবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .