চেচেন মহিলাদের স্মৃতিস্তম্ভটি কি রাশিয়ার জন্য প্রকাশ্য অপমান ?

Dedication of the Dadi-Yurt memorial. YouTube screenshot.

দাদি-ইয়ারট মেমোরিয়ালের উৎসর্গকরণ। ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট। 

গত শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে চেচেন নেতা রামজান কাদিরোভ একদল চেচেন নারীর নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ উৎসর্গ করেছেন। উনবিংশ শতাব্দীতে যখন রাশিয়া সমগ্র উত্তর ককেশাস জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করছিল, তখন এই নারীরা মারা যান। কাহিনীটি থেকে জানা যায়, কেউ কেউ এটাকে অপ্রামাণিক বলেছেন। ১৮১৯ সালে রাশিয়ার জেনারেল ইয়ারমলোভ ছিচল্লিশ জন নারীকে কারাগারে বন্দী করেন। গ্রেপ্তারকারীদের নিয়ে সেই নারীরা তেরেক নদীর উপরে অবস্থিত একটি সেতু থেকে লাফিয়ে পরে। লাঞ্ছনার মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে বরং ডুবে মরাকেই তাঁরা শ্রেয় ভেবেছিল।

স্মৃতিস্তম্ভটি উৎসর্গকরন অনুষ্ঠানের ছবিগুলো ধারাবাহিকভাবে কাদিরোভ তাঁর ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে [রুশ] পোস্ট করেছেনঃ  

Ахмед Кадыров заявил, что там, где не уважают женщин, не берегут их честь, не вырастают достойные мужчины.

আখমেদ কাদিরোভ [রামজানের বাবা] বলেছেন, যেখানে নারীদের সম্মান করা হয় না, যেখানে তাঁদের সম্ভ্রমের সুরক্ষা দেয়া হয় না, সেখানে পুরুষেরা সভ্য হয়ে বেড়ে ওঠে না। 

কাদিরোভের এই উদ্যোগের কারনে রাশিয়ার ব্লগোস্ফিয়ারের একটি শোরগোল পরে গেছে – বেশীরভাগ ব্লগারই এটাকে রাশিয়ার সৈন্যদের হত্যা করার মৌন সম্মতি হিসেবে দেখছে। এটি এমনকিছু, যা গত চেচেন দ্বন্দ্ব শেষ হওয়ার কেবল কয়েক দশক পরে বাড়ির খুব কাছে আঘাত করেছে।

লাইভজার্নাল ব্যবহারকারী ডিমকাজেডি অভিযোগ [রুশ] করেছেনঃ 

Учитывая, что Чечня — дотационная республика, этот памятник построен на российские деньги.

উল্লেখ্য, চেচনিয়া ভর্তুকিতে দেয়া একটি প্রজাতন্ত্র, এই স্মৃতিস্তম্ভটি রাশিয়ার টাকায় তৈরি করা হয়েছে।

আরেকজন ব্লগার, এসটিবিক্যাপটেন গোমড়ামুখে [রুশ] ভবিষ্যৎবাণী করেছেনঃ

Не удивлюсь, если власть проглотит эту оплеуху безмолвно и безропотно.

আমি মোটেই অবাক হবো না, যদি [ফেডারেল] সরকার এই চড়টি চুপচাপ গিলে নেয় এবং কোন অভিযোগ না করে। 

আরেকজন পৌত্তলিক রুশ এবং চেচেনদের মধ্যকার সাম্প্রতিক নৃশংসতার কথা উল্লেখ করেছেনঃ  

На самом деле, это очень плохо.

Намного хуже, чем драки с участием ножиков.

Гораздо хуже, чем дотации центра, больше похожие сами знаете, на что.

Неизмеримо хуже, чем красивая мечеть, накрученная аж до ранга “Символа России”.

Собственно, это декларация политического видения, в рамках которого Россия из foederātiō явочным порядком превращена в в сommonwealth.

সত্যিই, এটা খুব খারাপ।

ছোড়া যুদ্ধের চেয়েও বেশি জঘন্য।

ফেডারেল ভর্তুকির চেয়েও বেশি জঘন্য। তুমি যা জান, এটিকে তাঁর মতোই দেখায় [ নোটঃ সম্ভবত “শ্রদ্ধাঞ্জলি”]    

সুন্দর মসজিদটির চেয়েও খারাপ, যেটিকে জোর করে “রাশিয়ার স্মারক” বানানো হয়েছে।

আসলে, এটি সুদূরপ্রসারী একটি রাজনৈতিক লক্ষ্যের একটি ঘোষণা। একটি আদেশের মাধ্যমে রাশিয়া একটি ফেডারেশন থেকে একটি কমনওয়েলথে পরিনত হয়েছে। 

মস্কোর ইখো নামক ওয়েবসাইটে সামাজিক সক্রিয় কর্মী এবং কারা অধিকার বিষয়ক এডভোকেট, আনা কারেতনিকোভা হতবাক হয়ে একটি ওপি-এড লিখেছেন। তিনি হতবাক হয়েছেন, কেন কাদিরোভ নারী-শহীদদের নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছেন। এবং তিনি দাবি [রুশ] করেছেন, কাদিরোভ যে গল্পটি প্রার্থনা পত্রের দ্বারা আবেদন করেছেন তা চেচনিয়ার নারীত্বকে বিপরীত দিক থেকে প্রচলিত একটি দৃশ্যে ধারন করেছেঃ 

Женщина – то, что вы всегда более всего оберегали столетиями. Это то, что я ценю превыше всего в вашей культуре. И что теперь? Не женщина-мать, не женщина – хранительница очага. Убившая себя и других женщина.

কয়েক শতক ধরে আপনারা নারীদের যতোটা সম্ভব প্রহরীর মতো আগলে রেখেছেন। আপনাদের সংস্কৃতির এই ব্যাপারটিকে আমি সবচেয়ে বেশি মূল্য দেই। আর এখন কি হচ্ছে ? নারীরা আর মা নয়, নারীরা আর ঘরনী নয়। কিন্তু এমন, যারা নিজেকে এবং অন্যকে হত্যা করে।  

একজন রুশ সংসদ সদস্য ভ্যালেরি ফেদোতোভ, এই বিষয়টির ওপর তাঁর ব্লগ পোস্টের [রুশ] শিরোনাম দিয়েছেনঃ “চেচনিয়ার জন্য আবারো একটি ভিন্ন মানদণ্ড”। গত কয়েক মাসে তিনি বেশ কিছু ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়েছেন। সেসব ঘটনাতে দেখা যাচ্ছে রাশিয়ার অন্য নাগরিকদের চেয়ে চেচেনদের ভিন্ন ভিন্ন মানদন্ডে বিচার করা হচ্ছে। ফেদোতোভ পরিশেষে বলেছেনঃ 

Чечня является частью РФ всего лишь номинально. Но на это готовы закрывать глаза до тех пор, пока Кадыров демонстрирует номинальную же лояльность Москве, точнее – лично Путину. А что будет потом, лет через десять-двадцать – об этом вообще стараются не говорить. Меж тем, часики тикают, противоречия накапливаются.

চেচনিয়া হচ্ছে রুশ ফেডারেশনের নামেমাত্র একটি অংশ। কিন্তু কাদিরোভ যতক্ষণ পর্যন্ত মস্কোর প্রতি একই ধরনের নামেমাত্র আনুগত্য দেখাচ্ছে অথবা ব্যক্তিগতভাবে পুতিনের প্রতি যথাযথ হতে চাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত [ক্রেমলিন] শহরটিও তা না দেখে থাকতেই ইচ্ছুক। কিন্তু এখন থেকে ১০ বা ২০ বছর পরে কি হবে – এটা নিয়ে কেউ কথা বলতে চায় না। অতঃপর, সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, পরস্পর বিরোধীতা আরো দানা বাঁধছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .