“দামাস্কাসে সবই শান্ত”: সিরিয়া থেকে রাশিয়ানদের রিপোর্ট

A video of a Syrian market shown on Russian news channel NTV on September 3, 2013. The footage was presumably taken by Anhar Kochneva. YouTube screenshot.

গত ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে রুশ টিভি চ্যানেল এন টি ভি তে দেখানো একটি সিরিয় বাজার। ফুটেজটি ধারণ করেছেন আনহার কচেনেভা। ইউটিউব স্ক্রিনশট।   

বাশার আল আসাদের শাসনতন্ত্রকে সমর্থনের জন্য রাশিয়ায় রাজনৈতিক সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে। সামরিক হস্তক্ষেপ করার জন্য পশ্চিমা উদ্দেশ্যের গভীর সন্দেহকে একটি ইসলামপন্থী বিদ্রোহী দলের দেশীয় ইতিহাসের সাথে একীভূত করা হয়েছে। এমনকি সিরিয়া দ্বন্দ্বে ক্রেমলিনের সবচেয়ে অনুগত  বিরোধীদের ভ্লাদিমির পুতিনের চোখে চোখ রেখে তাকানোর স্পর্ধা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত বছর নৃশংস হয়ে ওঠা একটি র‍্যালিতে অংশ নেয়ার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে বিচারের সম্মুখীন বিরোধীদলীয় একজন সক্রিয় কর্মী মারিয়া বারোনভা গত ২১ আগস্ট দামাস্কাসের কাছে সংঘটিত রাসায়নিক আক্রমন নিয়ে টুইট করেছেনঃ

ভদ্রমহোদয়গণ, আমি আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের গল্পটি এক ধরনের অসৎ আমেরিকান ফন্দি !

বারোনভা সম্ভবত ফটোগ্রাফার সারগেই পনোমারেভের কাছ থেকে তাঁর তথ্যগুলো পাচ্ছেন। হামলার সময় তিনি দামাস্কাসে ছিলেন এবং হামলার পরপরই বিষাক্ত গ্যাস দূর্ঘটনা নিয়ে এমএসএফ – এর রিপোর্টটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে টুইট করেছেনঃ

@অলটেপিউট @পনি১ আমি তিনটি হাসপাতালে গিয়েছি। তাঁরা আমাকে বলেছে সেখানে হামলায় আক্রান্ত কোন লোক নেই। যদি আপনারা কেউ জেনে থাকেন, কোন হাসপাতালগুলো এমএসএফ নিয়ে কাজ করে, তবে আমি সেখানে যাব।

দামাস্কাস থেকে আরেকজন রাশিয়ান, কোমসোমলস্কায়া প্রাভদারসাংবাদিক, নিগিনা বোরেইভা টুইট করেছেন। তিনি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেনঃ

@মাদোলিরোয়ারঃ আমরা সেখানে ছিলাম। যদি হামলাটি ১৩ শ লোক মারা যাওয়ার মতো শক্তিশালী হতো, তবে আমরাও গ্যাসটির দ্বারা আক্রান্ত হতাম।

এরপর, বারোয়েভা একটি স্থানীয় উৎসের উদ্ধৃতি দিয়েছেনঃ

আমি একজন লোকের সাথে কথা বলেছি, যিনি তাঁর পরিবার নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে বসবাস করছেন। তিনি বলেছেন, সেখানে কোন রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়নি। যদি হতো, তবে তাঁরা বুঝতে পারতেন।

বারোয়েভা এবং পনোমারেভের মতো সাংবাদিকদের পাশাপাশি যারা তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত রিপোর্টিং – এর কাজ করতে সিরিয়াতে এসেছেন, তাঁদের মাঝে কিছু রাশিয়ান ব্লগার সত্যিকার অর্থেই দেশটিতে বসবাস করছেন এবং ব্লগ লিখছেন। বেশিরভাগ রাশিয়ান জনগণের মতোই এই ব্লগারেরা আসাদের শাসনতন্ত্রকে সমর্থন করেন। সম্ভবত তাঁদের মাঝে উল্লেখযোগ্য একজন হলেন দামাস্কাসে বসবাসরত রাশিয়ান বংশোদ্ভূত ফিলিস্তিনের নাগরিক আনহার কোচনেভা। এই দাঙ্গা শুরু হওয়ার আগে কোচনেভা পর্যটন শিল্পে কাজ করতেন। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই তিনি রাশিয়ান শ্রোতাদের জন্য যুদ্ধ বিষয়ে লিখতে শুরু করেন। গত বছর যখন তাকে স্বঘোষিত একটি বিদ্রোহী দল [রুশ] অপহরণ করে নিয়ে যায়, ১৫২ দিন বন্দী অবস্থায় কাটান এবং অবশেষে কেবল নিজের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। তখন তাঁর বেশ দুর্নাম হয়েছে।

সিরিয়া দাঙ্গায় তাঁর একটি জঘন্য অভিজ্ঞতা হওয়া সত্ত্বেও বরং কোচনেভা শাসনতন্ত্রের স্থায়িত্ব নিয়ে পাঠকদের পুনরায় আশ্বস্ত করতে বেশ আগ্রহীঃ 

Ничего плохого не происходит. Люди ходят в кафе и рестораны, шастают по магазинчикам и даже посещают достопримечательности. Давайте, будем показывать ПРАВДУ. А не делать все, чтобы во всем мире сложилось впечатление. что в Сирии камня на камне не осталось!

খারাপ কোন কিছুই হচ্ছে না। লোকেরা ক্যাফেতে এবং রেস্তোরাঁয় খেতে বসছে, কেনাকাটা করতে যাচ্ছে এবং এমনকি স্থানীয় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছে। চলুন সত্যি কথা বলি। এবং যা কিছু সম্ভব তাঁর সবকিছুই করবেন না, যেন সারা পৃথিবী এটা ভাবতে শুরু করে যে সিরিয়া সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে!

গত ২৯ আগস্ট সারা বিশ্ব যখন আসাদের বিরুদ্ধে একটি আসন্ন বোমা হামলার প্রচারাভিযান আশা করছে, তখন তিনি লিখেছেন [রুশ] :

Хомс, Хама, Тель-Калях, Месьяф, Беньяс, Джебла, Латакия, Тартус… ВЕЗДЕ ВСЕ ПОД КОНТРОЛЕМ ГОСУДАРСТВА. В Дамаске все тоже спокойно.

হোমস, হামা, তেল কালিয়াহ, মাসিয়াফ, বানিয়াস, লাতাকিয়া, তারতুস…সবকিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। দামাস্কাসে সবকিছুই শান্ত।

বারোয়েভা ও পনোমারেভ সাধারনভাবেই তাঁর সাথে একমত। গ্যাস আক্রমণটির পরপরই বারোয়েভা টুইট করেছেনঃ

আপনারা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু দামাস্কাসে সবকিছুই বেশ শান্ত। লোকেরা ক্যাফেতে বসছেন, রাস্তায় হাটছে, এবং তাঁরা সারা বিশ্বের অতিরিক্ত ভাবাবেগ থেকে অনেক দূরে আছে।

পনোমারেভ আরো বলেছেন, দেশটি প্রকৃতপক্ষে ২০০৯ সাল থেকেই “অপরিবর্তিত” আছে। তখন তিনি মজা করে সশস্ত্র দ্বন্দ্বের গুনের কথা প্রশংসা করে বলেছেন, এতে স্থানীয় হোটেলের খরচ কমে গেছেঃ

[আগে] শহরকেন্দ্রের হোটেলগুলোতে যেখানে ৩০০ ইউরো [প্রতি রাতে] খরচ হত, এখন সেখানে ৫০ থেকে ৭০ ডলার খরচ হয়। ওয়াইন সহ তিনজনের রাতের খাবার খেতে ২০ ডলার খরচ হয়।

দাঙ্গা- আকস্মিকভাবে এই ঘটনার বিবরণের ভেতরে রাশিয়ান শ্রোতাদের সাথে কোন একটা বিষয় মিলে যাচ্ছে। এটি যখন এভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তখন মনে হচ্ছে যেন পুরোপুরি যুদ্ধ হচ্ছে। এবং দেগেস্তান ও ইনগুশেটিয়া যেন ধীর-নৃশংসতায় পুড়ছে। হ্যাঁ, সেখানে ডাকাত/ সন্ত্রাসী/ বিদ্রোহী/ জিহাদিরা রয়েছে, কিন্তু তাঁরা অনেক দূরে, ভোউগলিকভাবে পৃথককৃত। অবশ্যই কোন কোন জায়গায় লোকজন মারা যাচ্ছে। কিন্তু শতকরা ৯০ ভাগ লোক তাতে আক্রান্ত হচ্ছে না। একটি রিসোর্টের কাছে সামরিক কার্যকলাপে অন্তত লোকেদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বিঘ্নিত হচ্ছে না। এভাবে রাশিয়ানরা এ পরিস্থিতিতে তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে পারেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .