দামাস্কোর উপশহর আল ঘুটাতে আসাদের রাসায়নিক যুদ্ধ

সক্রিয় কর্মীদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাশার আল আসাদের বাহিনী আজ সকালে সিরিয়ার দামাস্কাসের পূর্বে ঘুঁটা অঞ্চলে স্নায়ু গ্যাস দিয়ে আক্রমন করে। এর ফলে কয়েকশ লোক মারা যায়, যাদের বেশিরভাগই শিশু এবং নারী।

সিরিয়াতে সাধারণ জনগনের বিরুদ্ধে যে নৃশংস আচরন করা হচ্ছে তার সম্পর্কে বিশ্বের নীরবতা ভাঙার দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো জুড়ে মৃত্যুপথযাত্রী (এবং মৃত) শিশুদের ভয়াবহ ফুটেজের পলস্তারা দেয়া হয়েছে।

আম্মানের জর্ডানে বসবাসরত ইনাস নামের একজন সিরিয় নাগরিক, বৃহত্তর সিরিয়াতে লিখেছেনঃ  

ভোর ৩ টার কাছাকাছি সময়ে ইন তুরমার জামাল্লাকা এবং আল জাইনিয়া এলাকাতে শাসক বাহিনী রাসায়নিক শিরস্ত্রাণ যুক্ত রকেট নিক্ষেপ করেছে। বাতাসের সাহায্যে গ্যাসগুলো ছড়িয়ে পরার কারনে জোবার জেলাটিও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি বিরাট সংখ্যক সাধারণ মানুষ পর্যায়ক্রমে গ্যাসটির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলস্বরূপ তাঁদের মধ্যে দশজন শাহাদাৎ বরণ করেছে। আরবিনের অস্থায়ী হাসপাতাল থেকে পাওয়া প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪১ জন শহীদকে কবরস্থ করা হয়েছে (২২ জন শিশু, ১১ জন নারী, ৮ জন পুরুষ), আরো ৫ জন শহীদকে দুমা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সাকবাতে ৪০ জন শহীদের ভিডিও ধারন করে রাখা হয়েছে এবং ইন তুরমার ভেতরেই রয়েছে কমপক্ষে ২০ জন শহীদ। মৃত্যু মাসুল এখন পর্যন্ত ১ শয়ের বেশি সংখ্যক বলে বেশিরভাগ সক্রিয় কর্মী রিপোর্ট করেছে। নিচের ভিডিওটিতে শ্বাসকষ্টে ভোগা মৃতপ্রায় শিশুদের যেমনটি দেখা যাচ্ছে যে এসব শহীদদের বেশিরভাগই শিশু।

এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি উদ্ঘাটনকারী কিছু ছবি এবং ভিডিও [সতর্কতাঃ হৃদয়বিদারক দৃশ্য আছে] – এর লিংক ইনাসের পোস্টে প্রদান করা হল।

ইনাস আরো বলেছেনঃ

রোগীদের বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অরূচি, মতিভ্রম, শ্বাসকষ্ট, প্রচন্ড কাশি, উচ্চ রক্তচাপ, পীড়ার সময় দখল ও মৃত্যু-পরবর্তী সময়ে কুলকুচা ইত্যাদি। নিষ্পাপ সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করতে শাসক বাহিনী যে রাসায়নিক অস্ত্র / বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার হয়েছে তাঁর হদিস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

সক্রিয় কর্মীরা যেমনটা রিপোর্ট করেছেন, লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত হওয়া এলাকার পরিবারগুলো অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ায় তাঁরা সাকবা এবং আশেপাশের বেশকিছু এলাকাতে পালিয়ে যাচ্ছে। সক্রিয় কর্মীরা এট্রপিনের অভাব নিয়েও রিপোর্ট করেছে, যা সাধারণত শাসক শ্রেনী সাধারণ লোকেদের শায়েস্তা করতে রাসায়নিক আক্রমনের সময় ব্যবহার করে থাকে; অক্সিজেন ট্যাঙ্কও পর্যাপ্ত পরিমানে নেই। চিকিৎসকেরা মুখে ও নাকে শুধুমাত্র ভিনেগার ব্যবহার করছেন এবং আক্রান্তদের শরীর পানি দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছেন।

এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। হালা দ্রুবি আরেকটি মাসুলের কথা প্রস্তাব করেছেনঃ

#পূর্বঘুটা #দামাস্কাস #উপশহর – এর সক্রিয় কর্মীরা বলেছে সকালে #কেমিক্যালএজেন্ট আক্রমনে শিশু সহ কমপক্ষে ৪০০ লোক মারা গেছে। #সিরিয়া 

এবং এখন পর্যন্ত এই মাসুল ৬৩৫ এর বেশী বলে অন্যরা দাবি করেছেনঃ

#ব্রেকিং#দামাস্কাস উপশহরে রাসায়নিক গ্যাস আক্রমনে এখন ৬৩৫ এর বেশি লোক মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী / শিশু। বিশ্বের এই নীরবতা সিরিয়াকে শেষ করে দিচ্ছে।

দারায়াতে একটি মাঠ হাসপাতাল থেকে তোলা একটি ছবি শেয়ার করেছেন মোহান্নাদ। সেখানে তিনি বলেছেন যে সেখানে এর চেয়ে বেশি আহতদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার কক্ষ নেইঃ

এমনকি দারায়ার মাঠ হাসপাতালটিতে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার মতো যথেষ্ট কক্ষ নেই। #সিডব্লিউগণহত্যা 

এবং সিরিয়াতে যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে তাঁর সম্পর্কে নীরবতা ভাঙতে প্রচার মাধ্যমকে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেনঃ

যদি প্রচার মাধ্যম কথা বলতে না চায়, তবে আমরা বলবো। আমরা কখনোই নিশ্চুপ থাকবো না।

ইনাস তাঁর বেদনা শেয়ার করেছেনঃ

আমি যেহেতু ঘুমাইনি তাই আমি বসলাম এবং ভিডিওটি দেখলাম এবং আমার হৃদয় কেঁদে উঠলো। আমি দূরে আছি বলে কিছু করতে পারছি না। আমার পরিবার, আমাকে ক্ষমা কর। #সিডব্লিউগণহত্যা #সিরিয়া 

তিনি আরো বলেছেন, আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী ইরবিনে নেয়া হলে তাঁদের অনুসরন করে আবারো বোমা নিক্ষেপ করা হয়ঃ

ব্রেকিং: সিডব্লিউএর কয়েকজন আক্রান্তকে আরবিনে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও #আসাদ বোমা নিক্ষেপ করেছেন।

টুইটারে এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি সম্পর্কে আরো জানতে হলে #সিডব্লিউগণহত্যা হ্যাশট্যাগটি অনুসরন করুন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .