সিরিয়ায় রক্তাক্ত রমজানকে তুলে ধরেছেন শিল্পীরা

মুবারক (স্বর্গবাসী) করিম (উদার) অথবা শান্তিপূর্ণ শব্দগুলো রমজানের সময় মনে আসা স্বাভাবিক। এই মাসটি ইসলাম ধর্ম মতে রোযা রাখার মাস। এ সময় পরিবার ও সম্প্রদায়ের লোকজন আনন্দের সাথে তাদের দৈনন্দিন ইফতারি এবং প্রার্থনা করতে একত্রিত হয়।

কিন্তু শিল্পীরা সিরিয়ায় এই পবিত্র মাসের এক ভিন্ন চিত্র বর্ণনা করেছেন – যেখানে রক্ত, সহিংসতা ও অনাশ্রয় শব্দগুলোই যেন এখন বেশি প্রযোজ্য। ২০১১ সালের মার্চে আরব বসন্ত শুরুর প্রথম প্রতিবাদের পর থেকেই সিরিয়ায় রমজান স্বর্গীয় অথবা উদার নয়; বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ নয়।

সিরিয়ায় প্রকৃত অর্থে কি চলছে ? কেউই ঠিক করে কিছু বলতে পারেন না। কিন্তু যেটা সবাই দেখছে তা হলো, অগণিত মানুষ হত্যা, কয়েক ডজন অপহরণ এবং শত শত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রতিদিন পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন

Ramadan in Syria according to Osama Hajjaj

অসামা হাজ্জাজ এর মতে, সিরিয়ায় রমজান মাস। 

সম্প্রতি জাতিসংঘ বলছে, সিরিয়ার সংঘাত “অত্যন্ত অধোগামী” হয়ে পড়েছে এবং প্রতি মাসে সেখানে ৫,০০০ মানুষ মারা যাচ্ছে। এই বছরের রমজান মাসও সেখানে অন্য কোন মাসের তুলনায় ভিন্ন হবে না। এমনকি এটা আরও খারাপ হতে পারে। সহিংসতা বন্ধের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এর আহ্বান উভয় পক্ষই কানে তুলছে বলে মনে হচ্ছে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আঘাত থেকে অপমান এবং খাদ্য ও ঔষধের মুল্যস্ফীতি। সিরিয়ার আরব সংবাদ সংস্থা (সানা) অনুযায়ী:

@সানা_ইংরেজিঃ #সিরিয়া’র স্বাস্থ্যমন্ত্রী: ঔষধের নিরাপত্তা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ঔষধের মূল্য বাড়াতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

হোমস শহর অবরোধের মতোই আলেপ্পো এবং দেশ জুড়ে অন্যান্য শহরগুলোও যুদ্ধ বিধ্বস্ত।

সিরিয়ার আমাল হান্নানো তার টুইটে পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন:

@আমালহান্নানোঃ রমজানের ১ম দিন, #আলেপ্পো অনাহারে ছিল। একডলারের মূল্য দাঁড়ায় ৩০০ সিরিয়ান পাউন্ড পর্যন্ত। কোন খাদ্য বা ওষুধ পাওয়া যায় না। #সিরিয়া

এমনকি ধর্মীয় ভবনও বাদ দেওয়া হয় নি।

@গটফ্রিডমসিরিয়াঃ আমাদের বারান্দা থেকে দেখতে যে মসজিদ দেখি তা এখন আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।  আসাদ শাসনামলে তৈরি অনেক মসজিদ এই রমজানের মধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়াও সিরিয়ার শিল্পীরা অনলাইনে অনেক শিল্প ওকাজের মাধ্যমে পরিস্থিতি দেখিয়েছেন।

তাম্মাম আযযামের আঁকা বিখ্যাত রমজান ক্রিসেন্ট বা চাঁদ এখানে দেখানো হয়েছে:

Ramadan Kareem from Tammam Azzam

তাম্মাম আযযাম এর মতে রমজান কারিম 

সিরিয়া বিপ্লবের ব্যঙ্গচিত্র” ফেসবুক পাতায় শিল্পী হিচাম চামেলি সাড সুহর (ভোরে রোজা শুরুর আগে মানুষ যে খাবার খায়/সেহেরি) পোস্ট করেছেনঃ

There is no one left to wake up for the Suhoor in Syria

সিরিয়ায় ইফতারির [রোজা রাখার জন্য ভোরে যে খাবার খাওয়া হয়] জন্য কেউ বেঁচে নেই। 

A Ramadan Crescent dripping blood along side a full moon made of the names of Syrian towns. Photo posted on Art and Freedom Facebook Page

মাহের আবুল হুসেন সিরিয়ায় রমজানের চাঁদ দেখেছেন। সিরিয়ার শহরগুলোর নাম দিয়ে গঠিত রমজানের একটি পূর্ণ চাঁদ থেকে রুক্তক্ষরণ হচ্ছে। আর্ট এবং ফ্রিডম ফেসবুক পাতায় ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। 

বাশার [সিরিয়া প্রেসিডেন্ট] কীভাবে ইফতারের জন্য খাদ্য বিতরণ করছেন তা দেখুন।

During the month of Ramadan a Cannon is used to remind people it is time to break their fasting and have their iftar meal.

বাসমা সউরিয়া পাতায় পোস্টকৃত এই ব্যঙ্গচিত্রে দেখা যাচ্ছে, বাসার সিরিয়ার শহরগুলোতে বোমা মারছেন। 

জর্ডান থেকে ব্যঙ্গ চিত্রকর ওসামা হাজাজ তার সিরিয় প্রতিবেশী এবং ভাইদের অঙ্গীকারের সঙ্গে সহানুভূতি প্রকাশ করেছেনঃ

কিন্তু সবকিছু সত্ত্বেও, সিরিয়রা এখনও হাস্যরস পূর্ণ। যদিও এটা কালো, এমনকি তাদের জীবনের সঙ্গে বহন করে। টুইটার এবং ফেসবুকে এই ছবিটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছেঃ

We apologize this year from the Arabs for not broadcasting "Bab Al Hara" The Neighborhood's Gate" series (one of the post popular Series in the Arab World, usually aired during Ramadan) because Bachar hasn't left any Hara (Neighbourhood)

“বাব আল হারা” [প্রতিবেশীদের গেট] সিরিজটি [আরব বিশ্বে রমজান মাসে বহুল প্রচারিত সিরিজ] সম্প্রচার করতে না পারায় আরবদের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি, কারণ বাশার আমাদের কোন হারা [প্রতিবেশী] অবশিষ্ট রাখেননি।  

এই পোস্টের সবগুলো ছবি শিল্পীদের অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .