“আমাদের চিড়িয়াখানা রক্ষা কর” প্রচারাভিযানে সোচ্চার মিয়ানমারবাসি

মিয়ানমার সরকার ইয়াঙ্গুন জুলোজিক্যাল গার্ডেনটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে চায়। এটি ১৯০৬ সাল থেকে শহরের বিখ্যাত নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। এমনকি ৪৫০ টি পশুকে দেশটির নতুন রাজধানী নাইপিদোর অন্য চিড়িয়াখানাতে ইতোমধ্যে স্থানান্তর করা হয়েছে। মন্ত্রী সো থেইন তর্কের সুরে বলেছেন, চিড়িয়াখানাটি এরইমধ্যে শহরের অধিবাসীদের জন্য একটি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, ইয়াঙ্গুনের বাইরে অবস্থিত লোকার জাতীয় বন্যপ্রাণী উদ্যানে চিড়িয়াখানাটি স্থানান্তর করা হতে পারে।

নেটিজেনরা স্থানান্তরকরণটি বন্ধ করতে একটি অনলাইন প্রচারাভিযান শুরু করেছে। মাহার কেয়াউং ফেসবুকে “আমাদের চিড়িয়াখানা বাচাও” ছবিটি পোস্ট করেছেন। তিনি কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, অন্যান্য দেশে চিড়িয়াখানাগুলো তাঁদের শহরের কেন্দ্রস্থলেই অবস্থিতঃ

ভিয়েতনামের সায়গন চিড়িয়াখানাটি ১৮৬৪ সালে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে খোলা হয়েছিল। একইভাবে, জাকার্তা শহরে অবস্থিত রাগুনান চিড়িয়াখানাটি ১৮৬৪ সালে খোলা হয়েছিল। ফিলিপাইনে ম্যানিলা চিড়িয়াখানা খোলা হয়েছিল ১৯৫৯ সালে এবং এটিও শহরের মূলকেন্দ্রে অবস্থিত।

প্রকৃতপক্ষে প্রধান কারনটি হচ্ছে (আমি যা শুনেছি) ইয়াঙ্গুন চিড়িয়াখানার […] জায়গাটিতে তাঁরা হোটেল তৈরী করার পরিকল্পনা করছেন।

Photo - Ma Har Kyaung Facebook Page

ছবিঃ মা হার কায়াং ফেসবুক পাতা 

এরপর প্রস্তাবটির বিরোধীতা করার কারণ তিনি উদ্ধৃত করেছেনঃ

যেহেতু বর্তমান জুলোজিক্যাল গার্ডেনটি একটি ঐতিহাসিক চিড়িয়াখানা;

যেহেতু জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এটি স্থাপন করা হয়েছিল;

যেহেতু লোকার উদ্যানটি নতুন করে তৈরী করার প্রয়োজন হবে তাই দেশের বাজেটের টাকার অপচয় হবে;
যেহেতু বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন, যারা ইয়াঙ্গুনে বেড়াতে আসবেন তাঁদের জন্য সোয়েডাগণ প্যাগোডা (লেখকের নোটঃ সোয়েডাগণ প্যাগোডার খুব কাছে ইয়াঙ্গুন চিড়িয়াখানা। ছোট শহর ও গ্রাম থেকে যারা ইয়াঙ্গুনে বেড়াতে আসে তাঁরা সাধারণত সোয়েডাগণ প্যাগোডা পরিদর্শনের পর চিড়িয়াখানাটিতে যায়) দেখার পর শহরের বাইরে যাওয়া অসুবিধাজনক হবে;
যেহেতু আমার জানামতে প্রাক্তন জেনারেলের (মন্ত্রী সো থেইন) পরিকল্পনা ছিল তিনি চিড়িয়াখানাটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে লভ্যাংশ আয় করবেন।

যদি তাঁরা চিড়িয়াখানাটি লোকারে সরিয়ে নেয়া চালিয়ে যান তবে ইয়াঙ্গুনে বেড়াতে আসা আমাদের খালা ফুফু, যারা চিড়িয়াখানা দেখতে চাইবেন তাঁদের আমরা ইউ সো থেইনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেব।

নেটিজেনদের অনেকেই তাঁর সাথে একমত হয়েছেন। নাইং লিন গিউই তাঁর উদ্বিগ্নতা প্রকাশ [আমার] করেছেনঃ

অন্য একটি তৎপরতা আন্দোলন একটি প্রজেক্ট থামাতে আবার প্রতিবাদ শুরু করেছে।

ইয়ান নাউং সো ব্যঙ্গ করে লিখেছেন [আমার]:

বুদ্ধ এবং আমার অন্য দেবতাদের প্রশংসা করে আমি প্রার্থনা করি। তাঁদের (মন্ত্রীদের) যেন সোয়েডাগণ প্যাগোডাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা না থাকে।

কো গি কিয়াও প্রশ্ন করেছেন [আমার] অধিবাসীরা যদি চিড়িয়াখানাটি নিয়ে কোন অভিযোগ করেঃ

এটিকে (চিড়িয়াখানা) অস্বাস্থ্যকর বলতে এর আশেপাশের অধিবাসীরা কি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে ? চিড়িয়াখানাটি যখন স্থাপিত হয় তখন আপনার (মন্ত্রী) জন্মই হয় নি।

জিন মার লুইন তাঁর হতাশার কথা শেয়ার [আমার] করেছেনঃ

তাঁরা প্রায়ই মনে করেন কোন কিছু অন্য কোন স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই বুঝি উন্নয়ন। আমি হতাশ।

ইয়ার জার ডি ইয়ার জার কর্তৃপক্ষকে অবৈধ আয় বন্ধ করতে জোর [আমার] দিয়ে বলেছেনঃ 

এখন দেশে যতো ঘটছে তা যথেষ্ট। এরইমধ্যে (আপনারা) যে পরিমান সম্পত্তি গোপনে মজুদ করেছেন তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ।

বেশ কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী, যারা পোস্টটি দেখেছেন তাঁরা “আবার?”, “এইবার তাঁরা কি চায়?” ইত্যাদি প্রশ্ন করেছেন।

যেহেতু চিড়িয়াখানাটি বর্তমানে ঠু ট্রেডিং – এর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী তায় জা ব্যবস্থাপনা করছেন তাই কোম্পানিটি বলেছে তাঁরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অনুসরণ করবেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .