ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সামাজিক গণমাধ্যমগুলোকে অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করছেন প্রার্থীরা

The Presidential Election. Shared by the International Campaign for Human Rights in Iran

কার্টুনিস্ট তুকা নেয়েস্তানি ইরানে মানবধিকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযানের জন্য একটি কার্টুনে ইরানের নির্বাচনের বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রার্থীরা ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক গণমাধ্যমের ব্যবহারের ক্ষেত্রে একে অন্যের সাথে প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। যদিও এই সাইটিগুলো ফিল্টারিং করা হয় এবং সাধারনত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এগুলোতে প্রবেশ করতে পারেন না। তেহরানের মেয়র মোহাম্মাদ বাগের ঘালিবাফও একজন প্রার্থী, যিনি তাঁর প্রচারাভিযানে ইন্টারনেট ফিল্টারিংকে আক্রমণ করেছেন।

গত কয়েক বছরে ইরানে অগণিত পরবাস্তব ঘটনার মঞ্চ তৈরী হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটিও এর ব্যতিক্রম নয়। সতর্কতার সাথে বাছাইকৃত এক দল প্রার্থীর মধ্য থেকে ১৪ জুন, ২০১৩ তারিখে ইরানীরা মুক্তভাবে একজন প্রেসিডেন্ট বেছে নিবেন। যাদের সকলেই সর্বোচ্চ নেতার কাছের এবং পছন্দের পাত্র।

শূন্য ব্লগগুলো

ইরানের প্রধান পরমাণু আলোচক সাইদ জালিলি। এক হাজার আট শতেরও বেশী ব্লগ তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে বলে তিনি তাঁর প্রেসিডেন্ট প্রচারাভিযানে দাবি করেন । ইরানের একটি মিথস্ক্রিয় মানচিত্রে একটি মাত্র ক্লিক করে ব্লগগুলোতে প্রবেশ করা যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এগুলোর মাঝে কিছু আছে – যেমন শাহিদ [শহীদ] জাবুনি – দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয় এবং শুধুমাত্র সাম্প্রতিক সময়ে জালিলিকে সমর্থন করে কোন ধরণের লেখা ছাড়াই একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। এমনকি প্রচারাভিযানের জন্য কোন শব্দ ছাড়াই কিছু ব্লগ তৈরি হয়েছে বলেও দেখা যাচ্ছে।

জালিলি টুইটারও ব্যবহার করেছেন। তাঁর ইংলিশ টুইটগুলো তাঁর রাজনীতিকে আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের কাছে নিয়ে যেতে সাহায্য করবেঃ

@ডঃসাইদজালিলিঃ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে যথার্থ প্রবেশ পথ ছিল ইরানের আন্তর্জাতিক রাজনীতি। অন্যদের এটিকে আরো দক্ষ করা প্রয়োজন।

ভোটের জন্য ফেসবুক ভালো, কিন্তু জনগণের জন্য খারাপ 

একজন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনির একজন উপদেষ্টা ডঃ আলি আকবর ভেলয়াতিকে আটজন প্রার্থীর মধ্যে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশী লোক পছন্দ করেছে। ব্রুকিংস ইন্সটিটিউটের একটি তুলনাকারী চার্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে ৪০ হাজারেরও বেশী লোক পছন্দ করেছে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন মোহাম্মাদ বাগের ঘালিবাফ, যাকে কেবলমাত্র ১৯ হাজার লোক পছন্দ করেছে

ভেলিয়াতির ফেসবুক পেজে সমর্থকদের এবং অন্যান্য যারা ইন্টারনেট পরিস্রাবনের সমালোচনা করার একটি সুযোগ পাকড়াও করেছেন, তাঁরা মন্তব্য করেছেন। কল্লান নিসতাম লিখেছেন [ফার্সী]:

[ইসলামিক প্রজাতন্ত্র] বলে ফেসবুক অনুমোদিত নয় এবং প্রতারক। হটাত করে আপনারা সবাই ভোট সংগ্রহ করতে ফেসবুকে যোগ দিলেন কেন ? আপনি কি মনে করেন, প্রধান [প্রেসিডেন্ট] হওয়াতে আপনার নিজের কাজকেই আপনি অস্বীকার করবেন এবং অন্যরা তা গ্রহন করবে? স্লোগান দেবেন না। এমনকি আপনি এই  সিদ্ধান্তও দিতে চান যে জনগণের কোন অন্তর্বাসটি পরা উচিৎ। আপনারা আমাদের এই ভার্চুয়াল দুনিয়াতে উত্তেজিত করে ফেলছেন, চলে যান।

ব্লকের নতুন শিশু ইন্সটাগ্রাম     

প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনাজাদ সহ আগের অর্থাৎ ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চারজন প্রার্থী এবং দুইজন বিরোধীদলীয় নেতা, মির হুসেন মউসাভি এবং মেহেদি কারবি তাঁদের প্রচারাভিযানের জন্য ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহার করেছিলেন।

এবার সাইদ জালিলি এবং মোহাম্মাদ বাগের ঘালিবাফ, এই দু’জন প্রার্থী মিশ্রণটিতে একটি নতুন যন্ত্র যোগ করেছেনঃ ইন্সটাগ্রাম। সাম্প্রতিক সময়ে সাইদ জালিল বিভিন্ন সভায় ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলা তাঁর নিজের ৩৩ টি ছবি প্রকাশ করেছেন। ঘালিবাফ ছবির চেয়ে বেশী, লেখা প্রকাশ করতেই ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করেছেন

বাছাইকৃত প্রার্থী

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের দৌড়টিতে, সাবেক রেভোলুশনারি গার্ডের নেতা মোহসিন রেজাই সবচেয়ে কম ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন। এইবার রেজাই টুইটার ও ফেসবুকে আরো অভূতপূর্ব সামাজিক মাধ্যম কৌশল নিয়ে ফিরে এসেছেন। তাঁর ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে রেজাইয়ের প্রচারাভিযান চিত্রের যে অংশে তিনি ইরানীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন সে অংশটুকু কেটে ফেলা হয়েছে

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .