পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচন বর্জন করছে আহমাদিরা

২,০০,০০০ সদস্য নিয়ে গঠিত পাকিস্তানের আহমাদি সম্প্রদায় আসন্ন নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রদায়টির প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্যের প্রতিবাদে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আহমাদি ভোটারদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের তালিকায় রাখার প্রতিবাদে সেই ১৯৮৫ সাল থেকেই তাঁরা নির্বাচন প্রক্রিয়া বর্জন করে আসছে।

২০০০ সালে পাকিস্তান সরকার আহমাদি ভোটারদের জন্য আলাদা তালিকা প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী মে মাসের ১১ তারিখের নির্বাচনের জন্য পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন আহমাদি সম্প্রদায়ের সদস্যদের ঠিকানা সম্বলিত এই তালিকা হালনাগাদ ও প্রকাশ করেছে। অতীতে আহমাদিদের মালিকানাধীন সম্পত্তির উপর বহুবার আক্রমণ করা হয়েছে। সুতরাং ঠিকানার তালিকাটি এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিশাল ঝুঁকিতে রেখেছে।

Pakistan flag

পাকিস্তানি পতাকার সাদা অংশ সংখ্যালঘুদের নির্দেশ করছে।
ছবিঃ আহমেদিয়া টাইমস

একজন উল্লেখযোগ্য পাকিস্তান ব্লগার কিডভাই দেশের এই অবস্থায় ‘কি – আমি চিন্তিত?’ নামের একটি পোস্ট লিখে মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেনঃ

সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ এর শাসনের সময় নির্বাচন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক আইন চালুর ফলে আহমাদিরা অবাধে ভোট দিতে পারত না। তিনি ইসলামবাদীদের চাহিদার প্রতি নত ছিলেন (জেডএ ভুট্টো যেমনটি করেছিলেন!) এবং একটি রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করেন, যেটি কার্যকরভাবে আহমাদিদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখে। ২০০২ সালের ১৫ নং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দেশের যৌথ ভোটার তালিকা থেকে আহমাদিদের বাদ দেওয়া হয়। ফলে তাঁদের একটি সম্পূরক ভোটার তালিকা নিবন্ধন এবং ইসলামী মতবাদের উপর তাদের বিশ্বাস ত্যাগ করার একটি ঘোষণা পত্রে স্বাক্ষর করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। [Executive Order No. 15 of 2002 excluded Ahmadis from the country's joint voter roll, requiring they be registered on a supplementary voter roll, and necessitated that Ahmadis must sign a declaration to renounce their faith in Islamic tenets.]

সম্প্রতি টুইটারে পাক ভোট (@পাকভোট) নামের একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ উদ্যোগ এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। অ্যাকাউন্টটি এপ্রিলের ২২ তারিখে পোস্ট করা হয়েছেঃ

@পাকভোটঃ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে প্রায় ২,০০,০০০ সদস্য বিশিষ্ট আহমাদি সম্প্রদায় এবারের নির্বাচন বর্জন করবে। #পাকভোট এর মাধ্যমে। @ডন_কম

এর জবাবে একজন অনলাইন ব্যবহারকারী আহমাদি সম্প্রদায়ের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তিনি (@আইঅ্যাটএফআলী) তাঁর একটি টুইটে লিখেছেনঃ

@আইঅ্যাটএফআলীঃ @পাকভোট @ডন_কম, খুব ভালো … ঈশ্বরের অভিশাপ এই ব্যক্তিদের উপর পড়বে, আমাদের কাছে তাঁরা মূল্যহীন।

দুঃখজনকভাবে, এই আচরণ পাকিস্তানের অধিকাংশ জনগনের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। এ কারণে আহমাদিদের অমুসলিম হিসেবে গণ্য করা হয় এবং প্রায়ই সাধারণ মানুষের হাতে তাঁরা সহিংসতা ভোগ করে। অতীতে এই ধরনের অসংখ্য ঘটনা সাংবাদিকরা গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন। যাই হোক, রাষ্ট্র হয় অসমর্থ অথবা এই বিষয় পর্যালোচনা করতে অনিচ্ছুক।

ইমরান খান সম্প্রতি বিবৃত দিয়েছেন, তার দল পিটিআই, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা এবং সকলের সমান অধিকার প্রদানে কাজ করবে। তিনি বলেন, পিটিআই সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষে প্রতিষ্ঠিত। যাইহোক, খান তাঁর এই দাবী শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .