ফুটবল: আর্জেন্টিনার মেসি নাকি জাম্বিয়ার চিতালু, রেকর্ড কার দখলে?

আর্জেন্টিনার ফুটবলার লিওনেল মেসি, এক মৌসুমে করা সর্বাধিক গোলের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে, আসলে সে কি তা করেছে?

এই ক্ষেত্রে অন্যরকম এক প্রতিদ্বন্দ্বী মেসির রেকর্ডের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। মেসি যখন তার স্প্যানিশ লা লীগার দল বার্সেলোনার হয়ে খেলে, তখন মুগ্ধ হয়ে তার খেলা দেখতে হয়। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাম্বিয়ার এক নাগরিক, সে একজন ফুটবলার, কুড়ি বছর আগে যে মৃত্যুবরণ করেছে।

২৮ এপ্রিল ১৯৯৩ সালে জাম্বিয়ার জাতীয় ফুটবল দলকে বহনকারী যে বিমান বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের খেলায় অংশ নিতে সেনাগালের উদ্দেশ্য যাত্রার সময় গ্যাবনে বিধ্বস্ত হয়, গডফ্রে চিতালু ছিলেন তার অন্য ৩০ জন খেলোয়াড়র ও কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন।

গডফ্রে চিতালু একই সাথে মিনিকার উকার নামেও পরিচিত ছিলেন এবং মৃত্যুর সময় তিনি জাম্বিয়ার জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। এমনকি উকার তার নামের মাঝের অংশে পরিণত হয়েছিল। উকার নামক ব্যাটারি ( ইউনিয়ান কার্বাইড-এর বানানো) থেকে তার এই নামের উৎপত্তি। মাঠে অফুরন্ত দমের কারণে তাকে এই নামে অভিহিত করা হত, মূলত ফুটবল খেলা শোনার জন্য দুই ব্যান্ডের রেডিওতে এই ব্যাটারি ব্যবহার করা হত।

ব্লিচার রিপোর্ট নামক একটি ওয়েব সাইট উল্লেখ করছে যে চিতালু ১৯৭২ সালে এক মৌসুমে ১০৭ গোল করে বিখ্যাত হয়েছিলেন:

রেকর্ডের খাতা আবার এখনই নতুন করে লিখবেন না-যতক্ষণ না গডফ্রে চিতালুর নাম নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে ।

যখন পশ্চিমের প্রচার মাধ্যম মেসির রেকর্ড-করা গোলের সংবাদ প্রকাশ হয়, তখন টুইটারে গডফ্রে চিতালুর নাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে:

@ওলুয়াশিনা প্রিয় মেসি, হ্যাঁ, তুমি গার্ড মুলারের রেকর্ড ভাঙ্গতে সমর্থ হয়েছ, কিন্তু ১৯৭২ সালে এক মৌসুমে করা গর্ডফ্রে চিতালুর রেকর্ড ভাঙ্গতে পারনি। *মাইকেল জ্যাকসনের গাওয়া গান –বিট ইট। *

একটি টুইটকারী মেসির রেকর্ডকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করে, দৃশ্যত পক্ষপাতিত্বের জন্য পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমকে দোষারোপ করে, সে লিখেছে:

@বিশপসকিডস @ওয়ার্ল্ড_ড্রিম গোলের ওই রেকর্ড গডফ্রে চিতালুর দখলে, পক্ষপাতিত্বের আরেকটি পরিষ্কার নিদর্শন।

ইউকে জাম্বিয়া যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি নাগরিক প্রচার মধ্যম ওয়েব সাইট, জাম্বিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফাজ)–এর কর্মকর্তার , উদ্ধৃতি প্রদান করেছে:

এমনকি যদিও বিশ্বের সবাই গার্ড মুলারের রেকর্ড ভাঙ্গার অপেক্ষায় মেসির দিকে তাকিয়ে আছে, তারপরেও এখানে বিতর্ক এবং আলোচনা চলছে যে কেন গর্ডফ্রের গোলের সংখ্যার স্বীকৃত প্রদান করা হল না। আমরা যা করছি তা হচ্ছে আমরা স্থানীয়ভাবে একটি স্বাধীন দল তৈরি করেছি, যাতে আর্কাইভ অনুসন্ধান করা হয় এবং ওই সমস্ত প্রতিটি গোলের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব যাচাই করা যায়, আমরা যে দলটি একত্রিত করেছি, তারা ওই সমস্ত গোলের হিসেব করবে, যে সমস্ত খেলা বা প্রতিযোগিতায় এই সমস্ত গোল গুলো করা হয়েছে।

এরপর আমরা সেগুলোকে সিএএফ-এ [আফ্রিকান ফুটবল সংস্থা] এবং ফিফার কাছে পাঠিয়ে দেব যাতে আমরা তাদেরকে দেখাতে পারি, এই দেখ মেসির রেকর্ড, আর এই দেখ মুলারের রেকর্ড, আর এই দেখ এক মৌসুমে করা সর্বাধিক গোলের রেকর্ড, আসলে যা এক আফ্রিকান, গডফ্রে চিতালুর দখলে।

যুক্তি হিসেবে কেউ বলতে পারে যে সে সময়ে জাম্বিয়ার ফুটবল আজকের মত এত পেশাদার ছিল না, কিন্তু ফুটবলপ্রেমী জাম্বিয়ার নাগরিকরা আশা করতে পারে যে এই কাহিনীর মাধ্যমে অন্তত রেকর্ড সংরক্ষণের বিষয়টি উন্নত হবে।
 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .