ধনী শিল্প উদ্যোক্তারা কেন চীন ছাড়ছেন?

চীনের ধনী উদ্যোক্তারা চীন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। চীন মার্চেন্ট ব্যাংক এবং বেইন অ্যান্ড কোং এর জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। ১০০ মিলিয়নের বেশি চীনা মুদ্রার (আরএমবি) মালিকদের ২৭% দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আর ৪৭% দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

এই ধনী অভিবাসীদের নিয়ে চীনের সাধারণ মানুষদের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি চীনের প্রসিদ্ধ নারী ব্যবসায়ী এবং সিপিপিসিসি (চীনের রাজনৈতিক পরামর্শ বিষয়ক সংগঠন) এর সদস্য জিয়াং ল্যানের দেশ ছেড়ে গেছেন। তার এই অভিবাসন এই বিতর্ককে আরো উস্কে দিয়েছে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা

চীনের উদ্যোক্তা বিষয়ক ম্যাগাজিনের ব্যাখ্যা হচ্ছে:

জিয়াং ল্যানের দেশত্যাগ বিতর্ককে আরো উস্কে দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

中国企业家杂志:分析认为,缺乏安全感是众多商人共同的感觉。迁往其他经济体,可以提供其他的、独立于中国经济的财富来源的新机会。多样化可以降低风险,避免因只在一国经营、或从事一种经济活动的损失,提高富人阶层的“安全感”。

চীনের উদ্যোক্তারা নানা ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তাই তারা যখন অন্য একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যান, তখন চীনের অর্থনীতিকে নতুন সুযোগের স্বাধীনতাও দেন। কারণ এটি শুধুমাত্র একটি দেশে (চীন) ব্যবসা করার ঝুঁকিকে অনেক কমিয়ে দেবে। বিশেষ করে চীনে যেখানে অর্থনীতি নীতিগুলো বেশ নড়বড়ে অবস্থায় আছে। তাছাড়া এটা তাদের আগের চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক নিরাপত্তা দেবে।

ifeng.com[zh],নামের চীনের প্রভাবশালী পত্রিকা একই ধরনের অভিমত দিয়েছে:

老实说,在目前的中国很难给人以安全感,普通老百姓可能觉得有钱人比较安全,自己因为各种社会保障不全的缘故比较焦虑,但有钱人的安全感更低。前段时间三一重工的梁稳根说过,自己的财产与生命都是国家的,党员的太太也比较漂亮。这话看上去挺谄媚,实际上更像是一种恐惧的表达。任何做企业的人都知道,只有产权清晰才好做事,自己的产业怎么可能做这样的表述?

সত্যি বলতে চীনের সমাজকাঠামো নাগরিকদেরকে সবদিকে দিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তা দিতে পারে না। সাধারণ মানুষ মনে করে ধনীরা নিরাপদ আছে। কারণ, তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা (স্বাস্থ্য, বিমা, পেনশন) নিয়ে ভাবতে হয় না। যদিও চীনের ধনীরা বেশি পরিমাণ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। সম্প্রতি চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি লিয়াং ওয়েনগিং বলেছেন, তার জীবন এবং সমস্ত সম্পত্তি সবকিছুই রাষ্ট্রের অধীন এবং পার্টির সদস্যদের স্ত্রীরা আরো সুন্দরী হয়ে উঠছেন! তার বক্তব্যকে বোকামি মনে হলেও এর মধ্যে দিয়ে তার ভয় কিন্তু বের হয়ে এসেছে। একজন উদ্যোক্তা তার সম্পদ নিয়ে কেন এ ধরনের বক্তব্য দিবেন? যেকোনো উদ্যোক্তাই জানে ব্যবসা করতে গেলে সম্পত্তির ওপর অধিকার কতটা দরকার।

চীনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কঠোর নীতি

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক হুয়াং সং ধনী উদ্যোক্তাদের অভিবাসনের পেছনে কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন:

企业家移民有很多原因,舆论通常关注的有两方面:一是对社会未来没有信心,二是做过亏心事怕事后被追究。但还有一个日益重要的原因却常常被忽视,那就是中国企业对外投资和海外融资的种种政策障碍和审批限制。第一,由于资本账户下的外汇管制,中国企业对外投资需要外汇管理部门审批,直接投资方面的审批政策不断放松,但仍存在不少限制,而金融投资则受到严格管理。第二,中国企业对外投资项目需要发展改革部门核准,在时间上、获批性上都存在较大不确定性。
中国的金融体系本质上还是一个支持国有企业和大型企业的垄断金融,大量民营企业和中小企业存在融资难问题:银行贷款难、上市更难、发债是难上加难。

উদ্যোক্তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার পেছনে মেলা কারণ আছে। জনগণের মতামত থেকে দুটি বিষয় পাওয়া গেছে। এক, তারা চীনের ভবিষ্যতের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, এমন কোনো দুর্নীতি করেছে, যা থেকে বাঁচতে তারা দেশ ছাড়ছে। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সবসময় উপেক্ষা করা হয়েছে। আর সেটা হলো বিদেশী বিনিয়োগের ব্যাপারে সরকারের কঠোর বাঁধা নিষেধ। চীনের কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যদি বাইরের দেশে বিনিয়োগ করতে যায়, তাকে ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে অনুমোদন নিতে হয়। বর্তমানে বিদেশে বিনিয়োগ নীতি আগের চেয়ে সহজ হলেও এখনো সেখানে নানা ধরনের বিধি নিষেধ রয়েছে। আবার বিদেশে বিনিয়োগের সময় ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম বিভাগ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। আর এখানে এসে যেকোনো প্রজেক্ট অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে।

চীনের অর্থনীতি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প ও বৃহৎ শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার অনুমোদন করে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। কেননা, এর জন্য ঋণ পাওয়া, অর্থ সংগ্রহের জন্য শেয়ার বিক্রি বা বন্ড ইস্যু করাও খুব কঠিন।

অফশোর ইনকর্পোরেশন গ্রুপের বেইজিং অফিসের মহাব্যবস্থাপক ইয়াং ইয়ংমিন বলেছেন:

晒歪歪:不出所料,俏江南张兰移民到了那个加勒比海的一个岛国。了解这个情况的都知道,这跟张兰是否爱国没任何关系,纯粹是资本项下的移民,为公司海外上市考虑。 中国总有很多傻比的政策,坑了自己人,肥了外国人。

জিয়াং ল্যানের ক্যারিবিয়ান দ্বীপে অভিবাসন নিয়ে আমি মোটেই বিস্মিত নই। চীনের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নিয়ে যার-ই সামান্যতম জানাশোনা আছে, তারা বুঝবেন, এটা জিয়াংয়ের দেশের প্রতি ভালোবাসা থাক বা না থাক নিয়ে নয়। এর কারণ, বাইরে গিয়ে কোম্পানি চালানো জনগণের জন্য সহজ। চীনে অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে, যা নিজেদের জন্য যেমন  অস্বস্থিকর, তেমনি বাইরের দেশগুলো থেকে সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধক।

পিপলস ডেইলি একটি মন্তব্য প্রতিবেদন ছেপেছে। সেখানে ধনী উদ্যোক্তাদের দেশত্যাগ ঠেকানোর জন্য আমেরিকার মতো বিপুল পরিমাণ ট্যাক্স আরোপের পরামর্শ দিয়েছে। যদিও নেটিজেনরা পিপলস ডেইলি’র এই পরামর্শের সমালোচনা করেছেন। জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক মিং ফি সমালোচনা করে বলেছেন:

孟非: 这个思路有问题!你见过几个美国富豪放弃美国国籍?应该思考的为什么那么多官员家眷、演艺明星、大小富豪、著名学者都想移民?而不是琢磨怎么给他们移民设置更高的门槛。不反省这个问题,设置再高的门槛也留不住。

এ ধরনের চিন্তাভাবনা ভুল পথে চালিত করবে। কয়জন ধনী আমেরিকান তাদের জাতীয়তা পরিত্যাগ করে? পদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রিয়, ধনী ও পণ্ডিত ব্যক্তিরা কেন দেশ ছাড়ে সেটা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। শুধু দেশত্যাগে বাঁধা দিলেই হবে না। আমরা যদি তাদের সমস্যা না দেখি, তাহলে হাজারো নিয়মকানুন আরোপ করে আমরা তাদের আটকাতে পারবো না।

জি কিয়াংলি একই সুরে বলেছেন:

志强李:张兰就是甩给僵化体制的耳光。

জিয়াং ল্যানের দেশ ছাড়া দেশের কঠোর নিয়মকানুনের প্রতি চপেটাঘাত।

চিনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এমন সব নিয়মনীতি যেগুলো মেনে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু বিদেশী কোম্পানি হলে এইসব নিয়মকানুন থেকে রেহাই পায়। ওয়াকার্স ডেইলির সম্পাদক শি শুসি সমস্যার সারসংক্ষেপ টেনে বলেছেন চীনের দরকার আগামী দশককে মোকাবেলা করা:

石述思:目前争议继续,抛开爱不爱国的充满道德绑架的争论,一个黑色幽默的结果是:作为民营餐饮企业的老板,如果张兰不移民,那么,无论是国内A股市场还是香港资本市场,按照现行政策都难以完成上市融资的诉求,但现在移民了,上市却成功在望。当然,这样的结果不美好,但罪魁是谁呢?实际上,富豪资金外流,只是中国经济出现问题的一种表现、一个信号而已,与其谴责他们,不如推动改革共识的形成,呼唤中国塑造尊重私权、依法行政、进一步解放生产力的法治市场环境。

দেশাত্মবোধের পাশে বিতর্ক এখনো চলছে। ফলাফলটা হাস্যকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে নিয়মকানুনের ফাঁদে পড়ে তিনি তার প্রতিষ্ঠানকে যৌথমূলধনী কারবারে পরিণত করতে পারছেন না (চেইন রেস্টুরেন্টের ব্যবসা ছাড়া)। যদিও তিনি অভিবাসী হয়েছেন। এখন তিনি তার প্রতিষ্ঠানকে খুব সহজেই যৌথমূলধনী কারবারে পরিণত করতে পারবেন। অবশ্যই, এটা চীনের জন্য মোটেও ভালো ব্যাপার না, কিন্তু এই দায়িত্ব কে নেবে? অভিবাসী হওয়ার এই প্রবণতা চীনের অর্থনীতির সমস্যাকেই তুলে ধরে। তাই শিল্প উদ্যোক্তাদের দায়ী না করে আমরা অর্থনীতির নিয়মকানুনগুলো সংস্কার করছি না কেন? কেন ব্যক্তিগত সম্পদের মালিকানার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হচ্ছি না? চীনের আইনকানুনগুলো ব্যবসায়িক পরিবেশের জন্য উপযুক্ত করছি না?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .