ইরানের কূটনৈতিক মিশনসমূহের উপর হামলা

বার্লিনে ইরানি দূতাবাসঃ সূত্র ইরান গ্লোব

সাম্প্রতিক সপ্তাহস্মুহে ভিন্ন ভিন্ন কারণে বিশ্বজুড়ে ইরান এবং আফগান নাগরিক ইরানের কূটনৈতিক মিশনের উপর হামলা চালিয়েছে। ইরানের ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী অংশের সমর্থকরা বার্লিনে ইরানি দূতাবাসে এবং আফগানিস্তানের হেরাতে আফগান নাগরিকরা ইরান কনসুলেট-এ হামলা চালায়।

শনিবারে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ইরানি দূতাবাসে হামলার খবর নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ রয়েছে। যখন একজন সংসদ সদস্য ডেনমার্কে ইরানি দূতাবাসে হামলার জন্য বিরোধীদের অভিযুক্ত করে [ফার্সী ভাষায়] সেখানে অন্য আরেক সংসদ এই ধরনের কোন হামলার কথা অস্বীকার করেন [ফার্সী ভাষায়]।

হেরাতে ক্ষোভ

শত শত আফগান বিক্ষোভকারী, ৯ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে পশ্চিম আফগানিস্তানের এই শহরের ইরানি কনসুলেট-এ হামলা চালানোর চেষ্টা করে, ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক আফগান উদ্বাস্তুদের হত্যার অভিযোগে প্রতিবাদে তাদের হামলা প্রচেষ্টা।

বার্লিন হামলা

ইরানের একদল নাগরিক যাদের একটিভিস্ট এবং উদ্বাস্তু হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে, তারা ২৮ নভেম্বর বুধবার বার্লিনে অবস্থিত ইরানি দূতাবাসে হামলা চালায়। এই ঘটনা ইরানের ব্লগস্ফেয়ারে এক উত্তপ্ত বিতর্কের সৃষ্টি করে। যে ঘটনাকে ব্লগস্ফেয়ারে প্রশংসা করা হয়, আবার দোষারোপ করা এবং নিন্দা জানানো হয়।

দৃশ্যত ঘটনাস্থলে ধারণ করা একটি ভিডিও যা ইউটিউব পোস্ট করা হয়েছে, যার ফুটেজ খানিকটা ঝাপসা, সে ভিডিওতে প্রায়শ দৃশ্যমান লাল এবং কালোর রঙ্গের পতাকা যা কিনা ইরানের জাতীয় পতাকার বদলে উত্তোলিত হতে দেখা যায়।

একটিভিস্টরা ইরানী দূতাবাসে হামলা চালানোর সময় বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় যেমন “স্বৈরাচার নিপাত যাক, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র নিপাত যাক”!

জার্মানীতে বসবাসরত ইরানি ব্লগার [ফার্সী ভাষায়] আনদিশে নভিন, দৃশ্যত যার মধ্যে একজন নৈরাজ্যবাদীর ঝোঁক রয়েছে, সে তার ব্লগ একাউন্টে এই ঘটনার সংবাদ প্রদান করেছে এবং নাসরিন সাতুদেহ-এর অনশন ধর্মঘট, সাথে চেতনার অন্যসব বন্দীদের প্রতি সমর্থন এবং একাত্মতা প্রকাশ করে আয়োজিত কর্মকাণ্ডের বর্ণনা প্রদান করেন। তার ব্লগে অনুসারে হামলাকারীরা ইরান সরকার দ্বারা গ্রেফতারকৃত “রাজবন্দীদের নিঃশর্তে মুক্তির দাবি করে”। আশাহকান নামের আরেকজন ব্লগার ওই সমস্ত ব্যক্তিরা যাকে “এক প্রতীকী প্রতিবাদ” হিসেবে দেখছে তিনি তার কর্মকাণ্ডকে অবলোকন করেছেন এবং লিখেছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পতাকা হচ্ছে ইরানের সকল কঠিন বাস্তবতা এবং দুর্দশার প্রতীক। ইরানের বর্তমান জাতীয় পতাকা ১৯৭৯ সালের বিপ্লবে উত্তোলিত হয়, যা কিনা এর আগের পতাকা সিংহ এবং সূর্যের বদলে গ্রহণ করা হয়েছিল। :

““এই পতাকা হচ্ছে খুন, গণহত্যা, অত্যাচার, আসক্তি, বেকারত্ব, কারাবরণ, পতিতাবৃত্তি, ডাকাতি এবং অপরাধ-এর এক প্রতীক”!”

আশাহকান, জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়ার ঘটনার প্রশংসা করেছে।

এই ঘটনার বিরোধীদের পক্ষ থেকে, ইরানি এক ব্লগার, যার ডাক নাম শাহগোলাম [ফার্সী ভাষায়] বার্লিনে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালানোর ঘটনাকে “বর্বরোচিত” হিসেবে অভিহিত করেছে :

“যখন কোন ব্যক্তি বা দল-এর বর্বরতা প্রাতিষ্ঠানিকতায় পরিণত করে, তখন আপনি ইরানে বাস করছেন, নাকি তৃতীয় বিশ্বে, কিংবা আধুনিক ইউরোপের একেবারে হৃদপিণ্ডে, সেটি আর কোন বিবেচ্য বিষয় থাকে না। এটা কোন বিষয় নয় যে কার সীমানা আপনি অতিক্রম করছেন। আজকে বার্লিনে ইরানি দূতাবাসে চালানো হামলাকে কোন মুক্তচিন্তার মানুষ সমর্থন করতে পারে না, যেমনটা কেউ সমর্থন করতে পারে না একবছর আগে তেহরানে উন্মাদ সামরিক বাহিনীর ব্রিটিশ দূতাবাসে চালানো বর্বরোচিত অভিযানকে। “

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .