মিশর: দুটি ক্যাম্পে একটি ব্যঙ্গচিত্র

আমি একপক্ষে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং অপরপক্ষে তাদের একইধরনের ধর্ম নিরপেক্ষ প্রতিপক্ষগুলোর মধ্যেকার বর্তমান ষড়যন্ত্রের এবং পিছন থেকে (পরস্পরকে) ছুরি মারাকে সংক্ষেপে প্রকাশের জন্যে এই ব্যঙ্গচিত্রটি ছাড়া আর ভালো কিছু খুঁজে পাইনি। ইসলামপন্থীরা এটা ফেসবুকে প্রথমে বিতরণ করে তারপরে বিপরীতপক্ষ তাদের দৃষ্টিকোণ প্রদর্শনের জন্যে এটাকে রদবদল করে বিতরণ করে।

ইসলামপন্থীদের দৃষ্টিকোণ

উপরের প্যানেলটির লেখা বলছে: “সামরিক বাহিনী মিথ্যাবাদী” “বিপ্লবীরা তস্কর… শহীদেরা আত্মহত্যা করেছে… পুলিশ নিরপরাধ… শুধু আমরাই বিপ্লবটিকে সুরক্ষা দিয়েছি… আর কোন লক্ষ্যভেদী বন্দুকধারী নেই… আর কোন বুলেট নেই…”
দ্বিতীয় প্যানেলের লেখাটি বলছে: “সামরিক বাহিনী সত্য কথা বলে” “তার মা আমেরিকান!”

এই কার্টুনে ইসলামপন্থীরা ধর্মনিরপেক্ষদের সামরিক বাহিনী যা বলে তা কখনো বিশ্বাস না করে সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্ট নির্বাচনী কমিশনের সালাফি প্রার্থী হাজেম সালাহ আবু ইসমাইলের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত তার (প্রার্থীর) মা আমেরিকান হওয়ার কারণে বিনা কথায় মেনে নেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করে।

আবু ইসমাইলের বহু সমর্থক এখনো একগুঁয়েভাবে কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা অব্যাহত রাখলেও অন্যদের মতামতে বিস্তর ফারাক রয়েছে। অনেকে মনে করেন যা ঘটেছে সেটি একটি ষড়যন্ত্র, কেউ কেউ আবার কমিশনের সিদ্ধান্তের কিছু কিছু বিষয়ে সন্দিহান, আবার অনেকে কমিশনের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একমত হলেও একইসাথে আবু ইসমাইলের ক্ষমাও দেখতে চান এবং আবার অনেকে তার থেকে নিজেদের বিযুক্ত করে ফেলেছেন তাকে এখন সত্যিকারের একজন সালাফি মনে না করার কারণে।

عسكر صادقون دائما إلا في حالة أم أبو إسماعيل

ধর্মনিরপেক্ষদের দৃষ্টিকোন

প্রথম প্যানেলের লেখাটি বলছে: “সামরিক বাহিনী সত্য কথা বলে” “বিপ্লবীরা তস্কর… শহীদেরা আত্মহত্যা করেছে… পুলিশ নিরপরাধ… শুধু আমরাই বিপ্লবটিকে সুরক্ষা দিয়েছি… আর কোন লক্ষ্যভেদী বন্দুকধারী নেই… আর কোন বুলেট নেই…”
দ্বিতীয় প্যানেলের লেখাটি বলছে: “সামরিক বাহিনী মিথ্যাবাদী” “তার মা আমেরিকান!”

অপরপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষরা কার্টুনটিকে রদবদল করে ইসলামপন্থীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিকোণ প্রদর্শনের জন্যে। এবং তাদের অনুমান যে তাদের অনেকে বিপ্লব পরবর্তীকালে সামরিক বাহিনীর পক্ষে নানা অজুহাত দেখান এবং আবু ইসমাইলের অযোগ্যতার পরেই কেবল তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।

মজার বিষয় হলো যে উভয়পক্ষই নিজেদের সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগের এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রামের দাবিদার বিবেচনা করে এবং তারা উভয়েই প্রতিপক্ষকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপনে আঁতাতের ও বিপ্লব পরিত্যাগের দায়ে অভিযুক্ত করে। এটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় একারণে যে এর ফলে  সামরিক বাহিনী এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে ইতোপূর্বে যে উত্তেজনাটি শুধু সামরিক বাহিনী এবং ধর্মনিরপেক্ষ বিপ্লবীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .