বাহরাইন: শিয়া দোকান ভাংচুরে মাস্তানদের পুলিশী সহায়তা

একটি শিয়া মালিকানাধীন কোম্পানী জাওয়াদ বিজনেস গ্রুপ–এর মালিকেরা একটি ভিডিও মুক্তি দিয়েছে যাতে ১০ই এপ্রিল একদল মাস্তানকে তাদের একটি দোকান ভাঙ্গতে, লুটপাট ও তছনছ করতে এবং পুলিশের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখতে, এমনকি সাহায্য করতেও দেখা যাচ্ছে।

পার্ল গোলচক্করে বিক্ষোভকারীদের খাবার সরবরাহের অভিযোগে গত বছর থেকে জাওয়াদ মালিকানাধীন ব্যবসাগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

ব্লগার মার্ক ওয়েন জোন্স ১৩ই এপ্রিল লিখেছেন:

জাওয়াদ দোকান বয়কট করার আহবান জানানো একটি ফেসবুক পৃষ্ঠার প্রোফাইল ছবি

জাওয়াদ দোকান বয়কট করার আহবান জানানো একটি ফেসবুক পৃষ্ঠার প্রোফাইল ছবি: ‘আমাদের দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী জাওয়াদ গ্রুপের বিরুদ্ধে একটি বয়কট প্রচারণা।’

গতকাল আমি একটি পোস্ট লিখেছিলাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় [পুলিশ] কিভাবে সরকারপক্ষীয় বা সরকারবিরোধী বিবেচনা করে বাহরাইনীদের সাথে আচরণ করে। শাসকগোষ্ঠীর সমর্থকদের একটি বড় দল আলবা গোলচক্করে একত্রিত হয়ে দুটি গাড়ির ভাংচুর করে, তারপর কাছাকাছি থাকা একটি সুপারমার্কেট তছনছ করে, এরপর শান্তভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, তারপরে এটা ঘটেছে। আপাতভাবে গত বছর পার্ল গোলচক্করে বিক্ষোভকারীদের খাবার সরবরাহের কারণে শাসকগোষ্ঠীর অনুগতদের ঘৃণিত জাওয়াদ গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার কারণে মার্কেটটি আক্রান্ত। অবশ্যই শাসকগোষ্ঠীর সমর্থকদের সহিংসতার প্রতি পুলিশের চোখ বন্ধ করে রাখার অসংখ্য উদাহরণ আছে। তাছাড়াও পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে কাজ করতে দেখা সম্পর্কে প্রচুর প্রমাণ আছে। অনেক সময় বলা কঠিন মাস্তানরা অসামরিক ব্যক্তি নাকি মুফতি [অসামরিক পোষাক] পরিহিত নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে আজ ২৪ সুপারমার্কেট আক্রমণের এই সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। এতে মাস্তানদের দোকানটি ভেঙ্গে লুট করতে দেখতে পাওয়া ছাড়াও ঘটনা ঘটার সময় পুলিশকে অলসভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে দেখা যাচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, ৫টা ১৫মিনিটে ফ্লুরেসেন্ট বিব পরিহিত একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে একটি জানালা ভাঙ্গতে দেখা যাচ্ছে। ৪টা ৫০মিনিটে অন্য একজন কর্মকর্তাকে নিজে নিজেই এক বোতল পানি খেতে দেখা যাচ্ছে। তৃষ্ণা কর্মটি করার সময় স্পষ্টতই অপরাধ উপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে।

নিচের ছয় মিনিটের ভিডিওটিতে আক্রমণটি দেখাচ্ছে:

জাওয়াদ বিজনেস গ্রুপের একজন বোর্ড সদস্য আমির জাওয়াদ ১০ই এপ্রিলের ঘটনাটিকে একটি পরিকল্পিত ধারাবাহিক আক্রমণের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন; এছাড়াও তিনি জনতাকে কোম্পানির সদর দপ্তরের বাইরে ঘোরাফেরা করা সম্পর্কেও জানিয়েছেন।

আক্রমণের সাথে জড়িত পুলিশ।

আক্রমণের সাথে জড়িত পুলিশ। ছবি পাঠিয়েছেন টুইটার ব্যবহারকারী @লর্ড২০০০৩।

আল ওয়াসাত সংবাদপত্র  [আরবী] অনুসারে জাওয়াদ দোকানগুলো ৫৪ বার আক্রান্ত হয়েছে। জাওয়াদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সমস্ত আক্রমণগুলো নথিবদ্ধ করতে @জাওয়াদ_স্টর্ম নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এখানে কয়েকটি টুইট রয়েছে:

رسمت معانات مجموعة جواد بعد ضربة الدوار الأولى مباشرة، من حيث التكسير والتخريب والتهديد والمقاطعة وغيرها الكثير
@জাওয়াদ_স্টর্ম:  পার্ল গোলচক্করে প্রথম হামলার পর পর থেকে জাওয়াদ দোকানগুলোর উপর আক্রমণ শুরু হয়। দোকানগুলো তছনছ করে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এবং কোম্পানিটিকে হুমকি প্রদান এবং বর্জন ইত্যাদি করা হয়।
تعرضت الشركة لشتى أنواع الإستهداف ومن ضمنها التخريب لبعض المحلات والهجوم عليها بالرصاص الحي
@জাওয়াদ_স্টর্ম: কোম্পানীটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত এবং কয়েকটি দোকানে জীবন্ত গোলা-বারুদ দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে।

#غزوة_جواد (“জাওয়াদ আক্রমণ”) হ্যাশট্যাগে আক্রমণ সম্পর্কে আরও কয়েকটি টুইট পাওয়া যায়।

এই দেওয়াল লিখনটি জাওয়াদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে প্রচারণার প্রমাণ:

সাখির এলাকায় দেওয়াল লিখন: ‘২৪ ঘন্টা’ দোকানগুলো থেকে কেনা-কাটা করা প্রতিটি সুন্নি বিশ্বাসঘাতকের প্রতি লজ্জা। ছবি পাঠিয়েছেন টুইটার ব্যবহারকারী @জাওয়াদ_স্টর্ম।

একজন জাওয়াদ সমর্থক একটি সাইনবোর্ড দেখাচ্ছে:

জাওয়াদ কোম্পানীর প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের একটি দোকানের সামনে একটি সাইনবোর্ড সঙ্গে নিয়ে একজন বাহরাইনী। ছবি পাঠিয়েছেন টুইটার ব্যবহারকারী @সাদাদ_৯মুদ।

অন্যান্যরা শাসকগোষ্ঠীর সাথে পরিহাস করার জন্যে ঘটনাটিকে কৌতুকের সাথে গ্রহণ করেছেন। এই ভিডিওটিতে বাহারণা নাটক নামে পরিচয় দেয়া অন্য একদল তরুণ বাহরাইনী আরেকটি আক্রমণ পরিচালনা করেছে:

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .