সুইডেন: স্টকহোমের অভিবাসী ঘাঁটি রিংকেবাই

সুইডেনের স্টকহোমের রিংকেবাই এলাকা অভিবাসীদের উচ্চ ঘনত্বের জন্যে বিখ্যাত। অনুসন্ধিৎসু বহিরাগতরা তাদের পরিদর্শন নথিবদ্ধ করেছেন।

ইয়েমেনি সাংবাদিক এবং ব্লগার আফরা নাসের স্টকহোমে বসবাস করেন। তিনি একটি ৬ই এপ্রিল, ২০১২ তারিখে একটি ব্লগ পোস্টে প্রথম রিংকেবাই পরিদর্শন সম্পর্কে লিখেছেন।

আফরাহ বলেন:

আমি সবসময়ই স্টকহোমের লোকজনের কাছে রিংকেবাই নামের একটা এলাকার কথা শুনি। এটা অভিবাসীতে এতটাই পরিপূর্ণ যে আপনি সেখানে কদাচিৎ সুইডিশদের দেখতে পাবেন। আমি সেখানে গিয়ে এই ক্ষুদ্র-অসুইডিশ এলাকা আবিষ্কার করতে চেয়েছি।

রিংকেবাইয়ের একটি রাস্তার ফলক।

রিংকেবাইয়ের একটি রাস্তার ফলক। ছবি, আফরাহ নাসের (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত)

আফরাহ রিংকেবাই মেট্রো ষ্টেশনে উপস্থিত হয়ে একটা পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন যে এটা কেন্দ্রীয় স্টকহোমের বেশিরভাগ মেট্রো স্টেশন যেমন টি-সেন্ট্রালে্নের তুলনায় নোংরা। তিনি উভয় স্টেশনের ছবি তুলনা করেছেন:

ভূগর্ভস্থ মেট্রোতে উপস্থিত হয়ে আমার প্রথম ধারণা হলো, “হায় ঈশ্বর, ভূগর্ভস্থ মেট্রো এতো ভয়ঙ্কর কেন! মেট্রোতে কেন কোন সাজ-সজ্জা নেই!! কিভাবে এটা উদাহরণস্বরূপ কারপালানের মতো হলো (যেখানে সুইডিশরা অনেকটা ফ্যাশন শো’র মতো করে পোশাক পরে/হাঁটে)! শহরের গড় মেট্রো দেয়ালের মতো এখানে কোন বিজ্ঞাপন, দেয়ালে সুন্দর কোন ছবি নেই, কীভাবে এটা হলো।

টি-সেন্ট্রালেন স্টেশন।

টি-সেন্ট্রালেন স্টেশন। আফরাহ নাসেরের পাঠানো ছবি (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত)

রিংকেবাই স্টেশন।

রিংকেবাই স্টেশন। আফরাহ নাসেরের পাঠানো ছবি (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত)

রিংকেবাইয়ের অনেক বাসিন্দাই তাদের কমিউনিটির বাইরে একটি ভাল কাজ খূঁজে পান না কারণ তাদের ন্যূনতম সুইডিশ ভাষা দক্ষতা নেই। ২০০৮ সালে রিংকেবাই পরিদর্শনকারী মার্কিন ব্লগার এবং সাংস্কৃতিক সমাজবিজ্ঞানী ট্রিসিয়া ওয়াংয়ের মতে পরবর্তী ছবির মহিলা স্কুলে ইংরেজি এবং সুইডিশ বলতে পারার মানের কারণে তার সন্তানদের ভাল কাজের সুযোগ না পাবার ভয় পাচ্ছেন।

রুটির দোকানে কার্যে রত হাতিস এরকাল - ফ্লিকারে ট্রিসিয়া ওয়াংয়ের পাঠানো ছবি (সিসি-বাই-এনসি-এসএ ২.০)

রুটির দোকানে কার্যে রত হাতিস এরকাল – ফ্লিকারে ট্রিসিয়া ওয়াংয়ের পাঠানো ছবি (সিসি-বাই-এনসি-এসএ ২.০)

রিংকেবাইতে সব্জি বাজার - ফ্লিকারে ট্রিসিয়া ওয়াংয়ের পাঠানো ছবি (সিসি-বাই-এনসি-এসএ ২.০)

রিংকেবাইতে সব্জি বাজার – ফ্লিকারে ট্রিসিয়া ওয়াংয়ের পাঠানো ছবি (সিসি-বাই-এনসি-এসএ ২.০)

সফর শেষে আফরাহ বলেন:

স্টকহোম পৃথকীকৃত এরকম একটা অনুভূতি নিয়ে আমি রিংকেবাইকে বিদায় জানাই। আমার নিজশহর সান’আও সবসময় পৃথকীকৃত। ধনীরা একপ্রান্তে বসবাস করে আর অন্য প্রান্তে বসবাস করে গরীবেরা। ইয়েমেনীরা বসবাস করে একপাশে এবং অন্যপাশে থাকে অভিবাসীরা। তাই আমি জানি সামাজিক পৃথকীকরণ মানে কী? সান’আতে ব্যাপকভাবে সোমালি অধ্যূষিত সাফিয়া নামের একটি এলাকা আছে। আমরা এটাকে মাকাদিশু (সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু) বলে থাকি। আমি বাজি ধরে বলতে পারি রিংকেবাই হল স্টকহোমের সাফিয়া। এটা আমার জন্যে নতুন না হলেও স্টকহোমের এই দিকটা আবিষ্কার করা আকর্ষণীয় ছিল।

রিংকেবাই’তে লাগানো পোস্টার - আফ্রিকায় টাকা পাঠানোর বিজ্ঞাপন

রিংকেবাই’তে লাগানো পোস্টার – আফ্রিকায় টাকা পাঠানোর বিজ্ঞাপন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .