মালি: যুদ্ধ, স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পরস্পরবিরোধী লক্ষ্য

চলমান গৃহযুদ্ধটির দ্রুত ঘটমান বিভিন্ন বিষয় মালিকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলছে। গত ৬ এপ্রিল, শুক্রবার আজাওয়াদ জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের তুয়ারেগ বিদ্রোহীরা (এমএনএলএ) “আজাওয়াদের স্বাধীনতা” [ফরাসী] ঘোষণা করে [ফরাসী]। পুরো সাহেল অঞ্চল জুড়ে হুমকি সৃষ্টি করা এই সঙ্কটটিতে পরস্পরবিরোধী লক্ষ্যবিশিষ্ট কয়েকটি নিয়ামক প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করছে।

ক্যামের.বিই’র একটি পোস্টে ভ্যালেরে ম্বেগ  এই যুদ্ধের পিছনের সমস্যাগুলো  উপস্থাপন করেন  [ফরাসী]:

Le Mali est un vaste pays de 1.241.238 km² et une population galopante de 15.000.000 d’habitants selon le recensement de 2009, la région de l’AZAWAD couvre les 2/3 de la superficie pour une population ne représentant que  10 % des habitants avec d’énormes richesses naturelles qui sont actuellement peu exploitées en raison de l’absence de financement en infrastructures de transports qui renchérissent le coût des exploitations. Le Mali est également le troisième producteur africain d’or après l’Afrique du Sud et le Ghana, de quoi aiguiser les appétits des multinationales qui verraient bien dans l’AZAWAD un nouveau Sud Soudan avec peu de populations pour beaucoup de richesses naturelles ….

মালি, ২০০৯ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এক কোটি ৫০লক্ষ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি ১২ লক্ষ ৪১ হাজার ২৩৮ বর্গ কিলোমিটারের সুবিশাল একটি দেশ। আজাওয়াদ অঞ্চলটি দুই তৃতীয়াংশ এলাকা জুড়ে জনসংখ্যার মাত্র ১০% মানুষ এবং পরিবহণ অবকাঠামোতে অর্থায়নের অভাবে বাড়তি অপারেশন খরচের কারণে আহরিত না হওয়া প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ঘানার পরে মালি আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হওয়ায় অনেক বহুজাতিক আজাওয়াদকে ছোট একটি জনসংখ্যা এবং বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপুর্ণ একটি নতুন দক্ষিণ সুদান হিসেবে দেখছে যা তাদের ক্ষুধার উদ্রেক করেছে…

এমএনএলএ’র দাবি করা এলাকা, @টুইটআফ্রিকা’র টুইটপিক

স্লেট আফ্রিকের সামরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সেবাইন সেসু লিখেছেন [ফরাসী]:

 “La donne est complexe dans le désert: les rebelles touaregs du MLNA disent ne pas poursuivre les mêmes objectifs qu’Aqmi. Ils ne se battent pas pour une République islamique de l’Azawad, mais pour la création d’un État laïc.

“মরুভূমিতে সমস্যাটি জটিল: এমএনএলএ’র তুয়ারেগ বিদ্রোহীরা বলে তাদের উদ্দেশ্য একিউআইএম-এর মতো নয়। তারা যুদ্ধ করছে একটি ইসলামিক আজাওয়াদ প্রজাতন্ত্রের জন্যে নয় বরং একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নির্মাণের জন্যে।

মালিজেট.কম-এ নুহুম ডিকো পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং নিয়ামকগুলো প্রবর্তন করেন [ফরাসী] মাঠ পর্যায়ে:

Le mouvement islamiste Ansar dine, (l'Armée de la religion), est l'un des autres groupes armés de la région  dirigé par Iyad Ag Ghaly, principal artisan de la prise de Kidal, dont il est originaire. Celui qui fut le principal chef de la rébellion touareg des années 1990, aurait subi l'influence des islamistes pakistanais. Ansar dine serait composé de jeunes radicalisés au contact d'Al-Qaïda au Maghreb islamique (Aqmi).

Un nouveau groupe islamiste a fait irruption en décembre 2011, le Mouvement pour l'unicité et le jihad en Afrique de l'Ouest (Mujao). Se présentant comme une dissidence d'Aqmi, il serait dirigé par des activistes maliens et mauritaniens. Il avait revendiqué l'enlèvement des trois humanitaires européens dans un camp de réfugiés sahraouis. Ce groupe revendique sa participation à la prise de Gao, le samedi dernier.

ইসলামী আন্দোলন আনসার দাইন  (ধর্মীয় বাহিনী) নিজ জেলা কিদাল দখলের রূপকার আয়াদ  আগ ঘালি’র নেতৃত্বাধীন  এই অঞ্চলটির অন্য আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। ১৯৯০এর দশকে  তুয়ারেগ বিদ্রোহের প্রধান নেতা  এই লোকটি হয়তো পাকিস্তানী ইসলামপন্থীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকবেন। আনসার দাইন হয়তো ইসলামী মাঘরেব আল কায়েদার  (একিউআইএম) সংষ্পর্শে আসা মৌলবাদী তরুণ-তরুণীদের নিয়ে গঠিত।

মরুভূমির নীল পুরুষ আয়শা বিবিয়ানা বেলবোয়া দ্বারা ফ্লিকার উপর (লাইসেন্স সিসি-এনসি-বাই)

আনসার দাইনের নেতারা তাদের সত্যকার চেহারা দেখাতে একটুও সময় নষ্ট করেনি। আসলেই মালিয়াক্তু.নেট রিপোর্ট করেছে [ফরাসী] যে:

Le leader d’Ansar Dine, Iyad Ag Ghaly, ex-figure des rébellions touareg des années 1990, a rencontré lundi soir les imams de Tombouctou, une ville d’environ 30.000 habitants où il compte instaurer la loi islamique, selon un fonctionnaire de l’agglomération. A la faveur de l’avancée foudroyante des rebelles touareg dans le nord du Mali, le groupe Ansar Dine et des éléments d’Al-Qaïda au Maghreb (Aqmi) ont pris lundi le contrôle de Tombouctou, aux portes du Sahara, à environ 800 km au nord-est de la capitale Bamako. Tombouctou, grand centre intellectuel de l’islam et ancienne cité marchande prospère des caravanes, surnommée “la perle du désert”, est inscrite sur la liste du patrimoine mondial de l’Unesco.

সোমবার রাতে  আনসার দাইনের নেতা, ১৯৯০-এর দশকের তুয়ারেগ বিদ্রোহের সাবেক ব্যক্তিত্ব, আয়াদ  আগ ঘালি ৩০,০০০ অধিবাসীর শহর তিম্বাক্তুর ইমামদের সাথে দেখা করেছেন যেখানে তিনি ইসলামী আইন প্রবর্তনের পরিকল্পনা করছেন – শহরটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সোমবারে আনসার দাইন গ্রুপ এবং পশ্চিমী আল কায়েদা – উত্তর মালির এসব তুয়ারেগ বিদ্রোহীরা  বিদ্যুৎগতি অভিযানে রাজধানী বামাকো থেকে ৮০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে সাহারার প্রবেশদ্বার তিম্বাক্তু দখল করে নেয়। “মরুভূমির মুক্তা” নামে পরিচিত – বণিকদের কাফেলার মাধ্যমে গড়ে উঠা  একটি নেতৃস্থানীয় ইসলামী বুদ্ধিবৃত্তির কেন্দ্র  এবং প্রাচীন বাণিজ্যিক শহর –  তিম্বাক্তু একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থান।

“মালি: তুয়ারেগ বিদ্রোহী এবং ইসলামপন্থী আনসার দাইন, প্রত্যেকেই তিম্বাক্তু দখলের দাবি করে,” শিরোনামে প্রেসআফ্রিক.কম-এর একটি পোস্টে ইব্রাহিমা লিসা ফায়ে লিখেছেন [ফরাসী]:

Le chef du mouvement Ansar Dine, Iyad Ag Ghali, semble en effet contrôler la ville après avoir fait reculer les rebelles touaregs du MNLA qui étaient entrés les premiers dans Tombouctou dimanche. Alors contrairement au MNLA qui ne s'intéresse qu'au nord du Mali, dont il réclame l'indépendance, Iyad Ag Ghali, lui, veut imposer la charia, la loi islamique, à tout le pays et à Tombouctou on signale même la présence de dirigeants d'Aqmi.

প্রকৃতপক্ষেই মনে হচ্ছে যে প্রথমে নিয়ন্ত্রণ নেয়া এমএনএলএ তুয়ারেগ বিদ্রোহীরা টিম্বাক্তু থেকে রবিবারে সরে যাওয়ার ফলে আনসার দাইন আন্দোলনের নেতা আয়াদ  আগ ঘালি নিয়ন্ত্রণভার নিতে যাচ্ছে। সুতরাং যেখানে এমএনএলএ শুধুমাত্র উত্তর মালির প্রতি আগ্রহী এবং যেখানে তারা  স্বাধীনতার আহবান করেছে, সেখানে লায়াদ  আগ ঘালি নিজেই সারা দেশে এবং একিউআইএম নেতাদের উপস্থিতিতে তিম্বাক্তুতে ইসলামী শরিয়া আইন প্রয়োগ করতে চায়।

মানবাধিকার নিয়ে মালির জনগণের ভীষণ উদ্বেগ রয়েছে। বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন নগরগুলিতে ধর্ষণ ও লুটের  অভিযোগ রয়েছে। আফ্রিকইনফোস.কম-এর একটি পোস্ট অনুসারে, উত্তর মালির অধিবাসী সম্মিলনী’র (কোরেন)  প্রেসিডেন্ট মালিক আলহুসেইনি বামাকোতে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ সাধারণ সভাতে  বলেন [ফরাসী] যে:

cette rencontre se tient à un “moment douloureux de notre histoire, avec notre pays occupé, notre terroir natal aux mains des envahisseurs et des terroristes”.

Il a rappelé que depuis dimanche dernier, le Mali est un pays coupé en deux, de fait que les assaillants et les terroristes ont tout dévasté dans les localités qu'ils occupent : banques cassées, administration pillée, centres de santé vandalisés, entre autres.

এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন “আমাদের দেশ দখল হয়ে গিয়েছে, আমাদের নিজেদের জমি হানাদার এবং সন্ত্রাসীদের হাতে, আমাদের ইতিহাসের বেদনাদায়ক মুহূর্তে।” তিনি স্মরণ করেন গত রবিবার থেকে মালি দুই ভাগে বিভক্ত একটি দেশে পরিণত হয়েছে কারণ আক্রমণকারীরা এবং সন্ত্রাসীরা কমিউনিটিতে যা কিছু পেয়েছে তার সব কিছু ধ্বংস করেছে: আরো অন্যান্য কিছুর পাশাপাশি ব্যাংক ভেঙ্গেছে, প্রশাসনিক ভবন লুট করেছে, স্বাস্থ্য সুবিধা তছনছ করেছে।

আজাওয়াদ জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন (এমএনএলএ)  ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে এজন্যে তারা স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্বে কয়েক দিনের জন্যে যুদ্ধবিগ্রহে ক্ষান্ত দিয়েছে।

তবে লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উদ্দেশ্যের পার্থক্যের প্রমাণ রয়েছে: এটলাসইনফো.এফআর (বিজিত শহরগুলোর মধ্যে গাওয়ের আলজেরীয় দূতাবাস একটি) অনুসারে এমএনএলএ বিবৃতিটি দিয়েছে যে আরেকটি আন্দোলনের ছয়জন কর্মকর্তাকে একটি অজানা জায়গায় অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে [ফরাসী]:

L’attaque s’est produite en fin de matinée. Un groupe armé a attaqué le consulat. Il a remplacé le drapeau algérien par un drapeau noir avec des écritures arabes, emblématique des mouvements salafistes.

আক্রমণটি ঘটেছে সকালের শেষের দিকে। একটি সশস্ত্র দল কনসুলেট আক্রমণ করে আলজেরিয়ার পতাকাটি একটি আরবি লেখা সালাফি আন্দোলনের প্রতীক সম্বলিত কালো পতাকা দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দেয়।

মুক্ত শহরগুলিতে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সমস্ত অপহরণ এবং বর্বরতা এবং আক্রমণের সব ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে যোগাযোগ, তথ্য এবং মিডিয়া সংযোগ কর্মকর্তা বাকায়ে আগ হামেদ আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে [ফরাসী] নিচের বিবৃতিটি দেয়া হয়:

Le Mouvement National de Libération de l’Azawad se désolidarise de toutes les organisations mafieuses s’étant introduite ces jours-ci dans l’Azawad, contribuant à instaurer un climat de chaos et de désordre, après la libération du territoire.

আজাওয়াদ জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন স্বাধীনতার পরের এই দিনগুলোতে আজাওয়াদে অরাজকতা এবং বিশৃঙ্খলার আবহ সৃষ্টিতে অবদান রাখা সব মাফিয়া সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট আমাদু তুমানি তুরে’কে উৎখাত এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের পর মালির উপর পশ্চিম আফ্রিকা রাস্ট্র সম্প্রদায় (ইকোয়াস), আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ অবরোধ আরোপ করলে এই সমস্যাটি আরো জটিল হয়ে যায়।

মালির বাইরের প্রতিবেশী সব রাস্ট্রগুলোর তুয়ারেগ জনগণকে ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। তুয়ারেগ এবং অন্যান্য কালো সংখ্যালঘু যাদের অনেকেই যাযাবর এমন জনগোষ্ঠী অধ্যূষিত উত্তরের সাহেলীয় এলাকা, এবং স্থিতিশীলভাবে বসবাসকারী জনঅধ্যূষিত অপেক্ষাকৃত অতিথিপরায়ণ এলাকা – সব জায়গারই জনতাত্ত্বিক কাঠামো একই ধরনের। সবগুলো দেশেই দ্বিতীয় এলাকাটিতেই অধিকাংশ বিনিয়োগ হয়েছে এবং প্রধানতঃ কালোমানুষ অধ্যুষিত। ফলে প্রথম এলাকার অধিবাসীরা সম্পদের অসমবন্টন হয়েছে মনে করে তাদের উপর অসন্তুষ্ট।

এই জটিল অবস্থাটি অসামরিক জনগণের জন্যে একটি হুমকিস্বরূপ এবং একে আরো জটিল করেছে বোকো হারাম-এর [ফরাসী] ক্ষতি করার সম্ভাবনা, লিবিয়ার অস্ত্রাগার [ফরাসী] থেকে অস্ত্র প্রবাহ, দীর্ঘস্থায়ী পানির অভাব এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .