লেবানন: পাম সানডে এবং ইস্টার উদযাপন

লেবাননে ৮ এপ্রিল,২০১২ তারিখে দুইটি খ্রিস্টান ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়। কিছু চার্চ জর্জিয়ান বর্ষপঞ্জী আনুযায়ী ইস্টার সানডে পালন করে আর অন্যান্য চার্চ জুলিয়ান বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী পাম সানডে পালন করে। এর মানে হল কিছু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পরবর্তী রবিবার অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল ইস্টার পালন করবে। ২০১৩ সালে দুটো ইস্টারের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি হবে একটি হবে মার্চের ৩১ তারিখ আর অপরটি হবে ৫ মে তারিখে।

সিএস্টেক নামের একজন ডাচ মহিলা এক লেবাননি নাগরিককে বিয়ে করেছেন। তার পরিবারের ইস্টার উদযাপন সম্বন্ধে তিনি বর্ণনা করেন এভাবে:

আমার স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রীর চাচাত ভাইয়েরা আসেন। আমার স্বামীর ভাইয়ের শ্বশুরের ভাইয়ের স্ত্রীগণও যোগাযোগ করেন। তাঁরা কি আমার সঙ্গেও থাকতে আগ্রহী? তাহলে শুনুন পারিবারিক মিলন মেলাটি কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আমার স্বামীর ভাইয়ের শ্বশুরের ভাইদের স্ত্রীগণের পিতামাতা পর্যন্ত এ তালিকায় যোগ করা যায়। লেবাননে পারিবারিক সম্পর্কের দীর্ঘ তালিকায় এঁরা অন্তর্ভুক্ত। হল্যান্ডে আপনি এ সকল ব্যক্তির সঙ্গে এমনকি দেখা করারও সুযোগ পাবেন না। বিয়ে কিংবা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মত অনুষ্ঠানে এঁদের যোগদানের প্রশ্নই উঠে না। লেবাননে আমি প্রত্যেক বছর তাদের সঙ্গে মিলিত হই। আমাদের দলের সদস্যসংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। কারণ, ছেলেমেয়েদের বিয়ে হচ্ছে,সংসারে আসছে নতুন মুখ আর বৃদ্ধি পাচ্ছে দলের কলেবর। আমাদের দলে চার মাসের শিশু থেকে নব্বই বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত রয়েছেন, এটা অনেকটা ইতালীয় পরিবারের মত। তবে আমি মনে করি ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চলের অধিকাংশ জনগণ একই চরিত্রের অধিকারী; যেমন, বৃহৎ পরিবার, অসংখ্য সামাজিক ও পারিবারিক আচার- অনুষ্ঠান পালন। আপনি যদি অধিকাংশ লেবানীয় পরিবারকে বিবেচনায় আনেন তাহলে দেখতে পাবেন এ সকল পরিবারের প্রায় অর্ধেক সদস্য বিদেশে বসবাস করেন ( কেবল আমার স্বামীর পরিবারের কথাই যদি ধরেন, তিনি একটি অত্যন্ত ছোট পরিবারের সদস্য) – এই পরিবারের তিনজন চাচা, একজন চাচী এবং এগার জন চাচাত ভাই বিদেশে থাকেন। এবার আপনি কল্পনা করুন এঁরা সবাই দেশে থাকলে কী এক বিশাল জমকালো অনুষ্ঠান আমরা উদযাপন করতে পারতাম।

সিএস্টেক-এর, ইস্টারের পারিবারিক ছবি। ছবিটি সিএস্টেক-ইন বেইরুট.ব্লগস্পট.কম থেকে নেওয়ায় হয়েছে।

তারেক জোসেফ চেমেলেই লিখেছে যে এগ হান্ট (ডিমের উপর রঙ করা) লেবাননের ঐতিহ্য নয়:

লেবাননে আমরা এগ হান্ট করি না, তার বদলে আমরা “এগ ম্যাচ” নামক খেলা খেলি। এতে একে অন্যের সিদ্ধ ডিম ধাক্কা লাগার জন্য পরস্পরে ডিমের দিকে গড়িয়ে দেই, তাতে যে শেষ পর্যন্ত সে ডিমটি টিকে থাকে তার মালিক বিজয়ী… এবং কোলস্টেরলের মাত্রা ভুলে যান- কারণ ঘটনাক্রমে ঠিক আপনাকে সেগুলোকে খেতে হবে?

ইস্টারের জন্য রঙ করা ডিম। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @তারেকফেঘালির

এদিকে, অর্থোডক্স খ্রিস্টান-রা পাম সানডে উদযাপন করে।

বৈরুতের সেন্ট জর্জ অর্থোডক্স ক্যাথেড্রাল (চার্চ)-এর সামনে বিশপ আডি, পাম সানডে উদযাপন করছে। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @লেবাননইগাইডের।

বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে সেন্ট জর্জ অর্থোডক্স ক্যাথেড্রাল-এ,পাম সানডে উদযাপন। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @এন্টোনীয়_হাদ্দাদ-এর।

বৈরুতে, আশরাফিয়ে নামক এলাকায় পাম সানডে উদযাপন। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @রিমামাকাতাবির।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .