মার্কিন যুক্তরাস্ট্র: আমি ট্রেভন মার্টিন

গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের স্যানফোর্ডের একজন “পাড়ার প্রহরা স্বেচ্ছাসেবক” জর্জ জিমারম্যান ১৭-বছর বয়েসী ট্রেভন মার্টিনকে একটি দোকান থেকে কেবলই ক্যান্ডি কিনে নিয়ে বের হওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করেন।

গত শুক্রবারে প্রকাশিত ৯১১ (আপৎকালীন ফোনবার্তা) টেলিফোন আলাপের রেকর্ডিং অনুসারে জর্জ জিমারম্যান পুলিশকে একটি দোকান থেকে বের হয়ে আসা একজন “সন্দেহজনক ব্যক্তি”, ১৭-বছর বয়েসী কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ট্রেভন মার্টিন সম্পর্কে জানান। ৯১১-অপারেটর বলেন জিমারম্যানকে যুবকটিকে কিছু না করতেবলা হয়।

ঘটনায় আমেরিকান নাগরিক এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে এবং হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হওয়া স্যানফোর্ড শহরে এখনো এটা সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে। মামলাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ইউনিট এখনো জর্জ জিমারম্যানের – যার কর্মটিকে অনেকেই বর্ণবাদী (জাতিগত) অপরাধ বিবেচনা করছে তার – বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনে সমর্থ হয়নি।

আমি ট্রেভন মার্টিন

‘আমি ট্রেভন মার্টিন’- ট্রেভন মার্টিন মিছিলে শিশুরা, গিলবার্ট কিং এলিসার পাঠানো ছবি, ফ্লিকার লাইসেন্স-সিসি-বাই

গ্যারেথ ব্রায়ান্ট তার ব্লগে মন্তব্য করেছেন:

কেন কালোরা সব সময় বিপন্ন-প্রজাতির তালিকা্য় থাকে?
এটা আমার ভবিতব্যের মতো, যারা এই মাত্রিকতায় চিরটা কাল শিকারে পরিণত।

জেআরসিএম.টি লিখেছেন:

নিখুঁত জোড়: “একটি আগ্নেয়াস্ত্র আর একজন কৃষ্ণাঙ্গ” – সেরা বর্ণবাদ!!! এবং বিবাদীকে “আত্মরক্ষার্থে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নাগরিক অধিকার”-এর যুক্তি দিতে শোনা যাচ্ছে।
সামাজিক নেটওয়ার্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এই সূত্র দিয়ে: সাদা মানুষ; স্প্যানিশ মানুষ; কালো মানুষ

এক্ষেত্রে বর্ণবাদী ভাবার্থটি সুস্পষ্ট এবং নিশ্চিত। ট্রেভন মার্টিন হত্যাকাণ্ডের চারপাশের “বাস্তবতা ও পরিস্থিতি” খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং এফবিআই একটি তদন্ত চালু করলেও ইন্টারনেট সম্প্রদায় ন্যায় বিচার লাভের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উপর চাপ অব্যহত রেখেছে। বেশি প্রাসঙ্গিক মন্তব্যের মধ্যে রয়েছে:

ভালবাসার স্মৃতিতে। ট্রেভন মার্টিন ১৯৯৫_২০১২

‘ভালবাসার স্মৃতিতে। ট্রেভন মার্টিন ১৯৯৫_২০১২’ ফ্লিকারে গ্রীণডুলা, লাইসেন্স-সিসি-লাইসেন্স-বাই-এনডি

দি হাফিংটন পোস্টের মন্তব্য অংশে (যেখানে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এই নিবন্ধটি হাজার হাজার মন্তব্য পেয়েছে) টেরিক্রুজ লিখেছেন:

আপনি ৯১১-কলগুলোতে পেছন থেকে ছেলেটির বাঁচার জন্যে চিৎকার শুনতে পাবেন। আমি কেঁদেছি কারণ আমি যা করতে পারি এই অবস্থায় আমি আমার ছেলেকে কল্পনা করে এবং এটা জেনে যে সে মারা যাচ্ছে অথচ তাকে সাহায্য করার কেউ নেই। ঈশ্বর তার আত্মার এবং তার পরিবারের উপর শান্তি বর্ষণ করুন।

ক্লডিয়াল যোগ করেছেন:

ফ্লোরিডার আইনটি মনে হচ্ছে স্বাক্ষী বিহীন করে দিয়ে হত্যা করতে ইচ্ছুক কাউকে প্রশ্রয় দেয়। ফ্লোরিডায় বাস করলে আমি খুব ভয় পেতাম। এই দেশে আগ্নেয়াস্ত্র আইনটি একেবারে উল্টোমুখী।

মিস্টারস্কর্পিও একটি বিষয় তৈরী করেছেন ডেমোক্রেসিআন্ডারগ্রাউন্ড.কম [ইংরেজী]-এ এবং ঠিক তখন থেকেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সাইটটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাদা মানুষের করা অত্যাচারে তাদের প্রতিক্রিয়া, (এগুলোর) ব্যক্তিগত স্বাক্ষ্য প্রমাণ এবং বিভিন্ন স্মৃতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন।

চেঞ্জ.অর্গ-এ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্যে যুক্তরাস্ট্রের এটর্নি জেনারেল এবং অন্যান্যদের প্রতি একটি পিটিশনে [ইংরেজী] দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে।

মামলাটি সম্পর্কে টুইটারে মন্তব্যের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ফ্লোরিডায় বিভিন্ন মিছিলের ছবিগুলো পাওয়া যাচ্ছে হ্যাশট্যাগ #ট্রেভন অনুসরণ করে।

@ব্ল্যাকভয়েসেস:

সিটিহলে শত শত বাসিন্দা এবং অ্যাক্টিভিস্ট ট্রেভন মার্টিন ঘটনায় [জর্জ জিমারম্যান]-কে গ্রেপ্তারের আহবান জানাচ্ছে: #ট্রেভন

@যসানেবুয়েনো জাতিগত সমস্যাটি উল্লেখ করেছেন:

@মুথানোজ ট্রেভন যদি সাদা ছেলে এবং জিমারম্যান যদি কালোমানুষ হতো, আমার সন্দেহ তাহলে এতো কিছু বলা হত কিনা? #সত্যকাহিনী

@ওমরশাকিরজো বিশ্ব সম্প্রদায়কে ট্রেভনের স্মৃতিতে এক হতে বলেছেন:

যারা কনিকে গ্রেপ্তার করতে চেয়েছিলেন, দয়া করে সবাই ট্রেভন মামলায় আপনাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করুন। সত্যিই আমার মনে হচ্ছে না আমি খুব বেশি কিছু চাচ্ছি…

@কারেন হান্টার টুইট করেছেন:

কেউ আমাকে দয়া করে ব্যাখ্যা করতে পারেন  এই “স্ট্যান্ড ইওর গ্রাউন্ড” আইনটি কেন আছে?

@টুরে যোগ করেছেন:

“স্ট্যান্ড ইওর গ্রাউন্ড” আইনটির মানে এই নয় যে “আপনি একজন তরুণ কৃষ্ণাঙ্গ যুবক কর্তৃক হুমকি অনুভব করলে আপনার [অধিকার আছে] শটগান দিয়ে সাড়া দেয়ার”।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ চার্লস এম. ব্লো উপসংহার টেনেছেন:

ট্রেভনের হত্যাকাণ্ডের তদন্তগুলোর ফলাফল পেতে আমারা অপেক্ষা করতে বাধ্য হলেও এটা পরিষ্কার যে এটা একটা বিয়োগান্তক কাহিনী। ঘটনাটিতে কোনো ধরনের অন্যায় স্বীকৃত না হলে সেটা হবে আরো বড় বিয়োগান্তক কাহিনী।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .