বাহরাইনঃ উদযাপন এবং সমালোচনার মধ্যে দিয়ে “ মানামা, আরব সংস্কৃতির রাজধানী ২০১২” শুরু

২ ফ্রেব্রুয়ারি তারিখে, বাহরাইনের রাজধানী মানামায় আরব সংস্কৃতির রাজধানী ২০১২” ( ক্যাপিটেল অফ আরব কালচার-২০১২ (@মানামাকালচার১২) –এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হল। কিন্তু যখন রাজধানীর একপ্রান্তে উদযাপন শুরু হয়, তখন অন্যপ্রান্তে বিরোধী দলের বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করা হচ্ছিল

ইউনেস্কোর। সংস্কৃতিক রাজধানী নামক কর্মসূচির আওতায় আরব লীগ, আরব সংস্কৃতির রাজধানী নামক এক সংস্কৃতিক কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ বছর মানামাকে আয়োজকের এই পুরষ্কার প্রদানের জন্য অনেকে এর সমালোচনা করেছে, এবং তারা এই উদযাপন বয়কট করার আহ্বান জানান, কারণ দেশটির সরকার, গণতন্ত্র–পন্থী বিক্ষোভকারীদের প্রতি “দমনমূলক আচরণের” অনুশীলন করছে, যাদের মধ্যে অনেক লেখক এবং শিল্পী রয়েছে (এদের অনেককে আবার জোর করে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে) । অন্য বাহরাইনী নাগরিকরা বছরের শুরুতে এক সংস্কৃতিক কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং তারা একে বিশ্বের সামনে বাহরাইনের এক ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে দেখছে।

মানামার টেলিভিশনে-এ ‘আরব সংস্কৃতির রাজধানি-২০১২’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখরা সাথে সাথে টুইটার ব্যবহারকারী রাশা ইউসিফ নাম ভদ্রমহিলা (@আরসহআরসোহ) ঘোষণা প্রদান করেন:

@আরসহআরসোহ: বাহরাইনী হবার জন্য গর্বিত!
# মানামাক্যাপিটেলঅফআরবকালাচার২০১২

টুইটার ব্যবহারকারী ফাওয়াজ আল মুহানদিস (@ফাওয়াজ) সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের কাজে মুগ্ধ:

@ফাওয়াজ: আমি মনে করি @এমওসি_বিএইচ (বাহরাইনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়) বাহরাইনের এক সুন্দর চিত্র তুলে ধরার জন্য সঠিক নির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছে!# মানামাক্যাপিটেলঅফআরবকালাচার২০১২-কে ধন্যবাদ।

১৪ ফেব্রুয়ারি গণ জাগরণ-এর সূত্রপাতের বর্ষপূর্তিকে উল্লেখ করে এবং তার প্রেক্ষাপটে সম্ভব্য উত্তেজনা সৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে, টুইটার ব্যবহারকারী @ জুলেসএএলকে বলছে:

@জুলেসআলক:# মানামাক্যাপিটেলঅফআরবকালাচার২০১২, আজকের এই সুন্দর উদযাপন অনুষ্ঠান দেখে আন্দনিত। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসটাকে উদযাপন করব। সুন্দর এক আরাম্ভ #বাহরাইন

খালিদ আল রাউয়ি ( @কার্লোয়োই) , একজন লেখক এবং নাট্য পরিচালক, যিনি বাহরাইনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন, তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে এক সঙ্গীতানুষ্ঠান ছিল, যা মূলত বাহরাইনের ঐতিহ্যবাহী মুক্তা শিল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। তিনি এই ছবিটি পোস্ট করেছেন:

মানামায় আরব সংস্কৃতির রাজধানী ২০১২-এর উদ্বোধনী দিনে এক সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রদর্শীত হয়েছে। যাকে বলা হয় “মুক্তার পথ”, ছবি পোস্ট করেছে টুইটার ব্যবহারকারী @কার্লোয়োই

বাহরাইনের বেশীরভাগ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সমালোচনা করা হয় এই বলে যে, এতে অংশ নেওয়া অনেক শিল্পী বাহরাইনের নয়। যারা আরব সংস্কৃতির রাজধানী নামের অনুষ্ঠানটি দেখেছেন, তাদের সকলেই এতটা মুগ্ধ নয়, তারা অনুভব করেছেন যে এই অনুষ্ঠানটি বাহরাইনের সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে না। টুইটার ব্যবহারকারী @_ এম আল খালিফা লিখেছে :

@_ এম কেআলখালিফা :মিশরীয় বাহরাইনী নাচ? #মানামাক্যাপিটেলঅফআরবকালাচার২০১২, নাম অনুষ্ঠানটি ব্যর্থ, #বাহরাইন

@_এমকেআলখালিফা :# বাহরাইনের নিজস্ব এবং সুন্দর এক সংস্কৃতি রয়েছে, তারপরেও #মানামাক্যাপিটেলঅফআরবকালাচার২০১২- নামক অনুষ্ঠানে তা প্রতিফলিত হয়নি!

বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ আল খালিফা (@ খালিদআলখালিফা) এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং প্রদর্শনের ছবি টুইট করেছেন, তিনি লিখেছেন [আরবী ভাষায়]:

@khalidalkhalifa: طريق اللؤلؤ ، ينطلق بالدانة .. معشوقة الغواص
“পাথ উইথ দা পার্ল” বা মুক্তার পথ নামের অনুষ্ঠান ডানার সাথে শুরু হয়েছে, ডানা হচ্ছে ডুবুরীদের প্রিয় মুক্তা!

আরব সংস্কৃতির রাজধানী ২০১২, মানামায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যে মানামাকে ‘মুক্তার পথ’ বলে অভিহিত হচ্ছে, মানামায় উদ্বোধনী দিনের সঙ্গীতানুষ্ঠান, ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @খালিদআলখালিফা

সাংবাদিক হুসাইন মানসুর (@হু৪মানসুর) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইটের জবাবে, ধ্বংস করে ফেলা পার্ল রাউন্ড এ্যাবাউট-এর কথা উল্লেখ করে এর প্রতিক্রিয়া প্রদান করেন, যা কিনা ছিল গণতন্ত্রী-পন্থীদের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তিনি বলছেন [আরবী ভাষায়]:

@Hu4mansoor: ليس طريقا للؤلؤ ذاك الذي لا يمر على دوار اللؤلؤة. #bahrain #14feb
এটা মুক্তার পথ নয়, যদি না তা পার্ল রাউন্ডএ্যবাউটে গিয়ে হাজির হয়।

সাংবাদিক রীমা খালিফা (@ রীমা _খালিফা) মন্তব্য করেছেন [আরবি ভাষায়] :

@Reem_Khalifa:في عاصمة الثقافة العربية لا مكان لحرية الرأي والاستقلالية في القضاء وشفافية المعلومة بل قمع ثقافة الآخر واحتقار الإنسان الحر
আরব সংস্কৃতির রাজধানী নামক অনুষ্ঠানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং তথ্যের স্বচ্ছতার কোন জায়গা নেই, কেবল অন্য সংস্কৃতিকে দমন এবং মুক্ত চিন্তার মানুষদের ঘৃণা করার স্থান রয়েছে।

যখন জাতীয় যাদুঘরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, সে সময় মানামার কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভকারীরা জড় হচ্ছিল সাপ্তাহিক এক শোভাযাত্রার জন্য, যাকে মানামা মার্চ নামে অভিহিত করা হয়, যা কিনা দাঙ্গা পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে ফেলে ( বাহরাইনের পুলিশ প্রচণ্ড মাত্রায় কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো যার তীব্র নিন্দা করেছে )

বিরোধী দলের শোভাযাত্রা ছত্রভঙ্গ করার সময় কেন্দ্রীয় মানামায় কাঁদুনে গ্যাসের মেঘ। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @সরো-এর

টুইটার ব্যবহারকারী @ইন্টিলিজেন্সি১ লিখেছে [আরবী ভাষায়]:

@Intelligensia1:المنامة الآن تجمع النقيضين تماماً.. مثقفي السلطة في المتحف الوطني.. وشعب مثقف في أزقتها مخنوق بثقافة السلطة #Bahrain #14feb #Alwefaq
মানামায়, এখন ঠিক দুটি সম্পূর্ণ বৈপরীত্য দেখা যাচ্ছে… শাসকদের বুদ্ধিজীবীরা জাতীয় যাদুঘরে অনুষ্ঠান করেছে আর শাসকদের (দমন মূলক) সংস্কৃতিতে দেশের শিক্ষিত নাগরিকদের দমবন্ধ হয়ে আসছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .