সিরিয়াঃ দামেস্ক-এর “আত্মঘাতী বোমা হামলা” এবং রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের সাজানো সংবাদ

এই প্রবন্ধটি সিরিয়া বিক্ষোভ ২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

যখন শুক্রবার ৬ জানুয়ারি তারিখে সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাসার-আল আসাদ-এর শাসনের অবসান ঘটানোর জন্য সারা দেশজুড়ে এক ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়, সেই সময় সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন, দামেস্কের মায়দান নামক এলাকার কাছে এক আত্মঘাতী বোমা হামলার সংবাদ প্রদান করে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের একটি সংবাদের উদ্ধৃতি প্রদান করেছে, যাতে বলা হয়েছে, “এই মাত্র পাওয়া সংবাদ নির্দেশ করছে যে মায়দান এর কাছে একটি ট্রাফিক লাইটে একজন আত্মঘাতি বোমা হামলাকারী সন্ত্রাসী নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছে”। কিন্তু অনলাইনে প্রচারিত কিছু ছবিতে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে, এটা ছিল একটা সাজানো ঘটনা।

প্রথম ভিডিও, যে স্থানে অপরাধ সংঘঠিত হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল, সেই ঘটনাস্থল প্রদর্শন করছে, উক্ত স্থানে হঠাৎ মাইক্রোফোন হাতে এক ব্যক্তিকে সেখানে ক্যামেরা সামনে উপস্থিত হতে দেখা যায়, যে মাটিতে ছড়িয়ে থাকা একরাশ রক্তের পাশে নিজের প্লাস্টিক ব্যাগ রাখে। সিরিয়ান টিভির এ কোন ধরনের সাংবাদিক যে অপরাধ সংঘঠিত হবার স্থলে ব্যাগ নিয়ে যায়? যখন উক্ত মহিলা সাংবাদিককে ক্যামেরা সামনে ধরা হয়, তখন যে ভাবে সে নির্বাক হয়ে পড়ে তা ছিল এক অমূল্য দৃশ্য।

পরবর্তী ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে, হামলার দৃশ্য। এই ছবির নিচে লেখা রয়েছে, “এই রকম রক্তাক্ত কুৎসিত দৃশ্য প্রদর্শনের কারনে আমরা ক্ষমা প্রার্থী” সে সময় ক্যামেরা মৃতদেহের ছবি প্রদর্শন করতে থাকে। লোকজন চিৎকার করতে থাকে, এবং একজন ব্যক্তি বলে উঠে দেখ? এটাই হচ্ছে সেই স্বাধীনতা, তারা যা চায়”। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর দৃশ্যের অবতারণা ঘটে ভিডিওর একেবারে শেষ মুহুর্তে। পরবর্তী ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে, হামলার দৃশ্য। এই ছবির নিচে লেখা রয়েছে, “এই রকম রক্তাক্ত কুৎসিত দৃশ্য প্রদর্শনের কারনে আমরা ক্ষমা প্রার্থী” সে সময় ক্যামেরা মৃতদেহের ছবি প্রদর্শন করতে থাকে। লোকজন চিৎকার করতে থাকে, এবং একজন ব্যক্তি বলে উঠে দেখ? এটাই হচ্ছে সেই স্বাধীনতা, তারা যা চায়”। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর দৃশ্যের অবতারণা ঘটে ভিডিওর একেবারে শেষ মুহুর্তে: নিরাপত্তা বিভাগের দুই কর্মী একে অন্যকে আলিঙ্গন করে, দৃশ্যত যাদের দেখে মনে হয়েছিল তারা আহত, শেষে তারা; একটা চলচ্চিত্রের দৃশ্য ধারণ করছি নয়কি?, অনেকটা এই ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

যেখানে সরকার সব প্রচার মাধ্যমের মালিক এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের-এর প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকে, সেখানে এই ভাবে সাজিয়ে সংবাদ উপস্থাপন নতুন কিছু নয়। দুই সপ্তাহ আগে সিরিয়ার সরকার একই ভবে আল কায়দার বিরুদ্ধে একই রকমের বোমা হামলার অভিযোগ আনে, যার মধ্যে এক ভুয়া বিবৃতি এবং ওয়েবসাইট এই কাজে যুক্ত ছিল, যা প্রাথমিক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সমূহকে বোকা বানায় এই ভাবে সংবাদ প্রদান করে যে “মুসলিম ব্রাদারহুড এই বোমা হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে”। সিরিয়ার ব্লগার আনাস কাতিয়েস এই বিষয়ে পাওয়া সংবাদের উপর ভিত্তি করে একটি পোস্ট লিখেছে, যাতে পরিষ্কার ভাবে দেখা যাচ্ছে যে, ভুয়া বিবৃতি এবং ওয়েবসাইট এই শাসন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত।

@ফারোউহা৯১ টুইট করেছে:

পরিহাসের বিষয় হচ্ছে আসাদ-পন্থী লেবাননীরা এই বিস্ফোরণের সংবাদ দ্রুত প্রকাশ করার জন্য সচেষ্ট ( বিক্ষোভকারীদের প্রতি অভিযোগ করে), কিন্তু সিরিয়া প্রতিদিন যে সব নাগরিক খুন হচ্ছে, তাদের বিষয়ে কোন সংবাদ প্রদান হচ্ছে না। কেন?# সিরিয়া

@আরওয়ামেলান এর সাথে যোগ করেছে:

#৩০০ দিন পার হয়ে গেছে এবং এখনো আদ্দোনিয়া নামক টিভি চ্যানেল একটি মিথ্যাকে সাজিয়ে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ #সিরিয়া

যখন সিরীয় সরকার, বৈধতা লাভের জন্য প্রানপনে চেষ্টা করে যাচ্ছে, তখন আমরা সম্ভবত স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের জন্য সিরীয় জনগণের প্রাণপণ চেষ্টার এক প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে থাকব।
এই প্রবন্ধটি সিরিয়া বিক্ষোভ ২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .