ইরানঃ ২৫ দিন অনশন ধর্মঘট পালনের পর ব্লগারকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে

ডঃ মেহেদি খাজালি, একজন ব্লগার, একজন প্রকাশক। এছাড়া তিনি নেতৃস্থানীয় এক রক্ষনশীল ধর্মীয় নেতা এবং ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল-এর সদস্য আয়াতোল্লাহ খাজালির পুত্র। ২৫ দিনের এক অনশন ধর্মঘটের পর তাকে জামিনে কারগার থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এই ব্লগার গত দুই বছর ধরে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে তার আওয়াজ তুলে ধরছে। আর এই নিয়ে তাকে তিনবার গ্রেফতার করা হল। বেশ কিছু ইরানী ব্লগার মুক্ত হওয়া এবং এর আগে তাঁর অনশন নিয়ে মন্তব্য করেছে।

বন্দী দশা থেকে মুক্ত হবার পর তাঁর প্রথম পোস্টে খাজালি শ্রদ্ধেয় ইমাম জাফর আল সাদিকের একটি বাণী উদ্ধৃত করে বলেছেন: একজন বিশ্বাসী মানুষ একটি লোহার শেকলের চেয়ে শক্তিশালী এবং তাকে হত্যা করা হতে পারে, আবার জীবিত করে তাকে আবার হত্যা করা হতে পারে। কিন্তু কোনটাই তাকে তাঁর বিশ্বাস থেকে হঠাতে পারবে না”

খাজালির মুক্ত হবার বিষয়ে বাসিজ সাবজ লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]: স্রষ্টার প্রশংসা করি। অন্য সব নিষ্পাপ বন্দীর ব্যাপারে একই ঘটনা আশা করি, বিশেষ করে সবুজ আন্দোলন (গ্রীন মুভমেন্ট)-এর অন্য তম নেতা মীর হোসাইন মৌসাভির ব্যাপারে।

খোরশেদ নেশান বলছে [ফার্সী ভাষায়]:

আমরা জানি না কেন মেহদি খাজালিকে গ্রেফতার করা হল এবং আর কেন বা তাকে জামিনে মুক্ত করে দেওয়া হল। বন্দী দশা থেকে মুক্ত হয়ে যাবার পর তাঁর প্রথম লেখায় সে এক হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়েছে। তাকে জানতে হবে যে, যদি সে শাসকের সাথে ধর্মীয় প্রতিযোগীতায় নামে তাহলে সে অবশ্যই পরাজিত হবে। আমি আশা করব যে সে তাঁর ধর্মীয় অনুভূতি এবং বিশ্বাস ব্যক্তিগত পর্যায়ে রাখবে।

মেহদি খাজালির যখন জেলে ছিল তখন বেশ কয়েকজন ব্লগার তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এবং তারা তাদের পোস্টে খাজালির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিল।

সেদাইয়া আজাদি লিখেছে [ফার্সী ভাষায়]:

মেহদি খাজালি ২০ দিনের বেশী সময় ধরে কারাগারে বন্দী এবং তিনি অনশন ধর্মঘট শুরু করেছেন। এটা প্রমাণ করে যে তিনি আসলে জনতার পক্ষে। আপনারা কি তার এই অনশন নিয়ে উদ্বিগ্ন? আপনারা কি গ্রীন মুভমেন্ট-এর নেতাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন, মেহেদি কারোবি এবং মীর হোসাইন মৌসাভি, যারা এখন গৃহবন্দি, তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। যদি আপনারা তাদের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন না হন, তাহলে আপনার মধ্যে কোন মানবতা নেই…। আপনি কি কখনো প্রশ্ন করেছেন, কেন পানি নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার জন্য আপনার সন্তানকে জেলে যেতে হল? কারণ এখানে কোন স্বাধীনতা নাই। কেন এখানে কোন স্বাধীনতা নাই, কারণ আপনি সেই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন না।

মেহেরদাদইরানী লিখেছেন [ফার্সী ভাষায়] যে মেহেদি খাজালিকে ইরানের ইভিন কারাগারে ৩৫০ নম্বর এলাকায় রাখা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারের সময় পেটানো হয় যার স্বাক্ষী তার সন্তান। অন্য প্রতক্ষ্যদর্শী জানিয়েছে যে গ্রেফতারের সময় তিনি ঘাড়ে ব্যথ্যা পান।

চারফা অ ফক, অন্য ব্লগারদের মেহেদীকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন[ফার্সী ভাষায়] এবং যেন আমরা তার মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা না করি। তিনি বলেন যে, “ব্লগারদের সৃষ্ট কোন একটি কাজ মেহেদির অনশন সমাপ্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শাসকদের বাধ্য করবে”। তিনি আরো বলেন যে, খাজালিকে কর্তৃপক্ষ সেই সমস্ত বিষয় সংশোধন করে নিতে বলে, যে সবের প্রতি কর্তৃপক্ষ নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু তারপর কোন কারণ ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আঘাহি তা রাহাই মেহেদি খাজালির অনমনীয় মনোভাবের প্রশংসা করেছে [ফার্সী ভাষায়]।

ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর আমাদের ভাগ্যে আর কি ঘটতে পারে? কেউ কেউ প্রশ্ন করছে, কেন মিশর তা করতে সমর্থ হয়েছে, যেখানে ইরান তা করতে ব্যর্থ হয়েছে [ সরকারের পতন ঘটাতে] … কেউ কেউ বলছে অপেক্ষা কর, এক নতুন ভোরের আগমন ঘটতে যাচ্ছে, কিন্তু উত্তর মেরুতে আরেকটি সকালের জন্য ছয় মাস অপেক্ষা করতে হয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .