কুয়েত: বিপ্লবের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করায় মিশরীয় শিক্ষার্থীকে বহিস্কার

বাসিম মোহাম্মদ ফাতহি নামের দশ বছরের একজন মিশরীয় শিক্ষার্থী “আমাদের এখানে কেন বিপ্লব হচ্ছে না?”- এ সাধারণ প্রশ্ন করার কারনে কুয়েতের সকল বিদ্যালয় থেকে তাঁকে বহিস্কার করা হয়। আজ শুক্রবার এ মর্মান্তিক খবরটি সংবাদপত্রের মাধ্যমে কুয়েতিরা জানতে পারেন।

সংবাদটির সবচাইতে মর্মান্তিক অংশ হল যে শিক্ষার্থীর শিক্ষক এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঐ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করে। শিশুটির বাবা মন্ত্রণালয়ের আইনী কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করায় মন্ত্রণালয় শিশুটিকে ঐ বিদ্যালয়েই পূণঃভর্তিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। কুয়েতি সংবাদপত্রে শিশুটিকে বহিস্কার করার খবর ছড়িয়ে পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেন।

Schoolboy in Kuwait. Image by Flickr user Steve & Jemma Copley (CC BY-SA 2.0).

কুয়েতের শিক্ষার্থী। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী স্টিভ ও জেম্মা কপলির সৌজন্যে (সি সি বাই-এসএ ২.০)।

সিদ্ধান্ত বাতিল

কুয়েতি টুইপস বহিস্কার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বাসিমের বিদ্যালয়ে ফিরে যাবার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। সংসদ সদস্যগণও এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। শিক্ষামন্ত্রী আহমাদ আল-মুলাইফি বলেন শিশুটি কুয়েতের বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে।

কুয়েতি টুইপ ড. ফাওয়াজ আল-ফারহান(@ফাওয়াজফারহান),হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি মন্ত্রণালয়ের এ অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন:

على الوزير المليفي أن يرد اعتبار الطفل المصري عن طريق استقباله وإجابته بنفسه عن تساؤل الطفل ، يجب أن ننتزع من قلوب أطفالنا الخوف من السؤال

@ফাওয়াজফারহান: মন্ত্রী আল-মুলাইইফির উচিত মিশরীয় শিক্ষার্থীর সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া; শিশুদের মনে প্রশ্ন করার ভয় থেকে মুক্ত করা আমাদের উচিত।

একজন টুইটার ব্যবহারকারী জিউস (@ জিউস_ কে) লিখেন যে, মিশরীয় শিক্ষার্থীর বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত এবং এ বিষয়ে গণ কার্যক্রম দরকার:

اذا لم يرجع الطفل المصري المفصول الى مقاعد الدراسة ومحاسبة كل من ساهم باعتماد فصله ، وجب علينا الاعتصام أمام مبنى وزارة التربية

@ জিউস_ কে: মিশরীয় শিক্ষার্থীটি যদি আর বিদ্যালয়ে ফেরত যেতে না পারে এবং যারা তাঁকে বহিস্কার করেছে তাঁদের যদি শাস্তি না দেওয়া হয় তবে সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে মন্ত্রণালয়ের সামনে যেয়ে প্রতিবাদ করা।

জনপ্রিয় কুয়েতী ব্লগার এবং টুইটকারী যিনি এনকো ডাকনামে পরিচিত(@ওম৯এডডা) মন্ত্রীকে তাঁর বিবৃতির জন্য সতর্ক করে বলেন:

الى الوزير المليفي: تصريحك اليوم بالجرايد حول الطفل المصري المفصول قد يكلفك سياسيا الكثير لانه دليل على عدم علمك بما يجري في وزارتك

@ওম৯এডডা: মন্ত্রী আল-মুলাইফির প্রতি: মিশরীয় শিশু শিক্ষার্থীর বিষয়ে আপনার আজকের বিবৃতির জন্য রাজনৈতিকভাবে আপনাকে চরম মূল্য দিতে হবে কারন এটা প্রমানিত হল যে আপনার মন্ত্রণালয়ে কি ঘটে তা আপনার জানা নেই।

আরও একজন টুইটকারী মোহাম্মদ আলকাত্তান(@এমজেকিউ _কেডব্লিউটি) মিশরীয় ছাত্রের বিরুদ্ধে গৃহিত পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন:

قصة الطفل المصري المفصول يجب أن تنحل بطرق تربوية راقية وفاعلة تتمثل في تقييم الفكر ومعالجته. فلا يجب التعسّف مع قاصر ألقى كلمات بريئة.

@এমজেকিউ _কেডব্লিউটি: বহিস্কৃত মিশরীয় শিশুটির বিষয়ে কার্যকর শিক্ষাগত ভাবেই মূল্যায়ন পূর্বক সমাধান করা উচিত। একজন শিশুর নিষ্পাপ কথার জন্য কোন শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।

কুয়েতী আইনজীবী নাসের নাজাফ (@নাসেরনাজাফ) ইতঃপূর্বে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক(মহিলা)-এর ছাত্ররা ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে শিক্ষক ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সে উদাহরণ টেনে তিনি কুয়েতী শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে মন্তব্য করেন:

دور المُعلم بدأ يأخذ منعطف خطير، فبالأمس دكتورة تحيل طالباتها للتحقيق، واليوم يتم فصل طالب في مرحلة الابتدائية لتوجيهه سؤال إلى معلمته.

@নাসেরনাজাফ: শিক্ষকদের ভূমিকা একটা বিপদজনক দিকে মোড় নিচ্ছে; এর আগে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের বিরুদ্ধে তদন্ত করিয়েছেন আর আজ একজন ছাত্র তাঁর শিক্ষককে প্রশ্ন করার অপরাধে বহিস্কৃত করা হল।

কুয়েতের নারী সক্রিয়তাবাদী নাবিলা আলানজারি(@নালানজারি) হলেন সর্বশেষ ব্যক্তি যিনি মন্ত্রণালেয়র গৃহিত পদক্ষেপ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন

قضية الطفل المصري هل تستحق كل ذلك اشخلينا للأنظمة العربية المتسلطة

@নালানজারি: মিশরীয় শিশুটির বিষয়টি কি আমাদের কাম্য ছিল; আরব স্বৈরশাসকের আমলে আমরা কি হারালাম?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .