মিশর: সতীত্ব যাচাই

এই প্রবন্ধটি মিশর বিপ্লব২০১১ সম্বন্ধে করা আমাদের বিশেষ কভারেজের অংশ

এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে যে মিশর বিপ্লবের সময় যে সমস্ত মহিলা প্রতিবাদকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদেরসতীত্ব পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সংবাদে কেবল মিশরের নারীরা নয়, পুরুষেরাও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে, তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে, যারা তাদের মর্যাদা এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে, তাদের এই রকম অপমানজনক ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।

যখন মার্চ ২০১১-তে এর স্বাক্ষ্য প্রমাণ সামনে চলে আসে, সে সময় সর্বোচ্চ সামরিক পরিষদ ( দি সুপ্রিম কাউন্সিল ফর দি আর্মড ফোর্সেস- এসসিএএফ ) এই ধরনের কোন পরীক্ষার কথা অস্বীকার করেছে। তবে যে জেনারেল পরবর্তীতে স্বীকার করেছিলেন যে গ্রেফতার কৃত নারীরা যে স্বাভাবিক “মিশরীয় নারী” নয়, এই বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য এবং এসসিএএফ এই কারণে এই পরীক্ষার আয়োজন করে যাতে তারা তাদের বিরুদ্ধে আসা যে কোন ধরনের যৌন হয়রানির অভিযোগ এড়াতে সক্ষম হয়।

তাহরিরডায়রিজ এর তুলে ধরা এই ভিডিওটি, এই ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে এমন এক মেয়ের স্বাক্ষ্য তুলে ধরেছ:

যখন এই দাবী করা হয় যে যৌন হয়রানি অভিযোগ দুর করার জন্য পরীক্ষার আয়োজন, তখন যৌনতার মাধ্যমে এবং আবেগের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করা নারী বিক্ষোভকারীদের হয়রানি করার এই বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্ষোভ এবং ঘৃণার মধ্যে দিয়ে গ্রহণ করা হয়।

মাইকেল গঞ্জালেজ লিখেছে:

তাদের যৌন পরিস্থিতি, পরিচয়, লিঙ্গ, যৌনতা, যৌনতার ইতিহাস, ধর্ম ইত্যাদি সত্বেও, যে কোন ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারী এই ব্যক্তি যে যুক্তির অবতারণা করেছে তা ঘটনার বাস্তবতায় সঠিক নয় এবং নৈতিকভাবে তা তিরস্কারের যোগ্য।

এদিকে জেইনোবিয়া বলছে:

যখনই আমি #ভার্জিনিটিটেস্ট-এর (সতীত্ব পরীক্ষা) কথা বলি, তখন যে তাকে কোন ধরনের আলোচনা ছাড়াই মানবতার লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করে, তাঁর এই ধারণাকে আমি ভালোবাসি।

নারীর গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা এক ধরনের হয়রানি, এই বিষয়টিকে নিশ্চিত করে একই পোস্টে মাইকেল বলছে :

যখন একটা মেয়েকে সরকারী কর্মকর্তার সামনে তার ব্যক্তিগত বিষয় তুলে ধরতে হয় সেটাই তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন। কোন একজনের নিজের ব্যক্তিগত যৌন জীবন রাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরার বিষয় নয়, অথবা তা কোন ব্যক্তির কৃতিত্বকে কাজে লাগানোর বিষয় নয়।

A banner from a stand against SCAF which reads: "Our Daughters are a Red Line".

এসসিএএফ-এর বিরুদ্ধে ব্যানার হাতে দঁড়িয়ে একজন, ব্যানারে লেখা রয়েছে: “আমাদের কন্যারা এক লাল রেখা”

একটা পোস্ট যেটিতে মিশরের যৌন হয়রানির শেকড় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে আইমান আশোর তার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সতীত্ব পরীক্ষা উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন।

এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে যৌন হয়রানি এবং আদতে এই সমস্ত মেয়েদের হয়ে করা। যারা এই সমস্ত ঘৃণ্য পরীক্ষা চালানোর উদ্যেগ নিয়েছে তারা সকলেই মিশরীয় নাগরিকদের সতীত্ব নিয়ে যে মানসিকতা রয়েছে সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। সম্প্রতি মিশরে প্রতি বিপ্লব নামক শব্দটির যথেষ্ট ব্যবহার হচ্ছে। এ রকম নির্মম অপরাধ মূলক প্রতি বিপ্লবী আচরণের দৃষ্টান্ত আমি খুব কমই দেখেছি, সেই সমস্ত সাহসী সম্মানিত নারীদের কাছ থেকে তাহরির-এর সুনাম কেড়ে নেবার এক নিষ্ঠুর এবং বীভৎস প্রচেষ্টা।

সতীত্ব নামক বিষয়টি সবসময় মিশরে এক বিতর্কের বিষয়। অভিযুক্ত এবং এই ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে তা কেবল মিশরীয় পুরুষের অর্ধাঙ্গিনীর গালের উপর কেবল চড় মারা নয়, তা একই সাথে বিপ্লবের দুটি নীতিতে চড় মারা- মর্যাদা এবং স্বাধীনতার উপর।

এই প্রবন্ধটি মিশর বিপ্লব২০১১ সম্বন্ধে করা আমাদের বিশেষ কভারেজের অংশ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .