এক সপ্তাহ আগে, জেদ্দায় এক সৌদি মা গাড়ী চালিয়ে তার সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসেন। ২২ মে, ২০১১-তে আরেক সৌদি নারী মানাল আল-শারাফ রাস্তায় গাড়ী চালান, সে সময় তার পাশে বসে ছিল বিখ্যাত নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী ওয়াজেহা আল হুওয়াদার এবং তার ভাই ও পুত্র পিছনের সিটে বসেছিল। এর পরের দিন আল শারিফ নিজে ইউটিউবে তার গাড়ী চালানোর ভিডিও পোস্ট করে।
এই ঘটনা্র প্রেক্ষিতে মানাল আল শারিফকে গ্রেফতার করা হয় এবং তারপর তাকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়, পরে আবার মধ্যরাতে তাকে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নতুন এই বীর নারীর ক্ষেত্রে টুইটার নেটিজেনদের লেখায় ভরে যায়, যাদের অনেকে তাকে আরেক রোজা পার্ক হিসেবে অভিহিত করে (রোজা পার্ক ছিলেন বিখ্যাত আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলন কর্মী)।
সৌদি ব্লগার আহমেদ আল ওমরান (@আহমেদ) লিখেছে:
@আহমেদ: এটাই কি সেই মুহূর্ত? রোজা পার্কঃ১৯৫৫ :মানাল আল শারিফ:২০১১#সৌদি, #ওমেন২ড্রাইভ
সৌদি টুইটারকারী ওমর জাহানি (@ওমর৯৯৪৪) গত রাতে আল-শারিফ যা করেছে তার উপর একটি টুইট লিখেছেন:
@ওমর ৯৯৪৪: মানালের এক অলিখিত বীর, যখন সে গাড়ী চালাচ্ছিল, তখন তার ভাই তার সঙ্গে ছিল, তার স্ত্রী মানালের পুত্রের সন্তানের দেখাশুনা করত (বেবিসিটার) সৌদির ভ্রাতারা #টেকনোট, #ফ্রিমানাল।
বিখ্যাত মিশরীয় প্রাবন্ধিক এবং একটিভিস্ট মোনা এলতাহওয়ি (@মোনাএলতাহওয়ি) গত রাতে মানালের যে ঘটনা, তার উপর টুইট করেছে এবং সে বেশ কিছু মতামতকে পুনরায় টুইট করেছে, যা গুরুত্ব প্রদান করে যে সৌদি আরবে নারীর ক্ষমতায়নের সময় চলে এসেছে:
@মোনাএলতাহওয়ি,#মানালাআলশারিফকে কোন ধরনের গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে। তার “অপরাধ”? নারী হয়ে গাড়ী চালানো।#সৌদ,#ওমেন২ড্রাইভ, #ফ্রিমানাল
এছাড়াও তিনি সৌদি আরবে নারী অধিকারের যারা শত্রু তাদের সমালোচনা করেছেন, তিনি বলছেন:
@মোনাএলতাহওয়াই:, #সৌদি, রাজকীয় ব্যক্তিবর্গ এবং অতিমাত্রায় রক্ষণশীল ধর্মীয় নেতারা দাবী করেছে যে সমাজ এখনও নারীদের গাড়ী চালানোর জন্য তৈরি নয়। বলা যায় রাজকীয় ব্যক্তিবর্গ, ধর্মীয় নেতার এখনো মেয়েদের অধিকার প্রদানের জন্য তৈরি নয়।
ফোউজ আব্দুল্লাহ (ফোউজআবদে) এক সৌদি তরুণী যে এই বিষয়ে টুইট করেছে, সে তার টুইটার একাউন্টের মাধ্যমে মানাল এবং নারীদের গাড়ী চালানোর আইনগত অধিকার সম্বন্ধে লিখেছে, সে নারীদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় পুলিশের যুদ্ধের বিষয় সম্বন্ধে সতর্ক করে দিয়েছে [আরবী ভাষায়):
لا نحتاج الى وصي او رقيب لكي نحافظ على عفتنا وشرفنا. ارحلوا #haya'a
রানা আল-আবদুলরাজাক (রানাতি০১) কুয়েতের এক নারী, যে টুইট করে, তিনিও মানাল আল-শারিফের সাথে একাত্মতা প্রদর্শন করেছেন[আরবী ভাষায়]:
ما قامت به منال الشريف اليوم هو شجاعة حقيقية .. امرأة تصارع ارثا مثقلا من الجهالة والموروث الذكوري المجحف
আরেক সৌদি নারী নাওয়ারাহ আসাদ (@নাওয়ারা৮২) সমাজের এই বিবৃতিকে পরিহাস করেছে যে, তারা সৌদি নারীদের “রাণী” বলে মনে করে, কাজে তারা কাজ করবে না বা গাড়ী চালাবে না, তার বদলে তারা বাসায় থাকবে এবং ঘরের কাজ করবে:
@নাওয়ারা৮২: কি ভাবে আমি সৌদিতে নিজেকে এক #রাণী হিসেবে দাবী করতে পারি, যখন একজন রাণী দেশকে শাসন করতে পারে, কিন্তু আমি এমনকি এখানে পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারি না এবং নিজেকে শাসন করার জন্য আমার এক অভিভাবকের দরকার হয়।
মিশরীয় টুইটারকারী মাহা হোসনী (@মাহা১১৪৪১১) মাহা যা করেছে তার গুরুত্ব সম্বন্ধে লিখেছে। সে বলছে:
منال خرجت من السجن بس دخلت التاريخ و هى فعلا تستحق الاحترام و لن يضيع حق وراءه مطالب ده ابسط الحقوق فى ايه؟؟ #manalalsharif
আরেকজন সৌদি টুইটারকারী, আব্দুল আল-আলামি (@আজিজআলালামি) মানালের গ্রেফতারের ব্যাপারে মন্তব্য করেছে:
@আজিজআলাআলামিঃ মাঝরাতে মানালকে তার বাসা আরামাকো শিবির থেকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনারা এক রাণীর প্রতি ঠিক এরকম আচরণ করে থাকেন, তাই না। #সৌদি #ফ্রিমানাল।
আরেকজন সৌদি টুইটারকারী হেবা আল-বুতাইরি (@এইচ_এবা), যে কিনা সৌদি নারীদের জন্য পরে অনলাইনে সক্রিয় হয়েছে, সে মানাল সম্বন্ধে লিখেছে, সে বলছে:
@হে_বা#ফ্রিমানাল। দমনের ঘটনা থেকে উন্মাদনার ঘটনার দিকে নজর ফিরাই! তার বাসা থেকে মাঝ রাতে তাকে জোর করে ধরে আনা? সে তো কোন সন্ত্রাসী নয়।
অনলাইনে সৌদি আরবের আরেকজন নারী একটিভিস্ট খোউলুদ আল ফাহাদ (@খোউলুদস) মানাল আল-শারিফের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করেছে:
القبض على منال بهذه الطريقة هو لإرهابنا من الخروج للقيادة وتخويف أولياء أمورهن وبث الرعب في نفوسهم لكن ماقامت به منال خلق مليون منال
সৌদি আরবের উপন্যাসিক বাদরিয়া আল-বাসিরও (@বাদারইয়াহালবেশর) মানালের প্রতি সমর্থনে টুইট করেছে এবং তার গ্রেফতারের সমালোচনা করেছে:
من الذي خالف؟ منال خالفت القانون أم القانون خالف منال؟ وكيف يستوي قانونا لا يساوي بين المواطنات والمواطنين