ভারতঃ একজন মৃত মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা

এনাআইটির (কালিকট,কেরালা) মেধাবী গবেষক-এর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, এক নারীর। এক মৃত মানুষের ব্যক্তি জীবনের গোপনীয়তা বিষয়ক বিতর্ককে অরো একবার উসকে দিয়েছে এবং সাধারণভাবে কেরালার সমাজে দীর্ঘ সময় ধরে চলা পৌরুষত্বের বিক্রমের বিষয়টিকে তুলে ধরছে। কেরালাকে, ভারতের অন্যতম এক অগ্রগামী রাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এবং প্রায়শ এই রাজ্যটিকে মাথাপিছু উন্নতির মাত্রা হিসেবে অনেক উন্নত রাষ্ট্রের সাথে তুলনা করা হয়। কিন্তু রাজ্যের নারীদের এখনো ১৮ শতকের মত বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

এই সকল কিছু তখনই সামনে চলে আসে, যখন চলন্ত ট্রেন থেকে এক মেধাবী গবেষক-এর হারিয়ে যাবার সংবাদ পাওয়া যায়, পরে কাছের এক নদীতে তার মৃতদেহ আবিষ্কার করা হয়। যেহেতু সে এক পুরুষের সাথে ভ্রমণ করছিল সে কারণে নিষ্ঠুর মালয়ালাম মূলধারার প্রচার মাধ্যম প্রবল উৎসাহে সংবাদ ছাপাতে শুরু করে এবং এই মৃত্যুর ঘটনায় নিজস্ব রঙ দিয়ে প্রচার মাধ্যম কেবল মাত্র তার ছেলে বন্ধুর উপর মনোযোগ প্রদান করে। তার সতীত্ব, তার মোবাইল ফোনের টেক্সট মেসেজ, তার ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রেম’ সকল কিছু নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করা হচ্ছে। প্রতিহিংসামূলক ভাবে তাকে শাস্তি প্রদান করা মত করে সেই মহিলাটিকে নিয়ে এই আলোচনা যে কিনা ইতোমধ্যে মৃত।

মূলধারার প্রচার মাধ্যম একজন মৃত ব্যক্তির প্রতি যে আচরণ করলে তাতে ব্লগ জগতের ব্লগাররা বিস্মিত। এইসব প্রচার মাধ্যম তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি কোন মর্যাদা প্রদান করেনি।

কেরালার ভারকালা ট্রেনে মহিলা যাত্রী, ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী জেওয়াইএনক্সজিরো-এর, সিসি বাই-এসএ লাইসেন্স-এর মাধ্যমে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

নেথা হুসাইন তার গুগুল বাজ-এ এক আবেগপুর্ণ লেখা লিখেছে:

ജീവിക്കുന്നത് കേരളത്തിലാണ്. കഴിഞ്ഞ 19 വർഷങ്ങൾക്കുള്ളിൽ പല പ്രാവശ്യം ട്രൈനിലും ബസ്സിലും ഒക്കെ, രാത്രിയും പകലും ഒറ്റയ്ക്കും അല്ലാതെയും യാത്ര ചെയ്തിട്ടുണ്ട്. ഇനിയും അങ്ങനെയൊക്കെത്തന്നെ യാത്ര ചെയ്യാനാണ് ഉദ്ദേശിക്കുന്നതും. അതുകൊണ്ട് തന്നെ എത്ര കാലം ജീവനോടെ ഇരിക്കും എന്ന് പറയാനൊക്കില്ല. ഇനി, തട്ടിപ്പോകുകയാണെങ്കിൽ തന്നെ അതു ദുരൂഹ സാഹചര്യങ്ങളിൽ ആയിരിക്കരുതേ എന്ന് ആത്മാർത്ഥമായി ആഗ്രഹിച്ച് പോകുന്നു. കാരണമുണ്ട്. “പെൺകുട്ടി ദുരൂഹ സാഹചര്യങ്ങളിൽ മരണപ്പെട്ടു”,”മരിച്ച പെൺകുട്ടിയുടെ ഡിലീറ്റ് ചെയ്യപ്പെട്ട എസ്.എം.എസ്സുകൾ/ഈ മെയിലുകൾ പരിശോധിച്ചു വരുന്നു” എന്ന മുൻപേജ് വാർത്തകൾക്ക് താഴെ എന്റെ ഫോട്ടോ നാട്ടുകാർ കാണാൻ തീരെ ആഗ്രഹമില്ല. രണ്ടാമത്, മരണശേഷമെങ്കിലും വീട്ടുകാർക്കും, കൂട്ടുകാർക്കും സമാധാനം കൊടുക്കണം എന്നുണ്ട്. എനിക്ക് മെയിൽ അല്ലെങ്കിൽ എസ്സെമ്മെസ് അയച്ച വകയിൽ, വളരെ നിഷ്കളങ്കമായി ‘ലവ്യൂ നതാ’ എന്ന് പറഞ്ഞ വകയിൽ എന്റെ കൂട്ടുകാരെ പൊലീസ് ചോദ്യം ചെയ്യേണ്ടി വരരുത്.

আমি কেরালায় বাস করি, এই রাজ্যে বিগত ১৯ বছর ধরে দিনে বা রাতে ট্রেন বা অন্য সব গণ পরিবহণে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করছি। আগামীতেও, আমি এভাবেই যাতায়াত করব। আমি জানি না আর কতদিন, বা জীবনে কখনো কোন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হব কিনা। যদি আমার জীবনে এ রকম কোন কিছু ঘটে যায় আমি আশা এবং প্রার্থনা করি, সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে আমাকে যেন সে রকম কোন ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়। আমি চাই না সংবাদপত্রের শিরোনামে এ রকমটা লেখা হোক যে “ রহস্যজনক ভাবে একটি মেয়ের মৃত্যু”, আর সেই মেয়েটির টেক্সট মেসেজ পুলিশ যাচাই করে দেখছে। এমন অনেক মেসেজ রয়েছে যেখানে লেখা রয়েছে, “নীথা তোমায় ভালোবাসি”, এ সব আমার বন্ধুদের পাঠানো মেসেজ। এই সব নিয়ে একটা প্রমের গল্প সাজানো হতে পারে, এর মধ্যে দিয়ে আমার পরিবার এবং বন্ধুদের হয়রানি করা হতে পারে।

মৃত ইন্দু যে এনাআইটির একজন গবেষক ছিলেন সেই এনাআইটির শিক্ষক ডঃ সুদীপ কস মালয়ালম একটি পত্রিকা দিপিকার সম্পাদক বরাবর এক খোলা চিঠি লিখেছেন।

প্রিয় দিপিকার সম্পাদকীয় দল,

দিপিকা নামক সংবাদপত্রের আজকের সংখ্যায় ইন্দুর মৃত্যু সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। ইন্দু ছিল এনাআইটি খোজিকোডের এক গবেষক। পুলিশের প্রদান করা তথ্য উদ্ধৃত করে সংবাদে বলা হয়েছে যে ইন্দু এবং তার বন্ধু সুভাষ ( এনাআইটির তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক) এক বছর ধরে একসাথে বসবাস করছে। এনআইটির ক্যাম্পাসে বাস করা একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি জানি এটি মিথ্যা এবং ইন্দু এনাআইটির মেয়েদের হোস্টেলে বাস করত। দয়া করে যাচাই না করে আপনার সংবাদপত্র এমন ভিত্তিহীন সংবেদনশীল সংবাদ ছাপা থেকে বিরত থাকুন, যা কেবল একটি মৃত ছাত্রীর চরিত্র হনন করছে।

বেরলি থমাস একজন সাংবাদিক এবং একটিভিস্ট ব্লগার, মূলধারার সংবাদপত্র যে সকল বিষয় উপস্থাপন করেছে সে সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।

3. സുഭാഷും ഇന്ദുവും ഒരുമിച്ചു യാത്രകള്‍ ചെയ്തിട്ടുണ്ട്. സൗഹൃദമോ പ്രണയമോ ഉള്ള വ്യക്തികള്‍ ഒരുമിച്ചു യാത്ര ചെയ്യുന്നത് ലോകത്തിതാദ്യമല്ല. ഇതെഴുതുന്ന മാധ്യമപ്രവര്‍ത്തകര്‍ തന്നെ എത്രയോ യാത്രകള്‍ നടത്തിയിട്ടുണ്ടാകും. എന്നിട്ടും ഒരുമിച്ചു യാത്ര ചെയ്തു എന്നത് എന്തിന്റെയോ തെളിവായി അവതരിപ്പിക്കാന്‍ ഉള്ള തൊലിക്കട്ടി ഉണ്ടാകുന്നത് വിസ്മയകരം തന്നെ.

প্রচার মাধ্যমে যে বিষয়টি নিয়ে ক্রমাগত আলোচনা হচ্ছে, সেটি হল ইন্দু এবং তার পুরুষ বন্ধুর একসাথে চলাফেরা। এমন ঘটনা প্রথম নয় যেখানে দুজন ব্যক্তি যারা পরস্পরের বন্ধু, তারা একসাথে চলাফেরা করছে। বেশিরভাগ প্রচার মাধ্যম এই বিষয় নিয়ে চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করেছে, তাদের সাংবাদিকরাও একই কাজ করবে, বিস্ময়করভাবে এখনো তারা এই ঘটনা নিয়ে বাজে ভাবে সংবাদ প্রদান করছে এবং তা উদযাপন করছে।

শ্রীজিথড ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিষয়ক আইন তৈরি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করার বিষয় নিয়ে লিখেছে

ഞാനോ പ്രിയപ്പെട്ടവരോ ആരെങ്കിലും ട്രെയിനില്‍ നിന്ന് വീണോ, പുഴയില്‍ മുങ്ങിയോ, എന്തെങ്കിലും ‘ദുരൂഹ’ സാഹചര്യത്തിലോ മരിക്കുകയോ അപകടത്തില്‍ പെടുകയോ ചെയ്താല്‍ ഞാനോ അവരോ അയച്ച മുഴുവന്‍ മെസ്സേജ്കളും എനിക്കോ അവര്‍ക്കോ അത് വരെ ഉള്ള എല്ലാ സ്വകാര്യതകളും പോലീസുകാരുടെയും പത്രക്കാരുടെയും വേഷം കെട്ടി നടക്കുന്ന ഞരമ്പ്‌ രോഗികള്‍ പത്രങ്ങളിലൂടെയും വെബ്‌ ഉലകത്തിലൂടെയും പ്രചരിപ്പിച്ചു രസിക്കുന്നത് തടയാന്‍ നിയമ പരമായോ അല്ലാതെയോ വല്ല പരിഹാരവും ഉണ്ടോ? നിയമവും മറ്റും അറിവുള്ളവര്‍ സഹായിക്കണം. ഇന്നോ നാളെയോ നമുക്കെല്ലാം സംഭവിക്കാവുന്ന ദുരന്തമാണിത്.

যদি আমি অথবা আমার পরিবারের কেউ কিংবা আমার বন্ধু রহস্যজনক ভাবে মারা যাই, তাহলে সংবাদ শিকারীর দৃষ্টিতে দেখা চোখ থেকে বাঁচার জন্য কোন আইন রয়েছে কি? সমানভাবে সংবাদপত্র কিংবা পুলিশ উভয়ের হাত থেকে গোপনীয়তা রক্ষার কোন উপায় রয়েছে কি, যারা নির্লজ্জভাবে আমার ব্যক্তিগত টেক্সট মেসেজে উঁকি মারার বিষয়টির উদযাপন করবে এবং এভাবে আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ধ্বংস করবে। আগামীকাল এটি আমাদের যে কারো জীবনে ঘটতে পারে এবং যে আইন এই বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করছে তা আমাদের জানা প্রয়োজন।

ভারতীয় প্রচার মাধ্যম এখনো শৈশবের পর্যায়ে রয়েছে, তার অনিয়ন্ত্রিত নতুন প্রচার মাধ্যম এবং চ্যানেল এখন পর্যন্ত আত্মনিয়ন্ত্রণের সূত্র বের করতে এবং নাগরিকদের গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারেনি। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিষয়ক আইন সহ কেরালায় নারীদের প্রতি সহিংস যৌন আচরণের সংস্কৃতি এবং নীতিগত যে নিয়মাবলী, এখন তার প্রতি শক্ত দৃষ্টি প্রদান করা প্রয়োজন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .