তিউনিশিয়া: শান্তিপূর্ন বিক্ষোভ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে

এই পোস্টটি “তিউনিশিয়া বিদ্রোহ ২০১১” সংক্রান্ত আমাদের বিশেষ কাভারেজ এর অংশ।

দ্রুত রাজনৈতিক সংস্কার আর প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ ঘানোউশির পদত্যাগের দাবিতে তিউনিশিয়াতে ক্রমাগত বিক্ষোভ চলছে। মনে হচ্ছে আগের প্রেসিডেন্ট বেন আলিকে বের করে দেয়াই যথেষ্ট না কিছু কিছু তিউনিশিয়াবাসীর কাছে যারা পুরো সরকারের পতন আর আগের ব্যবস্থা থেকে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায়। শুক্রবার রাজধানী তিউনিসে প্রায় ১০০,০০০ বিক্ষোভকারী জমায়েত হয় ঘানোউশির অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে।

হাবিব বুরগুইবা এভিনিউর সামনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে প্রতিবাদকারীরা। ছবি খালেদ এনচিরির সৌজন্যে

বিক্ষোভকারীরা ঘানোউশিকে বিশ্বাস করতে পারছেন না যিনি বেন আলির ঘনিষ্ট সহচর আর ১৯৮৯ সাল থেকে তার সরকারের সদস্য, এবং ১৯৯৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন।

এর পরে ২৫শে ফেব্রুয়ারী এর রাতের পরে, শান্তিপূর্ন বিক্ষোভ হঠাৎ করে ভয়াবহ আকার ধারন করে পুলিশ আর বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। এখনো এটা পরিষ্কার না যে কি থেকে সংঘর্ষ বেধেছিল, কিন্তু এতে কোন সন্দেহ নেই যে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে আর বাতাসে ফাঁকা গুলি করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য, যারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হাবিব বুরগুইবা স্কোয়ারে একত্র হয়েছিল।

রায়ট পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে্। ছবি খালেদ এনচিরির সৌজন্যে

হিউমান রাইটস ওয়াচ (@এইচআরডাব্লু) কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার নিশ্চিত করেছে:

গত ৯০ মিনিট ধরে, এইচআরডাব্লু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সামনে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে দেখেছে।

তার ফেসবুক ফ্যান পাতায় জানিয়েছে যে বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রনালয়ের ভিতরে জোর করে ঢুকতে চেয়েছিল:

عداد غفيرة من المتظاهرين عمدوا عشية يوم الجمعة إلى مهاجمة مقر وزارة الداخلية بشارع الحبيب بورقيبة بالعاصمة حيث القوا كميات كبيرة من الحجارة على مبنى الوزارة ومحيطها…
وحاول أعوان قوات الأمن الداخلي ووحدات الجيش الوطني تفريق المتظاهرين عبر إطلاق النار في الهواء وإلقاء القنابل المسيلة للدموع لكن المتظاهرين واصلوا بإصرار محاولاتهم اقتحام مبنى الوزارة.

শুক্রবার বিকালে, বেশ কিছু বিক্ষোভকারী ইচ্ছাকৃতভাবে জোর করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ভিতরে ঢুকে যেতে চান। তারা হাবিব বুরগুইবা এভিনিউ, রাজধানীতে, আর বাড়ি আর তার চারপাশে অনেক পাথর ছুঁড়ে মারে। নিরাপত্তা বাহিনী আর সেনারা তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আর কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে, কিন্তু তারা সরে আসেনি আর জোর করেছে মন্ত্রনালয়ের ভিতরে ঢোকার জন্যে।

সর্বশেষ: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জানিয়েছে যে সংঘর্ষের সময়ে ২১ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন আর অনেক দোকান, একটা সুপারমার্কেট আর একটা পুলিশ স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একজন তিউনিশীয় ব্লগার হাবিব বুরগুইবা এভিনিউর চিত্র তার জানালা থেকে যেমন দেখেছেন তা বর্ণনা করেছেন:

C'est le K-O à l'Av H.Bourguiba. C'est la 1ère fois que je vois ça (par ma fenetre). C'est pire que se qui s'est passé le 14 Janvier. Les manifestants ont tout brulés, meme le centre de police près de l'Hotel Africa (Le 7ème). On a secouru des jeunes qui fuyaient la police et d'autres étouffés par les bombes lacrymogènes

হাবিব বুরগুইবা এভিনিউতে গন্ডগোল। এমন আমি আগে কখনো দেখিনি (আমার জানালা দিয়ে)। ১৪ই জানুয়ারী যা ঘটেছে এটা তার থেকেও খারাপ। বিক্ষোভকারীরা সব কিছু জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, এমনকি আফ্রিকা হোটেলের কাছের পুলিশ স্টেশনটিকেও। আমরা সাহায্য করেছি তরুণদের যারা পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল আর অন্যদের যারা কাঁদানে গ্যাসের কারনে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিল।

কায়েস (@কায়েসইজি) টুইট করেছেন:

Ça brule devant le ministère de l'interieur… (Source:mes yeux)

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সামনে কিছু পুড়ছে… (সূত্র: আমার চোখ)

ডের স্পিগেলের বৈদেশিক বিষয়ক প্রতিনিধি ম্যাথিউ ভন রোর (@ম্যাথিউভনরোর) টুইট করেছেন:

শান্তিপূর্ন বিক্ষোভ সংঘাতে পরিনত হয়েছে #তিউনিসে যা কষ্টকর। কিছু মানুষ হতাশ সেটা বোঝা যায়, কিন্তু এটা তো সাহায্য করছে না।

তিনি যোগ করেছেন:

তিউনিসের মূল রাস্তায় কিছু গুন্ডা এখন দোকান লুটপাট করছে।

সংঘর্ষের ফলে কেউ নিহত হয়নি কেবল একজন গুরুতর আহত হয়েছে।

ভ্লাদিমির ইয়েবানোভ (@ভ্লাদিমির ইয়েবানোভ) টুইট করেছেন:

encore du sang sur l'avenue bourguiba.. un blessé grave vient d'etre hospitalisé maintenant

হাবিব বুরগুইবা এভিনিউতে আরো রক্ত…খারাপভাবে আহত একজন এখন হাসপাতালে ঢুকছেন

একজন কানাল+ সাংবাদিক জুলিয়ান কোলিনেট (@ জেকোলিনেট), যুদ্ধের এই ধারা পছন্দ করেছেন:

Ambiance de guerre sur l'avenue Bourguiba

হাবিব বুরগুইবা এভিনিউতে যুদ্ধের আবহাওয়া

ফরাসী সাংবাদিক আর লেখক নিকোল বু তার ব্লগে শনিবার সকালের হাবিব বুরগুইবা সড়ককে তুলে ধরেছেন, শুক্রবার রাত্রের ভয়াবহ সংঘর্ষের পরে:

” On ne reconnait plus notre Tunisie”? Ce matin samedi, un spectacle de désolation, avenue Bourguiban au centre de Tunis, où tout a été saccagé. Des casseurs? des provocateurs? Ou des jeunes en colère contre l'incapacité du pouvoir actuel à prendre simplement la parole? Une certitude, les forces de l'ordre n'ont pas fait dans le détail. Des jeunes se sont réfugiés, affolés, dans les chambres d’ hôtels. La peur était revenue.

“আমরা আর আমাদের তিউনিশিয়াকে চিনতে পারছি না?” এই শনিবার সকালে পরিত্যাগের একটা আবাহাওয়া, হাবিব বুরগুইবা এভিনিউ তিউনিস শহরতলী, যেখানে সব কিছু ধ্বংস হয়েছে, রায়টকারী? চ্যালেঞ্জকারী? নাকি ক্ষিপ্ত তরুণ বর্তমান সরকারের তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায়? একটা জিনিস নিশ্চিত, রায়ট পুলিশ বিস্তারিতের দিকে খেয়াল করেনি। চিন্তিত তরুণরা হোটেল কক্ষে আশ্রয় নিচ্ছে। ভীতি ফিরে এসেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .