চাই: সিঙ্গাপুরে আরো শিশু

সিঙ্গাপুরের জন্ম হার কমে গেছে সর্বকালের নীচে শতকরা ১.১৬ ভাগে। সমৃদ্ধিশালী এই নগর রাষ্ট্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সরকার প্রস্তাব রেখেছেন বিদেশী কর্মীদের আর বাসিন্দাদের সংখ্যা বৃদ্ধির। ব্লগারদের প্রতিক্রিয়া কি?

সিঙ্গাপুর নোটস বলছে যে বাচ্চা নেবার জন্যে প্রনোদনা বা বোনাস আবার পুনর্বিবেচনা করা দরকার:

দ্যা চিল্ড্রেন ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাউন্ট (সিডিএ) প্রনোদনা ভালো যতক্ষণ না আপনার বাচ্চা ৬ বছর হচ্ছে। ৭ বছর থেকে আপনি আপনার নিজের মতো করে হিসেব মেলতে পারবেন না- ৪ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন খুব ভালো অর্থনৈতিক সাহায্যকে ছাপিয়ে ফেলবে।

মাই লিটল কর্নার ব্যাখ্যা করেছে সন্তান বৃদ্ধির ক্ষমতা আর অফিসে বেশী কাজ করার দাবির মধ্যে বৈপরিত্য টুকু:

কোনভাবেই উর্বরতা আর কর্মযোগ্যতা এক সাথে বাড়ানো যাবে না। তারা একে অপরের বিপরীত।

সুস্থ পারিবারিক পরিবেশের মূল বিষয় হচ্ছে পরিবার। এটা কি সাহায্য করবে যে স্বামি স্ত্রী উভয়ে চাকরি করছেন নির্দিষ্ট সময়ের বেশী আর মাঝে মাঝে সপ্তাহান্তেও, আর তারা জনসংখ্যা বাড়ানোর তাড়নার মধ্যে আটকে থাকবেন যা তাদের উপরে জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে? এই ধরনের ‘বাড়তি উৎপাদনশীলতা’ বাচ্চার উপরে কি প্রভাব ফেলবে? আপনার বাচ্চা কি আপনাকে পরিবার মনে করবে যখন আপনি আসলে কাজে বেশী থাকবেন আর আপনার থেকে বেশী সে অন্যদেরকে পাবে?

জেরাল্ড গিয়াম সরকারের ‘অব্যবস্থাপনায় পূর্ণ’ অভিবাসন নীতির সমালোচনা করেছেন:

তরুণ সিঙ্গাপুরবাসীরা বেশী সন্তান না নেওয়ার পিছনে বেশ কয়েক ধরনের যুক্তি দিচ্ছেন। কাজে বেশী ব্যস্ত, জীবনধারনের খরচ অনেক বেশী, বাচ্চাদের জন্য (আর তাদের বাবা মার জন্যেও) পড়াশোনার ব্যবস্থা বেশী চাপ সৃষ্টি করে, আর নিজেদের থাকার মতো স্থান না পাওয়া। অনেক কারন বেশী ভীড় আর বেশী প্রতিযোগিতার সাথে যুক্ত, যা বেশ কিছু দূর পর্যন্ত, যা সরকারের অব্যবস্থাপনায় পূর্ণ অভিবাসন নীতির ফল।

গ্রাউন্ডনোটস মজা করে প্রস্তাব করেছেন চিড়িয়া খানাতে ব্যবহৃত প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে:

সময় হয়েছে বিশেষজ্ঞদের দেখানোর। আর আমি সস্তা ডেটিং এজেন্সি বা পয়সা নষ্ট হওয়া সিঙ্গাপুরের ডেটিং নেটওয়ার্কের কথা বলছি না। আমি আসল বিশেষজ্ঞ- চিড়িয়াখানার কথা বলছি!

বিশ্বে সব থেকে ভালো চিড়িয়াখানার ভালো পশু উৎপাদনের ব্যবস্থা আছে যেখানে সফলতা বেশ ভালো। সুন্দর আর যাদের অস্তিত্ব বিপদের সম্মুখীন এমন পশুর প্রায় বদ্ধ স্থানে প্রজনন করা কষ্টকর, কিন্তু তারা যদি আমেরিকার কন্ডোরদের সংখ্যা বাড়াতে পারে, তাহলে সিঙ্গাপুরবাসীর এখনো আশা থাকতে পারে।

দা লাইকান টাইমস সন্তান উৎপাদনের হার বাড়াবার জন্য সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে জীবন ধারনের খরচ কমিয়ে আনতে:

সংক্ষেপে, জন্মহার বাড়াবার সব থেকে কার্যকর উপায় হচ্ছে আমাদের আওতার মধ্যে বাসস্থান দেয়া আর জীবনধারনের খরচ কমিয়ে আনা। এই সব কিছুর জন্যে দরকার কঠোর শ্রম আর সুদূরপ্রসারী নীতির যা কার্যকর হতে সময় লাগবে।

কেলভিন ট্যান একই ধরনের প্রস্তাব করেছেন:

কার্যক্ষেত্রে যারা মধ্যম আয়ের লোক তাদের প্রয়োজন সন্তান জন্ম দেয়া আর মানুষ করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভর্তুকি। সিঙ্গাপুর সরকারের দরকার সন্তান হওয়ার খরচ, স্কুলের খরচ ইত্যাদি খাতে ভালোভাবে খরচ করা। বাচ্চাসহ বাব মাকে সাপ্তাহিক অর্থ দেয়া উচিত। অন্য কথায়, সন্তান হওয়ার সুবিধাগুলো খুবই আকর্ষনীয় হতে হবে। অবশ্যই এটা খরুচে একটি নীতি হবে কিন্তু এর ফল নীতির জন্য যা ব্যয় করতে হবে তার থেকে বেশী পাওয়া যাবে।

মাই সিঙ্গাপুর নিউজ লিখেছেন যে সরকারের উচিত বাচ্চাদের প্রয়োজনকে ভর্তুকি দেয়া:

যদি সামাজিক আর অর্থিক খরচ সমস্যা হয়, তাহলে এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার জাতীয় পর্যায়ে। যদি তরুণ দম্পতিদের বাচ্চা বড় করা কষ্ট মনে হয়, কার দোষ এটা? অনেক তরুণ দম্পতি ভাবছে মানুষ আর বাচ্চা মানুষ করা কতো কঠিন এই উচ্চ মূল্যের বাড়িতে। কেমন হয় যদি সরকার বাচ্চা মানুষ করার দায়িত্ব নেয়, কেবলমাত্র আর্থিক দিকটা?

ক্লাউডিউইন্ড তালিকা তৈরি করেছেন কেন বিবাহিত লোকেরা বাচ্চা নিচ্ছে না সেই কারনগুলোর:

কারন বেশীরভাগ বিবাহিত যুগল চিন্তিত যে তাদের বাচ্চাদের কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করাতে তাদের সারা রাত লাইনে দাঁড়াতে হবে
কারন অনেক বিবাহিত দম্পতি এখনো বাচ্চা হওয়ার খরচ বাঁচাচ্ছেন
কারন অনেক বিবাহিত নারী তাদের পদোন্নতির সুযোগ রাখতে চান।
কারন অনেক বিবাহিত নারী তাদের চাকুরি রাখতে চান।
কারন অনেক বিবাহিত দম্পতি বেশি সময় কাজ করছেন সস্তা, ভালো আর দ্রুত হওয়ার জন্য।
কারন অনেক অবিবাহিত যুগল তাদের সামর্থের মধ্যে কোন ফ্ল্যাট ভাড়া পাচ্ছেন না।
কারন অনেকে সিঙ্গাপুরে জন্ম নেয়া মেয়ে বা ছেলে বন্ধু পাচ্ছেন না।

থাম্বনেইল ছবিটি চিবিফাইড এর টুইটপিক পাতা থেকে নেওয়া।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .