ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার অদৃশ্য সীমান্ত

কলম্বিয়া-ইকুয়েডর সীমান্ত আবারো বিরোধপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে ৫৮৬ কি:মি: (প্রায় ৩৬৫ মাইল) সীমানা রয়েছে। দেশ দুটির মধ্যে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ, পারস্পারিক অভিযোগসশস্র সংঘাত এবং শরণার্থীর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কলম্বীয় বিদ্রোহী দল ফার্ক (রেভুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া) এর সদস্য রাউল রেস এর মৃত্যু সম্ভবত: সীমান্তের সর্বজনবিদিত ঘটনা। বিসি১০ এর ভাষ্য [স্প্যানিশ ভাষায়] অনুযায়ী ২০০৮ সালের মার্চে ইকুয়েডর সীমানায় আনগস্তুরার ফার্কের বেস-এ কলম্বিয়ার আক্রমণে রেস নিহত হন। এল রাদার দো লা ফ্রন্টেরা –এর [স্প্যানিশ ভাষায়] প্রতিবেদনে বলা হয় সীমান্তে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়। লা হিসটোরিয়া দেল দিয়া [স্পেন] ব্লগে বলা হয় শাস্তি বিহীন পরিবেশে ঐ এলাকায় অপরাধ সংগঠিত হয়।

সেপ্টেম্বর ১৯ তারিখ রবিবারে উভয় দেশের টু্ইটার ব্যবহারকারী গণ এবং সংবাদপত্রগুলো সীমান্তের সর্বশেষ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে। কলম্বীয় সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণে ফার্ক সদস্যদের  মৃত্যুর বিষয়ে ইনফোবে.কম বলে [স্প্যানিশ ভাষায়]: “ইকুয়েডর ও কলম্বিয়া সীমান্তে ৬০ জন গেরিলা নিহত হয়েছেন।

ইকুয়েডর পক্ষে এর প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। টু্ইটার ব্যবহারকারীগণ এ ধারণার বিরোধীতা করে বলেন ইকুয়েডর কলম্বীয় সেনাদের সমর্থন করেনি। এর পক্ষে ডগলাস ওয়েবার (@এইচসিজেবিভোজআন্দেজ) এক লিংকে বলেন

Ecuador reitera que no se involucra en conflicto colombiano. http://bit.ly/9aPjSg

ইকুয়েডর আবারো বলেছে যে তাঁরা কলম্বীয় সংঘাতে জড়িত নয় http://bit.ly/9aPjSg

হেলি রোজাস (@সিসমায়া)  কলম্বিয়া থেকে রিপোর্ট করেন:

Ecuador no reporta novedad en frontera y dice no ayudó Colombia en operativo. http://bit.ly/coQiRY

সীমান্তের বিষয়ে ইকুয়েডর নতুন কিছুই বলেনি শুধু বলেছে তাঁরা কলম্বীয় অভিযানে সহায়তা করেনি।http://bit.ly/coQiRY

লুই আলোনসো লুগো ইকুয়েডরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জাভিয়ের পনস সেভালোস এর কথাগুলোকে পরিস্কার করে ব্যাখ্যা করেন [স্প্যানিশ ভাষায়]। সেভালোসকে  কলম্বিয়া-ইকুয়েডর সীমান্ত রক্ষার জন্য কলম্বিয়াকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্র থেকে  বলা হয়। আলোনসো লুগো বলেন, “পনস ব্যাখ্যা করে বলেন যে, কলম্বিয়াকে সহায়তা করা জুরি এ কারণে যে, দুদেশের সীমান্তে কলম্বীয় সংঘাতে বেঁচে থাকা ১৪০,০০০ শরণার্থীর জন্য কলম্বিয়া ইকুয়েডরের উপর ‘যে পরিমান চাপ’ প্রয়োগ করে তাতে ইকুয়েডরকে বছরে ১০,০০০ সৈন্য ‘যা সর্বমোট সৈন্যের এক তৃতীয়াংশ’ প্রতিপালনের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়।

অদৃশ্য সীমান্ত: সহিংসতা ও স্থানান্তরকরণ

সীমান্তে এ ধরণের সংঘাতের প্রভাব বহুবিধ। সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ফলে সীমান্তে এক ধরণের নো ম্যানস ল্যান্ডের সৃষ্টি হয়েছে। ব্লগ পেরিওডিসমোডিফ্রনটেরা [স্পেন] (সীমান্তবিহীন সাংবাদিকতা) এর প্রতিবেদন:

Dentro del análisis de problemas de la frontera norte llevado a cabo a través de las entrevistas y talleres en las tres provincias ecuatorianas de Carchi, Sucumbíos y Esmeraldas, no podemos dejar de remarcar una problemática de elevada importancia y que, en muchas ocasiones, no tiene una gran presencia en los medios de comunicación, pero que repercute en la base del desarrollo social de estas comunidades. Nos estamos refiriendo a la situación en la que se encuentra la infancia en la frontera norte y sobre todo a su vinculación a dos elementos de gravedad: el trabajo infantil y la trata y tráfico de niños y niñas.

উত্তর সীমান্তের ইকুইডরের তিনটি প্রদেশ কার্চি, সুকুম্বিওস এবং এসমারেল্ডাস-এ সাক্ষাতকার ও কর্মশালার মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলোর বিশ্লেষণ করা হয়। এখানে যে সমস্যাগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয় সে সমস্যাগুলো ইতঃপূর্বে কখনো পত্রিকায় আসেনি কিন্তু ঐসব প্রদেশের সমাজগুলোর সামাজিক উন্নয়নে বিষয়গুলো বারবার প্রভাব বিস্তার করে। উত্তর সীমান্তের শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আলোকপাত করতে চাই। বিশেষতঃ দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: শিশুশ্রম ও যৌন সেবা এবং শ্রমের উদ্দেশ্যে শিশু পাচার।
Binational movement of women against war. Colombia-Ecuador border." Image by Flick user  padawan used under an Attribution-ShareAlike 2.0 Generic Creative Commons license
“যুদ্ধ বিরোধী নারীদের দ্বি-জাতিক আন্দোলন। কলম্বিয়া-ইকুয়েডর সীমান্ত। ছবি ফ্লিক ব্যবহারকারী পাদাওয়ান এর সৌজন্যে – অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার এলাইক ২.০ জেনেরিক ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে ব্যবহৃত।

শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ কার্যালয়, কুইটো, ইকুয়েডর –এ কর্মরত সহকারী পরিচালক লুই ভার্সি বলেন [স্প্যানিশ ভাষায়], প্রতি সপ্তাহে ৫০ টি কলম্বীয় পরিবার সশস্ত্র দলের হাত থেকে তাঁদের সন্তানদের বাঁচাতে ইকুয়েডরে প্রবেশ করে। তিনি বলেন, “নিরবতা”। “তাঁরা বারো বছর বয়সী বালকদের সশস্ত্র দলে যোগ দিতে বাধ্য করে” আর মেয়েদের “যুদ্ধের পুরষ্কার হিসাবে যৌন পেশায় ব্যবহৃত হওয়ার জন্য মুদ্রা হিসাবে ব্যবহার করে। আদিবাসী জনগণ যাদের জঙ্গল সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে তারাও বিশেষ গুরুত্ব পায়।”

সিউদাদানিয়া ইনফরমাদা [স্প্যানিশ ভাষায়] প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে, যে সব শিশুর পিতামাতা আলাদা আলাদা দুটি দেশের নাগরিক সে সব শিশুদের কোন দেশেরই নাগরিকত্বের অধিকার নেই। ইউনিসেফ-এর সঙ্গে সংযুক্ত কুয়াদির্নো দে তেরেনো ব্লগে নাতালিও কারাসকো বলেন [স্প্যানিশ ভাষায়], আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য অথবা সৈনিক হিসাবে কোন দলে ভর্তি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে যে সব শিশুরা তাদেঁর পরিবার বিচ্ছিন্ন অথবা যেসকল শিশু তাঁদের কলম্বীয় পিতামাতাবিহীন সে সব শিশুদের ইকুয়েডরে আশ্রয় নিতে হবে। তা না হলে তাঁরা  তাঁদের চোখের সামনে পরিবারের সদস্যদের নিহত হতে দেখবে।

Es muy probable que las experiencias vividas por estos menores dejen profundas huellas tanto psicológicas como físicas en su desarrollo. En el caso de las niñas, adolescentes y mujeres, aunque los varones no quedan exentos, tienen el peligro de sufrir abusos y de caer en redes explotación sexual comercial y trata de personas.

এটা খুবই সম্ভব যে, শিশুরা যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছে তা তাঁদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে প্রভাব ফেলবে। মেয়ে, বয়:সন্ধিকালীন শিশু, নারী এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষদেরও মানব পাচারকারীদের হাতে পরার এবং অপব্যবহারের শিকার হওয়ার ভয় রয়েছে।

স্থানীয় জনগণ ও আদিবাসীদের সংগঠন ভোলতেয়ার প্রতিবেদনে বলে [স্প্যানিশ ভাষায়]:

Los que en la frontera norte del Ecuador habitamos procedemos de las zonas más empobrecidas del Ecuador y Colombia, llegamos a esa zona luego de grandes esfuerzos, atravesando penurias, buscando días mejores para nosotros y nuestros hijos, algo parecido sucede con los pueblos hermanos de Colombia. Quienes habitamos en la zona de frontera norte de Ecuador y sur de Colombia estamos siendo objeto de atropellos a nuestros derechos humanos y ciudadanos contemplados en la Constitución ecuatoriana vigente y los convenios suscritos por el Ecuador a nivel internacional, solo por el hecho de vivir en la zona fronteriza .

আমরা যার ইকুয়েডরের উত্তর সীমান্তে বাস করি তাঁরা প্রত্যেকেই ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার দরিদ্র পীড়িত অঞ্চল থেকে আসা। নানারকম ঝুকি ও ঝামেলার মধ্য দিয়ে আমাদের সন্তানদের জন্য সুদিনের প্রত্যাশায় আমরা এ এলাকায় আসি। আমাদের কলম্বীয় ভাইয়েরাও একই ধরণের সমস্যায় ভুগে। আমরা যারা ইকুয়েডরের উত্তর সীমান্ত এবং কলম্বিয়ার দক্ষিণ সীমান্তে বাস করি তাঁদের মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার রয়েছে। এ বিষয়ে সাংবিধানিক অধিকারসহ ইকুয়েডরে আন্তর্জাতিক চুক্তি থাকলেও সীমান্তে বসবাসকারীদের জন্য পায়ে মাড়িয়ে যাওয়া হয়।

এ পরিস্থিতিকে সারভিন্ডি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রতিবেদনে বলেন [স্প্যানিশ ভাষায়] “ইকুয়েডর সীমান্তের নিকটবর্তী গুয়াচুয়াল শহরের কাছে গ্রামীণ এলাকায় ২৮ আগস্ট আদিবাসী নেতা রামিরো ইনামপিউস এবং তাঁর স্ত্রী মারিয়া লিনা গালিন্ডেজ কে হত্যা করা হয়।”

ওয়েবসাইট লা সিল্লা ভাসিয়ার ফোরামে পিও এলাকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিয়ে ব্যাখ্যা করেন। ফোরাম ব্যবহারকারীগণ এল করিডোর সার নামক সড়ক তৈরির সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন[স্প্যানিশ ভাষায়]।

Es necesario aclarar que la única etnia en peligro de extinción con este proyecto no son solos los Kofanes, también los Macaguajes (quedan menos de 50), los Sionas, los Coregüajes y en menor medida los Ingas del bajo putumayo. Todos ellos relictos de la cultura Ayahuasquera y su legado espiritual.

দুদেশের মধ্য দিয়ে যাওয়া এ সড়ক প্রকল্পটি আদিবাসী জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এ প্রকল্পটি শুধুমাত্র কোফানেস আদিবাসীদের ঝুকিপূর্ণ করবেনা মাকাগুয়াজেস (৫০ জনের নিচে), সিওনাস, কোরেগুয়াজেস এবং ছোট পরিসরে বাজো পুটুমায়োর ইনগাসরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।এ আদিবাসীরা প্রত্যেকেই আয়াহুয়াসকুয়েরা সংস্কৃতি এবং আধ্যাতিকতার উত্তরাধিকারী।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .