তিউনিশিয়া: দয়া করে বিশ্বকে জানান যে কাসেরিন মারা যাচ্ছে!

বাকী বিশ্বকে তিউনিশিয়ায় চলতে থাকা হত্যাযজ্ঞের ঘটনা তুলে ধরার জন্য তিউনিশিয়ার নেট নাগরিকরা দিন রাত ধরে কাজ করে যাচ্ছে। যার শুরু সিদি বোউজিদ নামের শহরের এক যুবকের বেকারত্বের বিরুদ্ধে করা প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে। গত মাসে ২৬ বছর বয়স্ক তিউনিশিয়ার এই নাগরিক প্রতিবাদ স্বরূপ নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, যে ঘটনায় পুরো দেশ জ্বলে উঠে। ঘটনাটি সারা দেশ জুড়ে এক প্রতিবাদের সৃষ্টি করে।

যদিও প্রতিবাদকারীরা কর্তৃপক্ষের প্রচন্ড চাপের মুখে রয়েছে- এবং সাইবার এক্টিভিস্টরাও একই বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু তারপরে ছবি, নিপীড়নের স্বীকার ব্যক্তির নিজস্ব ঘটনার বর্ণনা এবং ভিডিও, প্রতিদিনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দৃশ্য অনলাইনে তুলে ধরছে।

আজকের সংবাদে জানা যাচ্ছে যে রাজধানী তিউনিস থেকে ২০০ কিলোমিটার অবস্থিত তালা এবং কাসেরিন অঞ্চলে অন্তত ২০ জন লোক মারা গেছে-এবং এই ঘটনায় টুইটার জগৎ যেন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

আজ সকালে আমি মাইক্রো ব্লগিং সাইট থেকে এই আবেদনটি লাভ করেছি:

@আমিরার মত@গ্লোবাল ভয়েস, দয়া করে সবাইকে জানান যে কাসেরিন মারা যাচ্ছে

#সিদিবোউজিদ হ্যাশট্যাগে দ্রুত অনুসন্ধান চালালে, সব ভয়াবহ ঘটনার গল্প এসে সামনে হাজির হবে- সারা বিশ্বের সজ্জন নাগরিকদের এক করার জন্য এই হ্যাশট্যাগের ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিউনিশিয়া ভিত্তিক এসবিজেড_নিউজ টুইট করেছে:

তালার ভেতর থেকে পাওয়া এক সংবাদ অনুসারে, পুলিশ আহত নাগরিকদের সরিয়ে নেবার কাজে বাঁধা দেয়।#সিদিবোউজিদ।

এবং এখানে প্রশ্ন করা হয়েছে:

الى سيادة المفتي: شنوّا حكم قتل طفل-13 ربيعا- برصاصة في الرأس على يد الشرطة؟
মুফতি নামক সর্বোচ্চ ধর্মীয় বিচারকের প্রতি প্রশ্ন, যে পুলিশ এক ১৩ বছরের শিশুকে-সরাসরি মাথায় গুলি করে হত্যা করে, তার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান কি?

এছাড়াও তিনি এক ভিডিওর লিঙ্ক যুক্ত করেছেন, যে ভিডিওটি ফেসবুকে উঠানো হয়েছে, এই ভিডিও প্রদর্শন করছে যে, পুলিশরা প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে তাজা বা প্রকৃত গোলাবারুদ ব্যবহার করেছে:

তিউনিশিয়ার পুলিশ বাহিনী কাসেরিনে বুলেট ব্যবহার করেছে।

নাওয়াত নিজেও ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, যে ভিডিও প্রদর্শন করছে, কি ভাবে পুলিশ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার করছে:

তালার রাস্তায় পড়ে থাকা এক মৃত তিউনিশিয় বালক। ছবি নাওয়াত-এর

টুইটারে, নাওয়াত বাছবিচারহীন মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা তুলে ধরে, একটি মৃত বালকের ছবি প্রদর্শন করে, যে বালকটিকে তালার রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়:

তিউনিশিয়া (তালার )রাস্তায় পড়ে থাকা এক মৃত বালক।০৯.০১.২০১০

নাওয়াত এর সাথে যোগ করেছে, এমনকি মনে হচ্ছে মৃতদেহ এখানে নিরাপদ নয়:

اخبار مؤكدة 100% عن اطلاق رصاص حي على موكب جنازة لاربعة شهداء سقطوا البارحة في تالة و تفرقت الجنازة تركت النعوش لوحدم في الشارع #sidibouzid
গত রাতে যে চারজন ব্যক্তি শহীদ হয়েছে, তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে বুলেট ছোড়ার ঘটনা ১০০ ভাগ সত্য। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং শব-গুলো রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।

ফ্রাই-ইস এর সাথে যোগ করেছে:

তিউনিশিয়ার টেলিভিশনে নাগরিক এবং সাংবাদিকরা ডক এবং ভবন ধ্বংস হবার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে। #তিউনিশিয়া কেবল জীবন সস্তা। /@#জিজো#সিদিবোউজিদ।

কিন্তু তিউনিশিয়ার নাগরিক ইয়োসেফ ৩আল-৭ইট, এর কাছে মনে হচ্ছে, দিগন্তে আশার আলো দেখা যাচ্ছে:

ما عادش تقولوا تونس تحتضر راهو موش إحتضار أما صرخة آلام ولادة الرجال
আপনি আর বলতে পারবেন না যে, তিউনিশিয়া মারা যাচ্ছে। মৃত্যু দেখতে যেমন এটা আসলে তেমন নয়, এটা এক প্রসূতির যন্ত্রণার কান্না. যে এক পুরুষকে জন্ম দিয়েছে।

তিউনিশিয়ার সরকারের, নিজ জনতার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা, সারা বিশ্বের নাগরিকদের মাঝে এক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

আজকের ঘটনার প্রতিক্রিয়া, সাউদি এসাম আল জামিল টুইট করেছে:

الجزيرة: عشرون قتيلا اليوم في مظاهرات تونس (يبدو أن الحكومة التونسية الجبانة بدأت باستخدام القتل لارهاب الشعب)

আল জাজিরার সংবাদ অনুসারে আজকে তিউনিশিয়ার প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় ২০ জন লোক মারা গেছে। মনে হচ্ছে যে তিউনিশিয়ার কাপুরুষ সরকার লোকজনকে আতঙ্কগ্রস্ত করার জন্য মানুষ মারার বিষয়টিকে আবার চালু করেছে।

দিমা থাতিব আরো যোগ করেছেন:

النظام في تونس وقع أمس شهادة بداية النهاية لنفسه. دماء ضحايا القمع في القصرين وتالة فرضت نفسها على وسائل الإعلام. انتهى الصمت
তিউনিশিয়ার শাসকরা গতকাল তাদের শাসনের সমাপ্তিতে স্বাক্ষর করেছে। কাসেরিন এবং তালার শিকার নিষ্পাপ মানুষগুলোর রক্ত, তাদের সংবাদকে মূল ধারার প্রচার মাধ্যমে উঠিয়ে এনেছে। নিরবতা ভঙ্গ হয়েছে।

এবং ভদ্রমহিলা এর সাথে যোগ করেছেন:

يبدو أن وسائل الإعلام العالمية لا تحلو لها الأخبار إلا عندما تأتي ملطخة بدماء الأبرياء. خرجت من صمتها حول انتفاضة تونس بالإجبار
মনে হচ্ছে যে আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম যতক্ষণ না করো দেহ থেকে রক্ত ক্ষরণ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সংবাদ প্রদান করবে না। তিউনিশিয়ার জাগরণ তাদের নিরবতা ভঙ্গ করতে বাধ্য করছে।

তিউনিশিয়া কি ঘটছে সেই সমন্ধে নাগরিকদের তোলা আরো ভিডিও দেখতে চাইলে এখানে নাওয়াত এর ইউটিউব ভিডিও চ্যানেলে প্রবেশ করুন অথবা তিউনিশিয়ানস বা এখানে ভিমিও-তে প্রবেশ করুন।

ফেসবুক পাতায়, তিউনিশিয়াকে স্বাধীন কর (লিবারেটেড তিউনিশিয়া) নামের এক পাতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন তিউনিশিয়ায় কি ঘটছে তার তাজা সংবাদ এবং একই সাথে ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের ছবি তুলে ধরা হচ্ছে। জনাব রাষ্ট্রপতি, তিউনিশিয়ার জনগণ আজ নিজেদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেফেসবুকের আরেকটি গ্রুপ। এই গ্রুপ তিউনিশিয়ার জনগণের এই লড়াইয়ের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .