যেমনটা আমরা এই ব্যস্ত বছরের অতিবাহিত করলাম এবং বছরের ১২ মাসের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করেছি, আমরা সকলে সবসময় যা ধারণা করেছিলাম আমরা নিশ্চিত করেছি সক্ষম হয়েছি: ২০১০ সাল গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য এক অসাধারণ বছর! আমাদের সংগঠন- যা ১১ ডিসেম্বর তারিখে তার ষষ্ট জন্মবার্ষিকী পালন করল- তা বিগত ১২ মাসে কয়েকটি বিস্ময় এবং সৃষ্টিশীল বিষয় প্রদান করেছে: আমরা কৌতহলজনক নতুন প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্টনারশীপ বা অংশীদার অর্জন করেছি, আমাদের গবেষণার দক্ষতা বৃদ্ধি করেছি এবং, যে আমরা আমাদের বহুভাষিক সাইট সমূহের ভেতরের উপাদানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ পরিবর্তন সাধন করেছি। এবং যখন তারা তাদের সাইটের জন্য কোন উপাদান প্রদান করে না, তখনো আমাদের শ্রান্তিহীন সম্প্রদায় তাদের নিজের অঞ্চলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে থাকে, তারা বিশ্বে তাদের পদচিহ্ন তৈরি করে সৃষ্টিশীল নতুন চিন্তা এবং অর্থপূর্ণ নাগরিক প্রচার মাধ্যমের প্রকল্পের মাধ্যমে।
২০১০ সালে “জিভারসের” (গ্লোবাল ভয়েসেস সম্প্রদায়ের লোকজন) বেশ কয়েকটি গ্রুপ তথ্য অধিকার প্রদানকারী স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে মিলে কয়েকটি প্রকল্প চালু । আমাদের ব্রাজিলের দল “এলিটর ২০১০” তৈরি করে। এটি সেদেশে অনুষ্ঠিত ২০১০ সালের অক্টোবর মাসের সাধারণ নির্বাচণ যা প্রভাবিত করছে, সেই সমস্ত ঘটনাবলিকে অনুসরণ করার জন্য তৈরি করা হয়। পাকিস্তানের আওয়াব আলভি, সানা সালিম, সালমান লাতিফ এবং পাকিস্তান টীমের অন্যরা বন্যা উপদ্রুত এলাকায় যায়, যাতে তারা ত্রাণ প্রচেষ্টায় সাহায্য করার জন্য এবং পাকরিপোর্ট.অর্গ নামের সাইট তৈরি করে। বন্যার মানচিত্র তৈরি করা এবং কোথায় কোথায় ত্রাণের প্রয়োজন এবং সেই ভাবে সাড়া প্রদানের ব্যাপারটি চিহ্নিত করার জন্য তারা এটি তৈরি করে। অননিক ক্রিকোরিয়ান ‘ককেসাশ কনফ্লিক্ট ভয়েসেস’ নামের বিশেষ বিভাগ চালু করে এবং সেখানে এক পরিবেশ তৈরি করে। এখানে বেশ কিছু প্রশিক্ষণের এবং বক্তৃতার ব্যবস্থা করা হয়, যা ছিল ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে এই এলাকার শান্তির পথে অগ্রগতি সৃষ্টির প্রচেষ্টা। আমাদের রুনেটইকো প্রকল্পের এ্যালেক্সেই সিডেরঙ্কো এবং জর্জি আসমালোভ রাশিয়ান-ফায়ার.রু সৃষ্টি করেছে। এটি গ্রীষ্মে রাশিয়ার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মানচিত্র এবং নাগরিক ত্রাণ প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন করার জন্য করা হয়েছিল-তারা তাদের প্রচেষ্টার জন্য এক সম্মানসূচক পুরষ্কার লাভ করেছে।
গ্লোবাল ভয়েসেস-এর টেকনোলজি ফর ট্রান্সপারেন্সির নেটওয়ার্ক এক নতুন গবেষণা প্রকল্প, যা এ বছর চালু করা হয়েছে। যা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত প্রকল্পের নথি সংগ্রহ করে, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এ বছর দি ইকোনমিস্ট এবং ইতালির দৈনিক লা স্টাম্পার সাথে নতুন পার্টনারশীপ তৈরি হয়েছে এবং রাশিয়ার রেডিও স্টেশন ইকো মস্কোভির সাথে একই ধরনের পার্টনারশীপ গঠিত হয় এবং মে মাসে বিবিসি অনলাইনের সাথে আমাদের এক প্রাথমিক প্রকল্প শুরু হয়, যা নতুন পাঠকদের কাছে আমাদের কাজকে পৌঁছে দেবে । ২০১০ সালে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের কাঠামোয় খানিকটা পরিবর্তন আনি, যাতে কেবল ইংরেজী নয়, আরো অনেক ভাষার মূল প্রকাশনা সেখানে প্রকাশ করা সম্ভব হয়।
২০১০ সালে গ্লোবাল ভয়েসেস এর প্রতিষ্ঠাতা রেবেকা ম্যাককিন্নন এবং ইথান জুকারম্যান আরো প্রমাণ প্রদান করেন যে কেন তারা বিশ্ব ইন্টারনেটের নেতৃস্থানীয় । ইথান একটি টেড টক (টেকনোলজি এন্টারটেইনমেন্ট এন্ড ডিজাইন) নামক ভাষণ প্রদান করেন, যা নিখুঁতভাবে গ্লোবাল মিডিয়া এবং নাগরিক প্রচার মাধ্যমের বাড়তে থাকা প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরে। অজস্র জনতার সামনে দৃশ্যমান হবার ও ওয়ালস্ট্রিটের মত পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখার পর রেবেকা এ বছর তার বই কনসেন্ট অফ দি নেটওয়ার্কের জন্য কাজ শুরু করেছেন। এটি সচেতন নাগরিকের জন্য ভবিষ্যৎ-এ ইন্টারনেটের স্বাধীনতার পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।
সম্প্রদায়ের মধ্যে এবং বাইরে নানা কাজের মাধ্যমে তৈরি হওয়া আমাদের নানা সফলতা সত্ত্বে, দেখা যাচ্ছে এ বছরও সারা বিশ্বে নাগরিক প্রচার মাধ্যম হুমকির মধ্যে রয়ে গেছে, এবং ২০১০ সালকে অনলাইন স্বাধীনতার উপর আক্রমণের বছর হিসেবে দেখা হয়। আযারবাইজেনের ব্লগার এমিন মিলি এবং আদনান হাজিজাদেকে হয়ত সাময়িক মুক্ত করা হয়েছে এবং ১৪৭০ দিন কারগারে আটকে রাখার পর অবশেষে কারিম আমেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, কিন্তু অনলাইনে দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করার ফলে যারা এ বছরও জেলে রয়ে গেছে তাদের মধ্যে আমাদের বন্ধু এবং গ্লোবাল ভয়েসেস এর লেখক বাহরাইনের আলি আবদুলইমাম এবং আমাদের প্রাক্তন সহকর্মী ইরানের হোসেন দেরেকশান রয়েছেন। উভয়ে এখনো কারাগারে বন্দি রয়েছে।
কারিম, এমিন, আদনান, হোসেন এবং অন্য অনেকের দুর্দশা, যা আমাদের থ্রেটেন ভয়েসেস প্রকল্পে দেখতে পাচ্ছি, তা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, যে বিশ্বের অনেক দেশে মুক্ত প্রকাশভঙ্গি এখন এক সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। উইকিলিকসের প্রতি যে ভাবে সাড়া পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে অনলাইনে ভাষণের স্বাধীনতা (অনলাইন ফ্রিডম স্পিচ) নামক বিষয় এখন বিশ্বের সকল দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের বিষয়।
এই মাস যত শেষ হয়ে আসছে, ২০১০ সালের শেষ দিনগুলো ততো ঘনিয়ে আসছে, এই বছর যে কাজ করেছি তার প্রতি ক্রমাগত সমর্থনে প্রদান করা এবং এগুলো নির্মাণ করা জন্য বিশেষ আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের সম্পাদক, লেখক, এবং অনুবাদকেরা একটি মাসের শত শত ঘন্টা ব্যয় করেছে তাদের দেশের এবং অঞ্চলের নাগরিক প্রচার মাধ্যমের তথ্য সমন্বয় সাধন করার জন্য, সবচেয়ে দমিত স্বরকে নির্বাচন করছে এবং সূচির মধ্যে এনেছে, তারা সব ঘটনা এবং চিন্তা তুলে এনেছে এই কারণে যে, আমরা যে বিশ্বে বাস করি তাকে পরিপূর্ণ করা চিত্র তৈরিতে এটি সাহায্য করবে ।
যদি আপনি বিশ্বাস করেন, আমরা যা করছি তা বিশ্বকে সমৃদ্ধ করছে, তাহলে আমাদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করুন অথবা খুব সাধারনভাবে আপনার বন্ধু এবং পরিবারকে আমাদের সাইটের ব্যাপারে গাইড করুন এবং আমাদের লেখা প্রদর্শন করে এবং মন্তব্য করে আমাদের সাহায্য করুন। সবচেয়ে বড় কথা দয়া করে ২০১১ সালকে ২০১০ সালের মত স্মরণীয় এবং রোমাঞ্চকর করার জন্য আমাদের সাথে যোগ দিন!
- ইভান সিগাল এবং জর্জিয়া পপ্লেওয়েল।