ফিলিপাইন্স: নৃত্যরত বিমানবালারা

ইউটিউবের সাম্প্রতিক একটি হিট ভিডিও হচ্ছে ফিলিপাইন্স এর একটি বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার বিমানবালাদের চটুল সঙ্গীতের তালে নৃত্যের মাধ্যমে বিমানের নিরাপত্তার ব্যাপারটি অবহিত করা।

একজন বিমান কর্মকর্তার উদ্ধৃতি অনুযায়ী নৃত্যের মাধ্যমে বিমানের নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রদর্শন সেবা এবং বিনোদনকে একীভূত করার একটি মাধ্যম মাত্র।

“নৃত্যের মাধ্যমে বিমানের যাত্রীদেরকে নিরাপত্তার ব্যাপারে অবহিত করা আমাদের দেশীয় প্রতিভা এবং বিনোদনমূলক সংস্কৃতির একটি বাহ্যিক প্রকাশ। বিশ্বব্যাপী বিমান যাত্রীদের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে আমরা এই পরিবেশনাটি আরও বেশী পরিমানের ফ্লাইটে শুরু করার আশা রাখি।”

সেবু প্যাসিফিক ফিলিপাইন্স এর একটি কম পয়সার বিমান পরিচালনা সংস্থা যারা স্থানীয় বিমান পরিসেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তবে বিমান বালা ও স্টিউয়ার্ডদের একটি সংস্থা এই পরিবেশনা এবং তার ভিডিওর বহুল প্রচার নিয়ে শংকিত

প্রথম দৃষ্টিতে এটিকে দর্শকদের আকৃষ্ট করার একটি কৌশল বলে মনে হতে পারে, তবে এর ফলে ভবিষ্যৎে বিমানবালাদের বিনোদনদাত্রী হিসেবে ভাবার অবকাশ রয়েছে যাত্রীদের ভেতরে।

এই লিঙ্গবৈষম্যকারী পরিবেশনা ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকের দিনগুলোর কথা স্বরণ করিয়ে দেয় যখন বিমানবালারা ছোট স্কার্ট বা প্যান্ট পরে পুরুষ বাণিজ্যিক যাত্রীদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করত। আর যাত্রীদের সামনে তাদের নাচতে বাধ্য করা এটিকে আরও খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যায়।

৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে এই পোস্ট লেখার সময় এই ভিডিও ৬,৮৬৬,০০৬ বার দেখা হয়েছে। এটি ইতিমধ্যে অনেক ইউটিউব পুরস্কারও পেয়েছে, যেমনটি টেকপিনাস জানিয়েছে

এই ভিডিওটি ইউটিউব, ফেসবুক আর টুইটারে অনেক ভাল অথবা ঋণাত্মক মন্তব্য পেয়েছে। অনেকেই নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রদর্শনে নতুনত্ব আনায় বিমানবালাদের প্রশংসা করেছেন। তবে এই ভিডিওর বিপক্ষে মন্তব্যকারী অনেকেই লিঙ্গবৈষম্যের এবং যৌনআবেদন ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ফেসবুকে কিছু মন্তব্যের উদাহরণ:

স্যামুয়েল রাতের্তা আমি এটি পছন্দ করেছি। বিমানবালাদের এই অভিনব প্রদর্শনের সময় যাত্রীরা আরও মনোযোগী হয়েছে নিরাপত্তার বিষয়গুলো সম্পর্কে। আর তারা শুধু শুরুতেই নেচেছে – বাকী সময় নয়।
প্রিন্স ভালদেজ মেনে নিন যে যৌনআবেদন কাটতি বাড়ায়…
টিনে সাবিলো যৌনআবেদন কাটতি বাড়ায়… কারন আমরা এরকম সস্তা বিপণন প্রচেষ্টাগুলোকে পাত্তা দেই। আর হ্যা, অনেক বিমানবালারা এত কমবয়সী নয়। তারাও সমান অধিকারের জন্যে লড়ছে। তারা সবাই নিরাপত্তা কর্মী, সুন্দরী প্রতিযোগীতার মডেল নয়। বিমান বালারা দেখতে সুন্দর হোক বা না হোক যাত্রীরা বিমানে চড়বে – কারন ভ্রমণ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যাপার। কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ ও বয়স বৈষম্যের প্রতি না বলুন।
মাবেল বালান্কুইত এটা নিয়ে এত শোরগোল কেন? এটি খুব সুন্দর উদ্যোগ। এটি বিনোদনমূলক 🙂
রে রেফ্রান ‎”১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকের দিনগুলোর কথা স্বরণ করিয়ে দেয় যখন বিমানবালারা ছোট স্কার্ট বা প্যান্ট পরে পুরুষ বাণিজ্যিক যাত্রীদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করত” — আমি একটি উদ্বেগজনক তুলনা দেখছি।

থাম্বনেইল ছবিটি জর্জপারিল্লার ফ্লিকার পাতা থেকে নেয়া এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স এট্রিবিউশন্স ২.০ লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .