মরোক্কো: রমজান মাসের দিনলিপি

মরোক্কোতে, বাকি ‘মুসলমান’ বিশ্বের মতো রমজান মাস শুরু হয়েছে আর এরই সাথে ব্লগাররা তাদের অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন। কেউ যদি মরোক্কোর সাথে পরিচিত হন, আর তারা রোজা রাখেন বা না রাখেন- তারা যদি দেশে বসবাসকারী বিদেশী হন, বা বিদেশে থাকা মরোক্কোবাসী, বা কেউ একজন যার সৌভাগ্য হয়েছে ইফতারে দাওয়াত পাওয়ার- তারা জানেন যে রমজান মাস শান্তির সময় চিন্তা করার আর সমাজের কথা ভাবার।

দ্যা ভিউ ফ্রম ফেজ যেই ব্লগ মরোক্কোতে বিদেশীদের একটি গাইড হিসাবে কাজ করে, তার পাঠকদের রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছে এই চিত্র দিয়ে:

রমজান

এই ব্লগ আরো জানিয়েছে যে দেশের বেশ কয়েকটা মসজিদ বন্ধ করা হবে শীঘ্রই মেরামতের জন্য (গত বছর একটা মিনার ভেঙ্গে পড়ে যাতে কয়েক ডজন লোক মারা যান), দুর্ভাগ্যজনকভাবে পবিত্র মাসেই এটি করতে হচ্ছে:

এখন গবেষণা শেষ হয়েছে আর কাজ শুরু হবে। ঘোষণা করা হয়েছে যে সরকার ১,২৫৬টি মসজিদ বন্ধ করবে যাদেরকে ‘অনিরাপদ’ ঘোষণা করা হয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে যে ৫০০টির উপরে মসজিদ পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলা হবে আর পুনর্নিমাণ করা হবে। এই সময়ে তাঁবু দেয়া হবে প্রার্থনার জন্য।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা দেশের ৪৮,০০০ টির বেশী মসজিদের মধ্যে ১৯,০০০ এরও বেশী মসজিদ পরিদর্শন করেছে। ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন কাজের জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছে যার মাধ্যমে ৫১৩ টা মসজিদ ভেঙ্গে পুনর্নিমাণ করা হবে।

মরোক্কোতে বসবাসকারী বিদেশীরা প্রায়শ:ই রমজান মাসকে বেশী কষ্টকর মনে করেন। ফ্রম দা কোল্ড ল্যান্ড উইথ দ্যা হট সান ব্লগের লেখক একজন পিস কর্প স্বেচ্ছাসেবী জানিয়েছেন যে এই কষ্ট মুসলমানদের সম্পর্কে নতুন করে শ্রদ্ধা জাগায়। এই ব্লগার লিখেছেন:

আমি এক ধরনের হালকা রোজা করছি; যদিও দিনের বেলা আমি কোন খাবার খাইনা, আমি বাড়ির ভিতরে পানি খাই। এর থেকে বিরত থাকা একেবারে কষ্টকর হবে। কোন খাদ্য ছাড়া ১২ ঘন্টা বা এমন কিছু অসুবিধাজনক ঠিকই হবে, কিন্তু পানি ছাড়া থাকা আসলেই কষ্টদায়ক, আর সহ্যের আসল পরীক্ষা। তবে চারিদিকে লোকদের দেখলে কেউ বুঝবেন না। আগের দুই রমজান আমি যে এখানে ছিলাম, আমি মরোক্কোবাসীদের অনুভূতি দেখে অবাক হই যারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে থাকেন, প্রায় গ্রীষ্মের ঝাঁঝালো রোদে। বিশেষ করে নারীদের কথা উল্লেখযোগ্য যারা বিকালের খাওয়ারের চেহারা আর গন্ধে ভরা থাকেন সারা দিনব্যাপী তা তৈরি করার পর।

মিউজিং ডিফিউজড ব্লগের সারা আলাউই তার নিজের তৈরি হারিরার ছবি দেখিয়েছেন। এটি ঐতিহ্যবাহী ডালের সুপ যা মরোক্কোতে রোজা ভাঙ্গার জন্য ব্যবহার করা হয়:

বাড়িতে তৈরি হারিরা, সৌজন্য সারা আলাউই

বাড়িতে তৈরি হারিরা, সৌজন্য সারা আলাউই

রমজান মাস সম্পর্কে আলাউই লিখেছেন:

এটা বছরের সেই সময়- যখন সব কিছু একেবারে শান্তিপূর্ন মনে হয় আর শান্তির আবহাওয়া সব কিছু ঘিরে থাকে…রমজান মাস এসেছে।

গত রাত্রে প্রথমবারের মতো আমি মরোক্কোর ডালের সুপ বানিয়েছিলাম- খুব মজার হয়েছে আর আমি এটাকে সফল চেষ্টা বলব বাদামের ক্যান খুলতে গিয়ে আমার আঙ্গুলে গভীর কাটার ঘটনা সত্ত্বেও। আরো মরোক্কোর ‘হারশা’ বানিয়েছি যা সুজি থেকে তৈরি অল্প নোনতা ঝুরি রুটি। এটি ব্রাই আর রাস্পব্যেরি জ্যাম দিয়ে খেতে খুব মজা লাগে।

যারা রোজা উদযাপন করেন, তাদেরকে আমি আনন্দের রমজানের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অ-মুসলিমদের জন্য, আমি আপনাদের আহ্বান জানাবো কোন মুসলিমের বাড়িতে ইফতার খাওয়ার জন্য- ইফতার হচ্ছে সূর্যাস্তের সময়ে রোজা ভাঙ্গা। এটা খুব ভালো একটা অনুভূতি। আমি আমার বন্ধুদের জন্য এই মাসে রান্না করা খুব পছন্দ করি।

যাদের সুযোগ নেই ইফতারে যাওয়ার, ইসলামিক ইফতার ব্লগ একটি মরোক্কোন রেসিপি তুলে দিয়েছে:

আজকে মরোক্কো থেকে আমরা একটা রেসিপি দিচ্ছি। সেমোলিনা গমের গুঁড়ো বা জোয়ার দিয়ে বানানো খুসখুস রমজানের সময়ে মরোক্কোতে করা একটি জনপ্রিয় আর সহজ খাবার।

মরোক্কো তার মুখে পানি আসা খুসখুস রান্নার জন্য বিখ্যাত আর এই রেসিপি মরোক্কোবাসীর খুব প্রিয়। খুবই মজাদার আর দ্রুত তৈরি করা যায় এই খাবার।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .