ইরান: রাজনৈতিক বন্দীরা অনশন শুরু করেছেন

তেহরানের এভিন কারাগারের সামনে অনশন প্রতিবাদরত পরিবারের সদস্যরা

তেহরানের এভিন কারাগারের সামনে অনশন প্রতিবাদরত পরিবারের সদস্যরা

গত জুলাই মাসের শেষের দিকে ১৭জন ইরানী রাজনৈতিক বন্দী তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারের খারাপ পরিবেশের প্রতিবাদে অনশন শুরু করে। এখানে অনশনকারীদের পুরো তালিকা রয়েছে। ২০০৯ সালের ১২ই জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হবার পর শত শত সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং রাজনীতিবিদদের গ্রেফতার করেছে ইরান সরকার।

মীর হুসেন মুসাভী আর মেহদী কারুবী এই দুই বিরোধী দলীয় নেতা বন্দীদের অনুরোধ করেছেন তাদের অনশন থামাতে। ইরানী ব্লগাররা রিপোর্ট করেছেন যে অনশনরত বাবাক বর্দবার নামে একজন কারাবরণকারী চিত্রশিল্পীকে আজকে ছেঁড়ে দেয়া হয়েছে

অনেক মানবাধিকার সংগঠন অনশনরত বন্দীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে আটকে থাকা সাংবাদিক বাহমান আহমাদী-আমুই এবং কেইভন সামিমি এবং ছাত্রনেতা মাজিদ টাভাকলি। এই তিনজন ‘শুকনো’ অনশন শুরু করেন গত ৪ঠা আগস্ট।

সাইট ব্লগ ইরানে রাজনৈতিক বন্দীদের অনশন ধর্মঘট নিয়ে বিশ্বের অবজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। তিনি লিখেছেন:

কি হয়েছে? রাজনৈতিক বন্দীদের কণ্ঠ কি মিইয়ে গেছে না বিশ্ব ঘুমিয়ে আছে? ..সাংবাদিক বাহমান আহমাদী-আমুই এবং কেইভন সামিমি আমার দেশী ভাই এবং ভেলিয়াতেহ ফাগিহ'র (ইরানী স্বৈরাচারী) গুহায় তাদের হাড্ডি ভাঙ্গা হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরে ২৩ খোর্দাদ নামে একটি দলের উদ্ভব হয় সবুজ আন্দোলনকে সাহায্য করার জন্যে। এই দল বলছে:

আমরা অনশনরত রাজনৈতিক বন্দীদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত এবং শ্রদ্ধা করি তাদের এই অনশন চালিয়ে যাওয়া বা থামানোর সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা জেভেই মোসরেকাত নামে একটি সংস্কারপন্থী দলের আহ্বানের বিপক্ষে যারা বলেছে যে এইসব অনশনরত বন্দীদের সমর্থনে সাধারণ নাগরিকদেরও অনশন শুরু করা উচিৎ। আনশন প্রতিবাদকে সমর্থন করুণ, রাজনৈতিক অনশনকে না বলুন। কেন এই সংস্কারবাদী দল বন্দীদের অনশনকে রাজনৈতিক রং দিতে চাচ্ছে?

ইরানের এক অগ্রগণ্য ফটোব্লগার আরাশ আশুরি তার কুসুফ ব্লগে লিখেছেন একজন অনশনকারীর ব্যাপারে:

বাহমান আহমাদী-আমুই হচ্ছে একজন জনপ্রিয় সাংবাদিক যিনি বিভিন্ন সংস্কারবাদী পত্রিকাতে অর্থনীতি নিয়ে লিখে থাকেন। তিনি তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে অনশন প্রতিবাদ করছেন এখন। বাহমানের সাথে তার স্ত্রী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জিলা বানিয়াঘুবও গ্রেফতার হয়েছেন ২০০৯ সালের বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর। তাকে এভিন কারাগারের ২০৯ নম্বর সেকশনে তাকে কোন অভিযোগ ছাড়াই একটি নির্জন রুমে বন্দী করে রাখা হয়। পরবর্তীতে বিপ্লবী কোর্টে তাকে ৭ বছর ৪ মাসের কারাদন্ড এবং ৩৪ দোররা শাস্তি দেয়া হয়।

বাহমান আহমাদী-আমুই ১৬জন অন্য রাজনৈতিক বন্দীদের সাথে অনশন করছেন এভিন কারাগারের ৩৫০ শাখার খারাপ অবস্থা এবং কারাগার রক্ষীদের খারাপ ব্যবহারের প্রতিবাদ করছেন। কারাগারের ভিতরকার উৎস জানাচ্ছে যে কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে তার সাথে দেখা করতে দিচ্ছে না এবং তার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .