ব্রাজিল: নারীর বিরুদ্ধে প্রতিদিনকার অত্যাচার

সম্প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল একজন ব্রাজিলের গোলরক্ষক আর সন্তানের কথিত বাবা কর্তৃক একজন মাকে হত্যার খবর প্রচার মাধ্যমের দৃষ্টির কেড়ে নিয়েছে। এই অপরাধকালে সংঘটিত ভয়ংকর নৃশংসতার কারনে এই ঘটনা দেশকে নাড়া দিয়ে গেছে। একই সময়ে সাও পাওলোতে বৈজ্ঞানিক সংস্কৃতি বিষয়ক সামাজিক সচেতনতা সংক্রান্ত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউটো সাংগারি, সম্প্রতি তাদের ‘ব্রাজিলে অত্যাচারের মানচিত্র‘ প্রকাশ করেছে যা দেখাচ্ছে যে প্রতিদিন ১০ জন নারীকে হত্যা করা হয় এই দেশে। অবশ্যম্ভাবীভাবেই ব্লগ জগৎ এই দুই বিষয়কে একত্র করেছে আর এর প্রতিবাদ জানানো এখন জ্বলন্ত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রধান ধারার মিডিয়া ওদিকে তাদের রগরগে উপস্থাপনা অব্যাহত রেখেছে যেগুলো এখনও সেই ফুটবল খেলোয়াড়ের অপরাধ নিয়ে রিপোর্ট পর্যন্ত সীমিত।

নারী নীতি সম্পর্কিত মন্ত্রী নিলসিয়া ফ্রেইরে অনুসারে মিডিয়া আসলেই নারীর প্রতি অত্যাচারকে অনেকাংশে অবজ্ঞা করে [পর্তুগীজ ভাষায়]:

“Quando surgem casos, principalmente com pessoas famosas, que chegam aos jornais, é que a sociedade efetivamente se dá conta de que aquilo acontece cotidianamente e não sai nos jornais. As mulheres são violentadas, são subjugadas cotidianamente pela desigualdade”, afirmou ao ministra.

যখন কোন ঘটনা বিশেষ করে বিখ্যাত লোকদের সম্পৃক্ততার কারণে সংবাদে আসে এই সমাজ বুঝতে পারে দৈনিক যা ঘটছে তার অনেক কিছুই সংবাদপত্রে আসে না। নারীদের ধর্ষণ করা হয়, প্রতিদিন বিভিন্ন নিপীড়নের ভিতর দিয়ে যেতে হয়।

এটার ব্যাপারে সচেতন নারীবাদী দলরা, যেমন পাও এ রোসাস [রুটি আর গোলাপ], জিজ্ঞাসা করেছে আর এমন কটি ঘটনা ঘটলে সকল অত্যাচারিত নারীকে একত্র হতে বলা যাবে স্কুলে, কার্যক্ষেত্রে আর অন্যত্র।

Devemos exigir abrigos para as mulheres vítimas de violência e para seus filhos e filhas subsidiados pelo Estado, mas sob controle das próprias vítimas de violência, das organizações e comissões de mulheres independentes do Estado, da patronal, da polícia e da Igreja.

যেসব নারী অত্যাচারের শিকার তাদের আর তাদের ছেলে মেয়েদের জন্য আমাদের রাষ্ট্র কর্তৃক ভর্তুকি দেওয়া আশ্রয়ের দাবী করা দরকার। কিন্তু এ গুলো নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে অত্যাচারের শিকারদের আর নারীবাদীদের সংস্থা আর কমিশনের হাতে যা স্বাধীন থাকবে রাষ্ট্র, বিভিন্ন ইউনিয়ন, স্বাধীন পুলিশ আর চার্চ থেকে।
নারীর বিরুদ্ধে অত্যাচার প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক দিবস, ফ্লিকার ব্যবহারকারী ড্যানিয়েলা গামার সৌজন্যে

নারীর বিরুদ্ধে অত্যাচার প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক দিবস, ফ্লিকার ব্যবহারকারী ড্যানিয়েলা গামার সৌজন্যে, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর আওতায় ব্যবহৃত

ব্রাজিলে নারীর প্রতি অত্যাচারের ঘটনা একেবারেই এক প্রকৃতির নয়। যদিও পরিসংখ্যান অনুযায়ী একদিকে ৫০টি জেলায় প্রতি ১ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১০ জনের হত্যার অংক ছাড়িয়ে যায়, অর্ধেকের বেশী ব্রাজিলের শহর হত্যার কোন খবর জানায়নি। ব্রাজিলের পরিস্থিতি তুলনা করলে, এই অসামঞ্জস্য আসলেই বিস্ময়কর:

Espírito Santo, o primeiro lugar no ranking, tem índices de 10,3 assassinatos de mulheres por 100 mil habitantes. No Maranhão é de 1,9 por 100 mil. “Os resultados mostram que a concentração de homicídios no Brasil é heterogênea. Fica difícil encontrar um padrão que permita explicar as causas”, afirma o pesquisador Julio Jacobo Wiaselfisz, autor do estudo.

এস্পিরিতো সান্তো শহর, এই র‍্যাঙ্কিং এ প্রথম স্থানধারী, প্রতি ১ লাখ জন বাসিন্দার ক্ষেত্রে ১০.৩ নারীকে হত্যার স্তর বজায় রেখেছে। মারানহাও এটা প্রতি ১ লাখ জনে ১.৯ জন। “এই ফল দেখায় যে ব্রাজিলে হত্যার হার বিভিন্ন। কোন ধারা খুঁজে পাওয়া মুশকিল যার ফলে মানুষ এটা ঘটার কারন বলতে পারেন” বলেছেন গবেষক জুলিও জাকাবো ওয়াইসেলফেজ, এই গবেষণার লেখক।

গত ১০ বছরে, সকল সামাজিক শ্রেনীর ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৪০,০০০ এর বেশী নারী হত্যার শিকার হয়েছেন, এটা চোখের সামনে দেখেছে তাদের অনেক সন্তানেরা যারা নিজেরাও অত্যাচারের শিকার। বিপদজনক পরিস্থিতিতে নারীদের জন্য সহায়তা ব্যবস্থার অভাব আক্রমণকারীদের বেঁচে যাওয়ার একটা কারন হিসাবে দেখা হয় ২০০৬ সালে মারিয়া দা পেনহা আইন পাশের পরেও, যেখানে নারীকে নিরাপত্তা দেবার কথা অভিযোগ জানোনোর পরে আর তাদেরকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে আক্রমণকারীদের শাস্তি হবে। তবে,

a nova lei não impediu o assassinato da cabeleireira Maria Islaine de Morais, morta em janeiro diante das câmeras pelo ex-marido, alvo de oito denúncias. Nem uma série de outros casos que todos os dias ganham as manchetes dos jornais.

এই নতুন আইন নাপিতানী মারিয়া ইজলাইনে দে মোরাইসের হত্যাকে থামাতে পারেনি, যাকে ক্যামেরার সামনে হত্যা করেন তার আগের স্বামী, যার বিরুদ্ধে তিনি ৮টা অভিযোগ করেছিলেন।

নারীর প্রতি অত্যাচার, আমরা থামাতে পারি! সিসি লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশিত।

আসলে, বেশীরভাগ নির্যাতিত নারীরা তাদের আত্মীয়, স্বামী, ছেলে বন্ধু বা প্রত্যাখ্যান করা পুরুষ দ্বারা হত্যার শিকার হন

São casos como negativas de fazer sexo ou de manter a relação. Em 50% das ocorrências, o motivo foi qualificado como fútil, como casos de discussões domésticas. Houve 10% de mortes por motivos passionais, ligados a ciúmes, por exemplo, e 10% relacionado ao uso ou à venda de drogas.

যৌন কার্যে না বলা বা সম্পর্ক ভাংতে চাওয়া এইসব ঘটনা সৃষ্টি করে। তাদের মধ্যে ৫০% এর ক্ষেত্রেই হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য অযাচিত প্রমাণিত হয়েছে, যেমন গৃহ বিবাদ থেকে উদ্বুদ্ধ ঘটনা। ১০% ক্ষেত্রে আবেগ জনিত অপরাধ উদাহরণস্বরূপ হিংসার সাথে যুক্ত অপরাধ, আর ১০% মাদক ব্যবহার বা বিক্রির সাথে যুক্ত।

অত্যাচারের মূল কারণকে তিরস্কার করা হয়েছে ব্রাজিলের সংস্কৃতিগত ভাবে নারীদের প্রতি বিদ্বেষ হিসেবে:

Essas novelas de violência contra a mulher estão tirando do baú toda a brutalidade contra a mulher brasileira. Expôs as vísceras dessa cultura brasileira tão machista; colocou do avesso o iceberg de uma realidade que costumamos empurrar para debaixo do tapete. Os números dessa violência são tão grande que nos assustam e nos levam a pergunta, se essas ações são de seres humanos!

নারীদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের এই নাটক ব্রাজিলের নারীদের প্রতি সকল অত্যাচারকে তুলে ধরছে। ব্রাজিলের এই ধরনের সংস্কৃতির ভিতরের চেহারা উন্মুক্ত হয়েছে; কার্পেটের তলায় যে বাস্তবতার বরফ আমরা লুকিয়ে রাখি তা উন্মুক্ত হয়ে গেছে। অত্যাচারের সংখ্যা এতো বেশী যে আমরা ভীত আর জিজ্ঞাসা করি যে মানুষ কিভাবে এমন করতে পারে!

ব্লগার ফ্লাভিয়া ডি এর মতে নারীরা নিজেরাও এই সমস্যার একটা অংশ। তারা প্রায় মেনে নেন যে সমাজে নারীর ভূমিকা পুরুষের অধীনে, আর প্রায় দেখা যায় তারা নারীদের দিকে প্রথমে আঙ্গুল তোলেন যখন তাদের মনে হয় একজন নারী ঠিকভাবে আচরন করছেন না, আর এর ফলে অত্যাচারীর ভূমিকাকে কমিয়ে ফেলেন যদিও না জেনে। বারবারেলাস, একটা ব্লগ যেটা নারীর প্রতি সকল ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিবেদিত, বলছে যে সমাজকে একত্র করা দরকার নারীদের উপরে সকল ধরনের অত্যাচারকে থামানোর জন্য।

A violência contra mulheres e meninas é algo intolerável, inaceitável, fere a consciência da humanidade, é uma violação aos direitos humanos. Afeta a saúde, reduz anos e qualidade de vida das mulheres. O Brasil, como signatário dos documentos internacionais de direitos humanos das mulheres, e tendo uma legislação nacional a ser cumprida, não pode calar-se e omitir-se. Espera-se de cada autoridade que faça sua parte. E da sociedade, do movimento de mulheres e de homens pela equidade de gênero, que protestem contra estas manifestações do atraso cultural, do machismo e da omissão.

নারী আর মেয়েদের প্রতি অত্যাচার অসহ্য, অগ্রহণযোগ্য, এটি মানবিকতার আত্মাকে আঘাত করে, আর এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটার প্রভাব স্বাস্থ্যের উপরে পড়ে, আয়ু কমিয়ে দেয় আর নারীদের জীবনের মান কমে যায়। ব্রাজিল যেহেতু আন্তর্জাতিক নারী অধিকারের নথির সই করেছে একজন অংশীদার হিসাবে আর তাদের জাতীয় একটা আইন আছে এটা মেনে চলার, তাই এসব বিষয়ে চুপ থেকে বাতিল করে দিতে পারে না। আমরা আশা করি যে প্রত্যেকটি কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে কাজ করতে হবে। আর সমাজে পুরুষ আর নারীর যৌন সমতার জন্য প্রচারণা এবং এই ধরনের সাংস্কৃতিক পিছিয়ে পড়া ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিৎ।

ব্রাজিলে যেসব নারীর সাহায্য প্রয়োজন তারা বিনামূল্যে ১৮০ নম্বরে ফোন করতে পারেন তাদের বিরুদ্ধে কোন অত্যাচার জানাতে বা তাদের করা কোন অভিযোগের আমলে নিতে কর্তৃপক্ষ অবহেলা করলে। এই তথ্য পাওয়া গেছে কোনত্রা মাচিস্মো ব্লগের কাছ থেকে যেটি পাঠকদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে ব্রাজিলে নারীদের প্রতি অত্যাচার এখনও প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদন পড়তে পারেন ব্রাজিল: নারীর প্রতি অত্যাচার নিয়ে বিতর্ক শিরোনামে যা মানুষকে সজাগ করতে আর প্রতিবাদ মুখী করতে দিয়েগো কাসিয়াস লিখেছেন আন্তর্জাতিক নারীর প্রতি অত্যাচার রোধ দিবস উপলক্ষ্যে (নভেম্বর ২০০৯) গ্লোবাল ভয়েসেস এর সিরিজ পোস্টের অংশ হিসেবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .