এই বছরে দ্বিতীয়বারের মতো বারাক ওবামা অস্ট্রেলিয়াতে তার সফর বাতিল করেছেন, সাম্প্রতিক তেল দুর্ঘটনার কারনে। আগের বার কারণ ছিল স্বাস্থ্য আইন সংক্রান্ত জটিলতা। তার অনুপস্থিতিতেও ব্লগাররা তার ভূমিকা আর প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার কাজের মূল্যায়ন করেছেন। এগুলো দলগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নয় বরং চিন্তাশীল লেখা।
ওয়াশিংটনে বাস করা অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের সাংবাদিক ক্রেগ ম্যাকমার্ট্রি ওবামার নেতৃত্বের মূল্যায়ন থেকে তার কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন:
প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল যে বিপি নাকি হোয়াইট হাউজ তেল দূর্ঘটনার ব্যাপারে আমেরিকানদের হয়ে আবেগ প্রকাশ করবে, কারন তেল কোম্পানি আইনগতভাবে দায়ী পক্ষ।
কিন্তু এই দায়িত্ব রাষ্ট্রপতিকেই নিতে হবে, কারন বিপির প্রধান টনি হেওয়ার্ড নিজেকে অনুপযুক্ত প্রমান করেছেন যখন তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন যে তিনি তার জীবন ফিরে চান।
তাই ব্যারাক ওবামা আবেগ- প্রধান। কেবল এটা পরিষ্কার না যে তিনি এই কাজ সত্যিই চান কিনা। গালফ বাসিন্দারা আবেগ -প্রধানের দিকে তাকিয়ে আছেন।
আন্তর্জাতিক বিষয়ে নিয়মিত মন্তব্যকারী ডাকপন্ড ব্লগ আফসোস করেছে যে পরিবর্তন হয়ত যথেষ্ট না:
… আমার কাছে কিছুটা হতাশা দেখা দিচ্ছে যে ফেডারেল সরকার ব্যাপারটার দায়িত্ব নেয়নি সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিয়ে যারা প্রকল্প সম্পর্কে এমন হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এই ব্লগার তেল দূর্ঘটনায় ওবামার ভূমিকা দেখছেন আর চিন্তিত হচ্ছেন যে ওয়াশিংটন যেভাবে কাজ করছে সেটাকে ওবামা চ্যালেঞ্জ করছেন না যেমন তিনি নির্বাচনের আগে কথা দিয়েছিলেন:
ওবামা এই সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন অফশোর ড্রিলিং এ তার আগের দেওয়া কথার কারনে- তার নির্বাচনে সমর্থকদের মুখে আর একটা চড় এটা। আমি যা দেখছি, সমস্যা হল, সিস্টেমের সাথে খেলা করা না, বরং এটা মানতে অক্ষম হওয়া যে সিস্টেম বাইরে থেকে পাল্টাতে হয়, আর ভিতরের সমঝোতা দিয়ে পাল্টানো যায়না।
বর্তমানে আমেরিকায় ভ্রমণরত মেলবোর্নের লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির প্রফেসর ডেনিস আল্টম্যান ইন্সাইড স্টোরিতে রাষ্ট্রপতির উপরে অভ্যন্তরীণ চাপের কথা বলেছেন:
প্রেসিডেন্ট ওবামা যে দুইবার ইন্দোনেশিয়া আর অস্ট্রেলিয়াতে সফর বাতিল করেছেন এটাই তুলে ধরে যে যেকোন রাজনীতিবিদের কাছে ঘর অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ, আর বিশেষ করে মধ্য-মেয়াদি নির্বাচনের বছরে।
আল্টম্যান আশাবাদী নন বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারে। তিনি সন্দিহান যে মধ্যপ্রাচ্যে মানবাধিকার ব্যাপারে ওবামা কোন অগ্রগতি অর্জন করতে পারবেন কিনা:
ওবামা চিরন্তন বাস্তববাদী, যিনি নীতির ব্যাপারে সমঝোতা করতে পারেন সীমাবদ্ধ লক্ষ্য অর্জনের জন্য।
… ভালো একটা পররাষ্ট্র নীতি তৈরি করার ব্যাপারে তার দেশে বাকি বিশ্ব সম্পর্কে যে অজ্ঞতা আছে তা বড় মাপের বাধা হিসাবে কাজ করে। এই সমস্যাগুলো জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট থেকে বিশ্বের নিরাপত্তার বিষয়ে চেনা যায়।
তিনি আশার কিছু আলো দেখতে পান:
ওবামা বড় একটা ধাপ নিয়েছেন বিশ্বে অনিয়ন্ত্রিত পারমানবিক ছড়িয়ে পড়া রোধে বিশ্ব পর্যায়ে সাড়া তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়ে।
অনলাইন ওপিনিয়ন ব্লগে ব্রেন্ডান ও কনর যুক্তরাষ্ট্রে বাইরে বারাক ওবামার প্রভাব দেখেছেন। বিশেষ করে পশ্চিম ইউরোপে তিনি তার প্রতি ভালো সাড়া দেখেছেন:
… সন্দেহাতীতভাবে ওবামা বেশ কিছু মানুষকে আমেরিকা আর তার বিশ্ব নীতি সম্পর্কে ভালো ভাবতে শিখিয়েছেন।
তিনি রাশিয়া, পাকিস্তান আর মধ্য প্রাচ্যে অন্য গল্প পেয়েছেন: যেসব স্থানে আমেরিকার শক্তি আর সামরিক উপস্থিতি বোঝা যায়, বা নির্ভর করা হয়, আরো কাছ থেকে সেখানে একজন নতুন আমেরিকান রাষ্ট্রপতির ব্যাপারটা খুব বেশী কিছু ছিলনা।
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে অষ্ট্রেলিয়ার কিছু ব্লগের লেখা পড়তে ভালো লাগলো যেগুলো কোন ধরনের নিন্দা, গালি বা পাশ থেকে বাহবা দেয়া বাদ দিয়ে লেখা। তোপের মুখে পরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রূড হয়তো একই ধরনের কিছু পছন্দ করবেন। বা অন্তত তার ‘বন্ধু’ বারাকের কাছ থেকে একটা ভ্রমণ যা ব্লগ জগৎের দৃষ্টি অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে সরিয়ে নেবে।