আর্জেন্টিনা: যে কাগজ তৈরির কারখানা নিয়ে উরুগুয়ের সাথে দ্বন্দ্ব, আন্তর্জাতিক আদালত তার উপর রায় প্রদান করেছে

নেদারল্যান্ডের রাজধানী হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস) আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে চলা বিবাদের উপর এক নির্দেশ জারি করেছে। এই বিবাদ উরুগুয়ে নদীকে ঘিরে, যে নদীর তীরে উরুগুয়ে নিজেদের তৈরি বিশাল স্বয়ংসম্পূর্ণ কাগজের কল বানিয়েছে। উরুগুয়ে এবং আর্জেন্টিনা উভয়ে উরুগুয়ে নদী ব্যবহার করে। আর্জেন্টিনা বিবৃতি দিয়েছে, এই বিষয়ে উরুগুয়ের একক কর্তৃত্ব, উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বরখেলাপ করার সামিল এবং এ ধরনের কারখানা নদীটিকে দুষিত করছে। আদালত বলছে, আর্জেন্টিনা প্রমাণ করতে পারেনি যে উরুগুয়ে নদীটিকে দুষিত করছে। ফলে কারখানাটির আর উৎপাদন কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে বাঁধা নেই। তবে আদালত রায়ে আরো বলছে, উরুগুয়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি ভঙ্গ করেছে এবং এই চুক্তি কারখানার নির্মাণকে সমর্থন করে। যদিও তখন উভয় দেশের মধ্য এ নিয়ে আলোচনা চলছিল।

Photo of Paper Mill by Gonzak and used under a Creative Commons license.

কাগজ কলের ছবি, ছবির স্বত্ত্বাধিকারী গোনজাক এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স-এর অধীনে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

ব্লগ এসপাসিওস প্রোটেজিডস [স্প্যানিশ ভাষায়] (স্থান সংরক্ষণ)-এ ব্লগার ওয়াল্টার রেমন্ড এই রায়কে উভয় দেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। ঐক্যমতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হবার কারণে উভয় দেশকে এই রায়ের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হল। রেমন্ড এখানে স্বয়ংসম্পূর্ণ কাগজ তৈরির কারখানাটির নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে উভয় দেশের ঐক্যমতে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি একই সাথে উরুগুয়ে নদীর ভবিষ্যৎ-এর ব্যাপারে একটি চুক্তির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উল্লেখ করেন। ব্লগ ডে আবেল [স্প্যানিশ ভাষায়] একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছেন। এই ব্লগে এই রায়ের একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেছে।

টুইটারে, সাধারণভাবে আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে অনেক অসন্তোষ দেখতে পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক আদালত মনে করছে উরুগুয়ে চুক্তিটি যথাযথভাবে পালন করেনি। এছাড়াও আদালত বিবৃতি দিয়েছে যে, এই আদেশ দেশটির কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না।

টুইটার ব্যবহারকারী (@ওজজোনো) বিস্মিত:

Y para que existen estos tratados, si pueden ser incumplidos sin mayores consecuencias ?

“কিসের জন্য এইসব চুক্তি, যদি চুক্তিটিকে গুরুত্বের সাথে না দেখে, তাদের উপেক্ষা করা হয়?”

রাজটেজ মেটায়েমাইগ্রান্টে (@মেটায়েমাইগ্রেন্ট) লিখেছে:

no sabia que los tratados internacionales eran solo una sugerencia

আমি জানি না আন্তর্জাতিক চুক্তি নিছক কোন বিশেষ পরামর্শ হতে পারে কি না।

(@লাবাটেক) এই রায়ের উপর মন্তব্য করেছে:

সংবিধানের এই চুক্তি ভঙ্গের উপর আদালতের নির্দেশ, যথাযথ সন্তোষ তৈরি করেছে-অনুবাদ: নৈতিক বিজয়।

অন্যদিকে, সেবাস্তিয়ান গনাজালেজ (@সেবাগন) লিখেছে:

Ahora seguro que tanto Argentinos como Uruguayos creen que #LaHaya les dio la razón 😀

বেশির ভাগের মতে, এখন আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে উভয়ে বিশ্বাস করবে যে লা হায়া (আন্তর্জাতিক আদালত) তাদের পক্ষে রায় দিয়েছে।

উভয় রাষ্ট্রকে অবশ্যই এই আদেশ মেনে চলতে হবে। আশা করা হচ্ছে যে, এই রায় এবং বাধ্যবাধকতার কারণে একটি একক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে উরুগুয়ে নদীর ব্যবহার করা হবে, যা আর এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাবে না। এছাড়াও, গুয়ালেগুয়াইচু শহরে অবস্থিত সেতু সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি, যা আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ের মধ্যে বিরাজমান আরেকটি সমস্যা। বিগত তিন বছর ধরে আর্জেন্টিনার পরিবেশবাদীরা এটির নির্মাণ বন্ধ করে রেখেছে। তারা বলছে সেতু নির্মাণের উপর যে নিষেধাজ্ঞা তৈরি করা হয়েছে, তা তারা প্রত্যাহার করে নেবে না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .