পরিসংখ্যানে গেরিসা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৪৭ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশী

Photos of Garissa shooting victims being shared under the 147notjustanumber hashtag on Twitter.

স্বাধীন সংবাদপত্র ডেইলি নেশন (@ডেইলিনেশন) থেকে নেয়া একটি স্ক্রিনশট। টুইটারে শেয়ারকৃত স্ক্রিনশটটিতে গেরিসা গুলিবর্ষণের শিকারদের ছবিগুলো বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

গেরিসা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় প্রচার মাধ্যমগুলোতে প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদে বলা হয়েছে, আল-শাবাব সামরিক বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। প্রচার মাধ্যমগুলোতে এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। আক্রমণকারীদের নাম যখন ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে, তখন নিহতের সংখ্যা কমিয়ে ১৪৭ জন বলা হচ্ছে।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কেনিয়ান অনলাইনগুলো বর্বরোচিত সহিংসতার শিকার এসব লোকের নাম এবং চেহারা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ব্লগিং এ্যাট দ্যা আফ্রিকা কেনিয়ার স্থানীয় একটি ব্লগ। কেনিয়ান লেখক বিনয়াভাঙ্গা ওয়াইনাইনা সেখানে বলেছেন, “যে নাগরিকদের আমরা হারিয়েছি তাদের প্রত্যেককে স্মরণীয় করে রাখতে না পারি, তবে কেনিয়া কোন জাতির পর্যায়ে পরে নাঃ”

যারা এমপিকেতনিতে মারা গেছেন, আমি তাদের নাম, বয়স এবং ছবি দেখতে চাই। পিইভির সময় যারা নিহত হয়েছেন তাদের গল্পগুলো ভুলে যাওয়া কোন কাজের কথা নয়। এই হামলার ঘটনায় আমাদের জনসচেতনতা হয়তো আবার জেগে উঠবে। একজন কেনিয়ানকে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে দেয়া হলে যখন সে সেটিকে নগ্ন করে ফেলে, বিবস্ত্র করে শুকিয়ে ফেলে, শুকাতে শুকাতে অবশেষে প্রতিষ্ঠানটিকে জম্বিতে পরিণত করে, যেন একটি প্লাস্টিকের রাবার ব্যান্ড জম্বিকে আরেকটি নতুন রূপ দেয়া হয়, যেন অন্য কোথাও আবার শাসন করতে পারে, তখন সেটিকে দেখেও না দেখার যে রাজনীতি, আমরা নিজেদের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত নই, আমাদের বেদনাগুলোর পরিপূর্ণতার মুখোমুখি হতে প্রস্তুত নই, বলার রাজনীতিও একই রাজনীতি।

তিনি আরও বলেছেনঃ

আমি দেখতে চাই, ত্রিশ লাখ নাইরোবিয়ান যেন কেঁদে, গান গেয়ে এবং একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রাজপথ ভাসিয়ে দেন। কেননা আমাদের শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা একেবারে নিজের ভিতরে নিভৃতে বসবাস করি, এমন অনুভূতি থেকে আমি বেড়িয়ে আসতে চাই। আমি কখনও আত্ম-ক্ষমতায়ন শব্দটি পুনরায় শুনতে চাই না।

অরি অকোল্লহ এমওয়াঙ্গি টুইটারে ব্যাখ্যা করেছেন, আফ্রিকার সংস্কৃতিতে নিহতদের নাম প্রকাশ করা কেন গুরুত্বপূর্ণঃ

নামকরণ করা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির নামকরণ করা আফ্রিকান সংস্কৃতিতে বেশ বড় বিষয়। এটি আমাদের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ জীবনের অর্থ বোঝায়। আর তাই একজন একজন করে আমরা তাদের সবার নামকরণ করব।

নিহতদের প্রতি আরও হৃদয়বান হতে কয়েকজন টুইটার ব্যবহারকারী তাদের নাম এবং ছবিগুলো শেয়ার করতে #১৪৭শুধুএকটিনম্বরনয় হ্যাশট্যাগটি টুইট করেছেনঃ

শান্তিতে ঘুমাও এলিজাবেথ নিয়ানগারোরা। সেন্ট অ্যাণ্ড্রুজ কাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে পাশ কৃত।

ইনি হচ্ছেন টোবিয়াস। #গেরিসাআক্রমণ এ মারা যান। আমাদের কাছে তার নম্বর নাই। তিনি পুত্র, ভাই ও বন্ধুবান্ধব রেখে গেছেন।

শান্তিতে ঘুমাও বিটি অয়াঞ্জিকু (শিকো)। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

এঞ্জেলো ‘কা/জোজো’ কামিতা গিথাকাওয়া। কারিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১১ সালের একজন প্রাক্তন ছাত্রী।

আমরা আমাদের অন্তরে তাদের স্মৃতি চিরকাল ধারণ করব। দয়া করে, তাদের জীবনবৃত্তান্ত এবং ছবি পাঠান।

আক্রমণকারীরা যেহেতু সংবাদের শিরোনামে পরিণত হয়েছেন এবং তাদের নামগুলো অমর হয়ে আছে, তাই তাদের হাতে নিহতরা পরিসংখ্যানের মতোই হারিয়ে যাচ্ছেন।

@রেকলভিসে লিখেছেন, এটি জীবনের ব্যাপার কোন পরিসংখ্যানের বিষয় নয়ঃ

#১৪৭শুধুএকটিনম্বরনয় নিশ্চিত করতে গেরিসা আক্রমণে নিহতদের নামগুলো এবং গল্পগুলো কেনিয়ানরা যেভাবে উল্লেখ করছেন তা আমার ভালো লেগেছে। এগুলো জীবন, কোন পরিসংখ্যান নয়।

@লুনারনোমাদ হ্যাশট্যাগটি তৈরির পিছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কথা বলেছেনঃ

#গেরিসা আক্রমণ সম্পর্কে প্রচার মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন রক্তাক্ত ছবি দেখতে দেখতে আমি খুব ক্লান্ত। বিলেটের পিছনে থাকা মানুষদের দেখতে #১৪৭শুধুএকটিনম্বরনয় হ্যাশট্যাগটি দেখুন।

মেরি এনজেরি এমবুরু টুইট করেছেনঃ

আমি আশা করি, ওয়েস্টগেটের পর মুদ্রণ প্রচার মাধ্যমগুলো যেমন মুক্তভাবে শোকসংবাদ ছাপিয়েছে, গেরিসা হামলায় নিহতদের জন্যও তারা তেমন কিছুই করবে।

#কেনিয়ান জীবনগুলো অর্থবহ শিরোনামে ভিন্ন আরেকটি হ্যাশট্যাগের অধীনে ইউনিস একটি কেনিয়ান প্রবাদ শেয়ার করেছেন। হ্যাশট্যাগটি তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের #কালোদের জীবনগুলো অর্থবহ আন্দোলনের আদলে তৈরি করেছেনঃ

একটি কেনিয়ান প্রবাদ ~ যে বল প্রয়োগ করে সে কৈফিয়ত দিতে ভয় পায়। আমার ভাবনাগুলো তোমাদের সাথে আছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .