বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থী এবং সক্রিয় কর্মীরা মিয়ানমারের প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। কেননা গত সপ্তাহে এই শিক্ষার্থীরা সরকারের পুলিশ বাহিনীর নৃশংস আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
“আমরা মিয়ানমার শিক্ষার্থীদের সমর্থন করি” শিরোনামের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মিয়ানমার শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রত্যেককে সমর্থন জানাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। পেজটিতে ছবি জমা দিয়ে অথবা বিভিন্ন সমর্থন কার্যক্রমের আয়োজন করে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি সংখ্যক একাউন্ট থেকে পেজটিতে লাইক দেয়া হয়েছে।
সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে গত ৫ মার্চ তারিখে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশের হাতে নানা ভাবে নাজেহাল এবং আক্রমণের শিকার হন। লেতপাদান শহরে পাঁচ দিন পর অনুষ্ঠিত একটি র্যালিতেও পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। র্যালিতে অংশ নেয়া ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে। এতে কয়েকজন ভিক্ষু এবং সাংবাদিকও ছিলেন। যদিও ইতোমধ্যে অনেককে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মিয়ানমার শিক্ষার্থীরা সংসদে পাস হওয়া জাতীয় শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। সরকার গত বছর আইনটি পাস করে। তাদের মতে, এই আইনের অধীনে সামরিক বাহিনী সমর্থিত বেসামরিক সরকারের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার কারনে শিক্ষায়তনিক স্বাধীনতা নিগৃহীত হবে।
গত জানুয়ারি মাসে মানদালায় থেকে ইয়াঙ্গুন পর্যন্ত ৪০০ মাইল দীর্ঘ এই পদযাত্রা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। এ মাসের শুরুতেই র্যালিটি তাঁর গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সরকারি বাহিনী তাদের যাত্রাপথ বন্ধ করে দেয়। শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত শান্তিপূর্নভাবে পদযাত্রা কর্মসূচীটি পালন করা সত্ত্বেও পুলিশ র্যালিটি ভেঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। র্যালিটি বন্ধ করতে পুলিশ যে সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে অনেকেই ঘটনা ঘটার পরপরই নিন্দা জানিয়েছেন।
অন্যান্য দেশ থেকেও প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সমর্থন এসেছে। শিক্ষার্থী এবং সক্রিয় কর্মীরা প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সৌহার্দ্য প্রকাশ করতে #আমরাএমএমশিক্ষার্থী শিরোনামের হ্যাশট্যাগটি ফেসবুক এবং টুইটারের মাধ্যমে ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে, যারা এখনও শাস্তি ভোগ করছেন তাদের প্রতি তারা সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। ‘আমরা মিয়ানমার শিক্ষার্থীদের সমর্থন করি’ শিরোনামের ফেসবুক পেজটিতে প্রদান করা ছবিগুলোর কয়েকটি নিচে দেয়া হল।
পানজাগার গ্রুপটি একটি “ফ্লাওয়ার স্পিচ” প্রচারাভিযান শুরু করেছে। অনলাইনে “ঘৃণা বাচন” এর প্রতিবাদে এই প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে। সমাজে নানা প্রকার সহিংসতা নিয়ে নিন্দা জানাতে ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপটি সাদা ফুল প্রতীককে প্রচারও করতে শুরু করেছে।
এরপর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে “অতিরিক্ত এবং অসমঞ্জস” পুলিশ বাহিনী ব্যবহারের প্রতিবেদন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় সরকার ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।